Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

‘বুয়া’র সঙ্গে চলতে দু’পা পিছোতেও রাজি ভাইপো

মায়াবতীর সঙ্গে জোট রাখার প্রশ্নে কোন দল বড় বা কোনটা ছোট— এই ধরনের মনোভাবকে পাশে সরিয়ে রাখতে চান অখিলেশ। আজ এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, জোটের স্বার্থে দরকারে দু’পা পিছিয়ে আসতেও রাজি আছেন তাঁরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৯
Share: Save:

এক ঘাটে মুলায়ম সিংহ যাদব আর মায়াবতী! ভাবাই যেত না এক সময়। কিন্তু এসপি-র রাশ এখন অখিলেশ যাদবের হাতে। ভাইপো-পিসির রাজনৈতিক বোঝাপড়া ইতিমধ্যেই বিজেপিকে হারের মুখ দেখিয়েছে গোরক্ষপুর ও ফুলপুরের উপনির্বাচনে। লোকসভা ভোটেও সাফল্যের এই সূত্রটিকে কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর অখিলেশ। রবিবার জানালেন, ‘বুয়াজি’ মায়াবতীর সঙ্গে সমঝোতা বজায় রাখতে তিনি যে কোনও কিছু করতে রাজি। লক্ষ্য, লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে নরেন্দ্র মোদীর দলকে ধরাশায়ী করা। কারণ, এ রাজ্য থেকেই সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মোদী।

মায়াবতীর সঙ্গে জোট রাখার প্রশ্নে কোন দল বড় বা কোনটা ছোট— এই ধরনের মনোভাবকে পাশে সরিয়ে রাখতে চান অখিলেশ। আজ এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, জোটের স্বার্থে দরকারে দু’পা পিছিয়ে আসতেও রাজি আছেন তাঁরা। অখিলেশের কথায়, ‘‘আমি বাস্তববাদী হতে চাই। নিজের দিক থেকে বলতে পারি, এই জোটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এটা বজায় রাখতে চাই। তার জন্য যদি আমাকে দু’পা পিছিয়েও আসতে হয়, আমি রাজি।’’

তবে সম্পর্কে কাঁটাও আছে একটি। গোরক্ষপুর-ফুলপুরে এসপি-র প্রার্থী জিতলেও, সাম্প্রতিক রাজ্যসভা নির্বাচনে কিন্তু বিএসপি-র প্রার্থী জেতেননি। সে কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত জোটের বিষয়ে নমনীয়তার বার্তা দিতে চাইছেন অখিলেশ। এই সূত্রে তিনি মনে করিয়ে দেন, জোট-ধর্ম পালনে আগেও যথেষ্ট উদারতা ও নমনীয়তা দেখিয়েছেন তাঁরা। যেমন উত্তরপ্রদশের গত বিধানমসভা ভোটে দলের আপত্তি উড়িয়েই নিজেদের হাতে ২০০টি কেন্দ্র রেখে কংগ্রেসকে ১০০টি ছেড়েছিলেন অখিলেশ। গোহারা হারের পরেও তাই কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়নি। ১১ মার্চের ওই উপনির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদশের মুখ্যমন্ত্রী যোগ আদিত্যনাথ বলছিলেন, ‘বাবুয়া আর বুয়া’ উড়ে যাবে ভোটে। তার উল্টোটা হওয়ার পরে যোগী কবুল করেন, ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই’ তাঁদের হারের কারণ।

রাজ্যসভায় নিজের প্রার্থীকে হয়তো পাঠাতে পারননি মায়াবতী, তবে বৃহত্তর স্বার্থে এসপি-র সঙ্গে জোট রাখা যে একান্তই জরুরি, কার্যত সেই বার্তাটিই দিয়ে যাচ্ছেন মুলায়ম-পুত্র। এবং সেই লক্ষ্যে ‘বুয়াজি’-র সঙ্গে যোগাযোগও রেখে চলেছেন ‘ভাতিজা’। গত বুধবারই যেমন অখিলেশ চলে গিয়েছিলেন মায়াবতীর বাসভবনে। সেটাই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক দু’জনের। ওই বৈঠকের আগে অখিলেশ প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদের নাম করে যারা মানুষকে ঠকাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে খুব গুরুত্বপূর্ণ লড়াই এটা। এই শক্তিগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলিত ভাইয়েরা আমাদের সাহায্য করেছেন। মায়াবতীজি তাঁর দলের ভোট এসপি-র প্রার্থীর ঝুলিতে এনে দিয়েছেন। এ জন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’ কংগ্রেসের পি এল পুনিয়াও জানান, ভবিষ্যতে কংগ্রেসও অ-বিজেপি জোটের শরিক হতে পারে। এ বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবশ্য এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।

অখিলেশ বিধান পরিষদের সদস্য। এই পদে তাঁর ও আরও ১২ জনের মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী মাসে। পদগুলির জন্য নির্বাচন হবে ২৬ এপ্রিল। অখিলেশ জানিয়েছেন, তিনি ওই নির্বাচনে অংশ নেবেন না। আসনগুলি কি বিএসপি-কে ছেড়ে দেবেন? অখিলেশ রহস্য রেখে বলেন, ‘‘যে সিদ্ধান্তই হোক সেটা সকলের ভাল লাগবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE