হুশ হুশ করে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে গাড়ি। তারই মাঝে নির্দ্বিধায়, ভাবলেশহীন ভাবে শম্বুক গতিতে লাইনের উপর দিয়ে ঘটাং…ঘটাং শব্দ তুলে এগিয়ে চলেছে। অবলম্বন বলতে তারে বাঁধা টিকি! কলকাতা শহরে ঐতিহ্যবাহী এই দৃশ্যটা এখনও চোখে পড়ে। আধুনিক গতির সঙ্গে এখনও বুক চিতিয়ে লড়ে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
আরও পড়ুন: সরকারি কয়েক লাখ টাকা ফিরিয়ে গ্রামবাসীদের চাঁদাতেই ঘরে ঘরে শৌচালয়!
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। ব্রিটিশ আমলে জন্ম নেওয়া ট্রামের কথাই বলা হচ্ছে এখানে। কলকাতার একাংশ যখন মন্থর গতির দোহাই তুলে ঐতিহ্যবাহী ট্রাম সফরকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে, সেই ট্রামকেই আপন করে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের মথুরা। কলকাতার পর দ্বিতীয় শহর হিসেবে মথুরাতে সফর শুরু করতে চলেছে ট্রাম। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৮-তেই ঘটাং…ঘটাং— এই চেনা শব্দটা শোনা যাবে মথুরার বুকেও। মূলত মথুরা ও বৃন্দাবনকে ঘিরেই হবে ট্রাম সফর। রাজ্যের বিদ্যুত্মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা জানান, মূলত মথুরার ‘পরিক্রমা মার্গ’-এর পর্যটনকে মাথায় রেখে ট্রাম চালানোর চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। এ জন্য সড়কপথের বেশ কিছু জায়গায় পরিবর্তন করা হবে। এই প্রকল্পটির জন্য খরচ হবে ৮৯৯ কোটি টাকা।
১৯ শতকে ব্রিটিশরাজের হাত ধরেই কলকাতায় সফর শুরু করেছিল ট্রাম। তখন ছিল ঘোড়ায় টানা ট্রাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রামের চেহারাও বদলে যায়। আসে বিদ্যুত্বাহী ট্রাম। অনেক সময় পেরিয়ে গিয়েছে, অনেক প্রজন্ম কেটে গিয়েছে, সবাই আপন করে নিয়েছে ট্রামকে। কিন্তু জেট যুগে এসে এখন নিজের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে ট্রামের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে! ট্রাম তুলে দেওয়ার পক্ষে যেমন আওয়াজ উঠেছে, তেমনই অনেক মানুষ এবং পরিবেশবিদ দূষণের যুগে ট্রামকে বাঁচিয়ে রাখতে কোমর বেঁধেছেন।
কলকাতার বুকে ক্রমে বিবর্ণ হয়ে আসা ট্রাম যেন নবজন্ম পেতে চলেছে ভগবান কৃষ্ণের শহরে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy