লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজকে সরিয়ে এবং অরুণ জেটলির গুরুত্ব বাড়িয়ে সংসদীয় দলের নতুন কমিটি গঠন করলেন নরেন্দ্র মোদী।
সংসদের কৌশল সহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকার ও দলের অবস্থান কী হবে, তা স্থির করে থাকে এই কমিটি। কিছ ুদিন আগেই বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে নেতা হিসেবে মোদীর নাম ঘোষণা হয়েছিল। আজ সংসদীয় দলে তাঁর টিমকে সামনে নিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী। অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়েও ওই পদেই ছিলেন। কিন্তু পরে বিজেপি যখন বিরোধী দলের ভূমিকায় এবং বাজপেয়ীও অসুস্থ তখন সংসদীয় দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান লালকৃষ্ণ আডবাণী। তবে মোদী এ বার আডবাণীকে কোনও পদেই রাখলেন না। বিষয়টি আঁচ করে আডবাণী আগেই সংসদ ভবনে নিজের কক্ষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁকে সেই ঘরেই বসতে বলা হয়। বাজপেয়ী সক্রিয় না থাকায় আডবাণী এনডিএর কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করছিলেন। সেই পদ ঘোষণা হয়নি নতুন করে। সেই পদটিও ভবিষ্যতে নিজের কাছে রাখতে পারেন মোদী।
আজকের নতুন কমিটিতে তাৎপর্যপূর্ণ আরও দুটি বিষয় হল, সুষমা স্বরাজকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কমিটির কোনও পদে রাখা হয়নি। আর উপনেতা হিসেবে রাজনাথ সিংহের পাশাপাশি অরুণ জেটলিকে রেখে তাঁরও গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে।
মন্ত্রিসভায় সামিল হওয়ার আগেই রাজনাথ সিংহ দলের সভাপতির পদটি ছাড়ার জন্য একটি শর্ত রেখেছিলেন। সেটি হল, মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেও তাঁকে ‘নম্বর-টু’-র মর্যাদা দিতে হবে। এ ব্যাপারে সঙ্ঘেরও চাপ ছিল। ক’দিন আগে লোকসভায় উপনেতার মর্যাদা সুনিশ্চিত করেছেন রাজনাথ, যাতে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সরকার ও সংসদে তিনিই দায়িত্ব পালন করতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রিসভা গঠনের সময়েই মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনাথকে ‘নম্বর-ট’ু-র মর্যাদা দিলেও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি অনেক বেশি ভরসা রাখছেন অরুণ জেটলির উপরে। সে কারণে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভাবনা রূপায়ণ করতে জেটলিকেই অর্থমন্ত্রী করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে কাউকে উপযুক্ত মনে না করায়, তারও দায়িত্ব জেটলিরই হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। লোকসভায় হেরে যাওয়ার পর জেটলি রাজ্যসভার নেতা হয়েছেন। কিন্তু এ বারে সংসদীয় দলের কমিটিতে রাজনাথের সঙ্গে জেটলিকেও উপনেতা বানিয়ে তাঁর গুরুত্ব বাড়ালেন মোদী।
ফলে এখন থেকে সংসদীয় দলের বৈঠকে মোদী এবং রাজনাথ-জেটলিই সভা পরিচালনা করবেন। আগে যা করতেন আডবাণী, সুষমা ও জেটলি। ভোটের আগে মোদীকে দলের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার ব্যাপারে ঘোরতর আপত্তি তুলেছিলেন আডবাণী ও সুষমা। এখনও পর্যন্ত আডবাণী বা মুরলী মনোহর জোশীকে কোনও পদ দেননি মোদী। সুষমাকে বিদেশ মন্ত্রক দেওয়া হলেও কূটনীতির বিষয়টি আগাগোড়াই প্রধানমন্ত্রীর এক্তিয়ারে। দলের এক নেতা বলেন, “এক সময় যাঁরা মোদীর বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী কী মনোভাব নিয়ে চলেন, আজকের কমিটির বিন্যাসে তা ফুটে উঠল। গত এক বছর ধরেই বিজেপিতে মোদী-যুগ শুরু হয়েছে। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এখন তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহ দলের সভাপতি। ফলে সরকার ও দলের রাশ এখন মোদীর হাতেই। আর বিজেপিতে পালাবদলের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তারই প্রতিফলন ঘটছে নানান মাধ্যমে।”
নতুন কমিটিতে মুখ্য সচেতক হিসাবে জায়গা পেয়েছেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু। পীযূষ গয়ালের পর কোষাধ্যক্ষ পদে এসেছেন কর্নাটকের সাংসদ পি সি মোহন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy