নাশকতার ছক কষে অসমে ঢুকেছে আলফার স্লিপার সেল— এমনই দাবি করেছে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করা ওই জঙ্গি সংগঠনের এক সদস্য। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।
অন্য দিকে মণিপুর পুলিশ সূত্রে খবর, মায়ানমার সীমান্ত বরাবর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্তের কাছাকাছি বিভিন্ন জায়গায় হেলিকপ্টারে নেমেছে সামরিক সরঞ্জাম।
মায়ানমারে সেনা অভিযানের পর উত্তর-পূর্বে খাপলাং জঙ্গিরা পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে সতকর্তা জারি করা হয়েছিল। তার মধ্যেই আলফা স্বাধীনের কয়েক জন জঙ্গি অসমে ঢুকেছে বলে খবর মিলল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গজেন চেতিয়া নামে এক আলফা জঙ্গি আত্মসমর্পণ করার পরই ওই ছকের কথা সামনে এসেছে।
পুলিশ জানায়, আলফা নেতা পরেশ বরুয়ার সঙ্গে টাগা শিবিরে বিহু নেচেছিল গজেনই। ওই ছবি পরে আলফা সংবাদমাধ্যমে পাঠায়। তিনসুকিয়ার বারেকুরি এলাকার বাসিন্দা গজেন পুলিশকে জানিয়েছে, আলফা স্বাধীনের জঙ্গিরা কয়েকটি স্লিপার সেলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন রুটে রাজ্যে ঢুকেছে। গজেন-সহ চার জঙ্গিকে মায়ানমারের কাচিন প্রদেশের শিবির থেকে ১০ দিন আগে অসমে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল খোদ পরেশ। গজেনের সঙ্গে এ দেশে ঢুকেছিল রূপম অসম, উদয় অসম ও জন অসম। গজেনের দাবি, পরেশ তাদের জানায়— আলফা,
এনডিএফবি, এনএসসিএন-এর অনেক জঙ্গি কয়েক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেছে। তাই মায়ানমার থেকে অরুণাচলপ্রদেশ ও অসমে ঢোকার যে সব করিডর জঙ্গিরা সাধারণ ভাবে ব্যবহার করে সেগুলির খবর সেনার কাছে এত দিনে পৌঁছে যেতে পারে। তাই অরুণাচলে ঢোকার বিকল্প রাস্তার খোঁজ করতে গজেনদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাদের আরও বলা হয়েছিল, ভারতে ঢোকার পর প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে গিয়ে জনসমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
পুলিশের আশঙ্কা, স্বাধীনতা দিবসে অসমে বড় নাশকতার ছক কষছে আলফা। সে জন্য মায়ানমার থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক কোন রুটে এ দেশে নিরাপদে নিয়ে আসা হবে, সেই মানচিত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গজেনদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১১ সালে আলফায় যোগ দেয় গজেন। এ দেশে ঢোকার পর দলের অন্য তিন সদস্যের নজর এড়িয়ে সে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাকিদের খোঁজে তিনসুকিয়া ও আশপাশের জেলায় তল্লাশি চলছে। তদন্তকারীদের দাবি, গজেনের কাছ থেকে আলফা শিবিরের আরও কিছু তথ্য ও ছবি মিলেছে।
এ দিকে, মায়ানমার সীমান্তে মোতায়েন মণিপুর পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, গত কাল থেকে দু’দেশের সীমান্ত বরাবর সমরাস্ত্র সাজাচ্ছে সেনাবাহিনী। উখরুল, চাণ্ডেল, চূড়চাঁদপুর এবং অসম থেকে অতিরিক্ত বাহিনীও পৌঁছেছে সেখানে। সেনা সূত্রে খবর, জঙ্গিদের স্যাটেলাইট ও মোবাইল ফোনের কথোপকথন ‘ট্যাপ’ করে জানা গিয়েছে, মায়ানমার সেনাও সীমান্তের ওপারের জঙ্গিঘাঁটির উপরে চাপ সৃষ্টি করছে। কয়েকটি ঘাঁটি বন্ধ করে বিকল্প শিবিরের সন্ধান চালাচ্ছে জঙ্গিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy