Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Nationala News

কাশ্মীরে ‘কাঁটা’ সরাতে কলকাতা, দিল্লিতে যুদ্ধের হুমকি আল কায়দার

কাঁপা হাতে তোলা ভিডিও ফুটেজে শোনা গিয়েছে মেহমুদের হুমকি— ভারতীয় সেনা ও হিন্দু সরকার পরিচালিত শান্তির দুনিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:২৩
Share: Save:

কাশ্মীর ‘জয়’ করতে হলে, ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে হবে। কলকাতা-দিল্লি-বেঙ্গালুরুর নাম করে, শহরগুলিতে হামলার ‘নিদান’ দিল জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ভারতের বিভিন্ন শহরের উল্লেখ আগে করলেও কলকাতার নাম আল কায়দার মতো কোনও জঙ্গি সংগঠনের মুখে এই প্রথম শোনা গেল। কিন্তু, ‘কাশ্মীর জয়’-এর সঙ্গে এই শহরগুলোর সম্পর্ক কী? মঙ্গলবার রাতে অনলাইন জিহাদি মঞ্চে একটি ভিডিও প্রকাশ করে সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছে এ দেশে আল কায়দার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা উসামা মেহমুদ।

কাঁপা হাতে তোলা ভিডিও ফুটেজে শোনা গিয়েছে মেহমুদের হুমকি— ভারতীয় সেনা ও হিন্দু সরকার পরিচালিত শান্তির দুনিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে। তার কথায়, “কলকাতা, বেঙ্গালুরু বা দিল্লি যদি আক্রান্ত হয়, তবেই হুঁশ ফিরবে। এবং কাশ্মীরের উপর থেকে মুঠো আলগা হবে।” ওই নেতার দাবি, কাশ্মীরকে হাতে রাখতে এই মুহূর্তে উপত্যকায় মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৬ লাখ ভারতীয় সেনা। অন্য শহরে আক্রমণ শানালে সেই সেনা সরাতে বাধ্য হবে ভারত। আর তখনই কাশ্মীরের উপর থেকে সেনা-রাশ আলগা হবে। আর তাতেই নাকি মুক্তির স্বাদ পাবে নাকি উপত্যকা!

আরও পড়ুন
‘ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হয়েছে, স্বীকার করছে না পাকিস্তান’

মুম্বই, বেঙ্গালুরু, দিল্লির মতো বড় শহরে জঙ্গি হামলা এর আগে একাধিক বার হয়েছে। কিন্তু, ২০০২ সালে আমেরিকান সেন্টারে হামলা ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনও বড়সড় হামলা কলকাতায় হয়নি। কিন্তু, সেই কলকাতার নাম এ বার আল কায়দার মুখে! যদিও গোয়েন্দারা বলছেন, আগে কলকাতার নাম স্পষ্ট ভাবে না করলেও পূর্ব ভারতের কথা আল কায়দার মুখে শোনা গিয়েছে। তাঁদের দাবি, আল কায়দা প্রথম যখন ভারত আক্রমণের হুমকি দিয়েছিল তখন পশ্চিম ভারতের পাশাপাশি পূর্ব ভারতকেও ‘টার্গেট’ করে। দু’দিক থেকে আক্রমণ শানালে ভারত বিপর্যস্ত হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। তবে, এ বারের মতো সেই সময় কলকাতার নাম সরাসরি উচ্চারণ করেনি তারা।

গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার শাখা সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম। যারা মূলত বাংলাদেশে মুক্তমনাদের খতম করার অভিযোগে অভিযুক্ত। নাম পাল্টে তারা এখন আনসার আল ইসলাম। সম্প্রতি তাদের তিন সদস্য কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে ধরা পড়েছে। এবং কলকাতাতেই। এত দিন গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, বাংলাদেশে মুক্তমনারাই তাদের লক্ষ্য ছিলেন। কিন্তু, এই তিন জনকে গ্রেফতার করে জেরা করার পর তাঁরা ভাবিত। কেন ওই তিন জনকে দিয়ে এ রাজ্যে ‘রেকি’ করানো হচ্ছিল, তা খোঁজার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। অতীতে, আজ থেকে প্রায় বছর ১২ আগে, কলকাতারই বন্দর এলাকায় আল কায়দার নামে কুপন বিক্রি হতে দেখা গিয়েছিল। টাকাও তোলা হয়েছিল সেই সময় প্রচুর। তাই, মেহমুদের হুমকি ফের গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে।

আরও পড়ুন
‘ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হয়েছে, স্বীকার করছে না পাকিস্তান’

একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপমহাদেশের মাটিতে জিহাদি আন্দোলনের বীজ বুনতে এ শহর এখন জঙ্গি সংগঠনের নজরে। কলকাতা-সহ অন্য শহরগুলো কেন আল কায়দার মুখে উঠে আসছে? মেহমুদের ভিডিওতেই সেই জবাব মিলছে। তার মন্তব্য, “উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন জোরদার করার প্রয়োজন এসেছে। পাশাপাশি, কাশ্মীরের মানুষের পাশে গোটা অঞ্চলের সকল মুসলমানের দাঁড়ানো উচিত।”

আরও পড়ুন
নিষেধ উড়িয়ে শরিফের খাসতালুকে জনসংযোগ হাফিজের, উচ্ছ্বাস লাহৌরে

সাক্ষাৎকার ভিত্তিক ওই ভিডিওতে কাশ্মীরে নিজেদের কৌশল নিয়েও কথা বলেছে মেহমুদ। তার দাবি, বহু মুজাহিদিন কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তানে চলে গিয়েছে। এখনও যাচ্ছে। এ বিষয়ে পাক সেনার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করে সে। পাক সেনার জন্যই নাকি মুজাহিদিনরা নিজেদের কাজকর্ম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।

এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন

এ প্রসঙ্গে সে ২০১২-য় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি শেখ আহসান আজিজের উপর ড্রোন হামলার উল্লেখও করেছে। তবে, পাকিস্তানের মদতেই যে কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গিদের ‘বাড়বাড়ন্ত’ তা-ও শোনা গিয়েছে মেহমুদের মুখে। মেহমুদের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান হবে না। তার কথায়, “যে সমাধানসূত্রে কোনও রক্ত-ঘাম ঝরে না, জিহাদ নেই, মৃত্যু নেই, ক্ষমতার কেন্দ্রে কোনও পরিবর্তন নেই— সেটা শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ এক অস্থায়ী চেষ্টা মাত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE