Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মামলা তোলার পথে কি এ বার আদানি গোষ্ঠী

প্রসঙ্গত, ‘রাফাল চুক্তির ১০ দিন আগে অনিল অম্বানী রাফাল ডিফেন্স সংস্থা তৈরি করেছিলেন’— এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র।

ছবি টুইটার।

ছবি টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০৩:২৯
Share: Save:

অম্বানীর পরে আদানি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছ থেকে তাদের ৫০০ কোটি টাকা ‘বেআইনি মুনাফা’ পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনলাইন পোর্টাল ‘দ্য ওয়্যার’-এর বিরুদ্ধে মানহানির একাধিক মামলা করেছিল আদানি শিল্পগোষ্ঠী। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের আগের দিনে শোনা গেল, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন আদানিরা।

আদানিদের তরফে কোনও মন্তব্য করা না-হলেও বিষয়টি অস্বীকার করেননি ‘দ্য ওয়্যার’-এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, ‘দ্য ওয়্যার’-এর বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে দায়ের করা সমস্ত দেওয়ানি ও ফৌজদারি মানহানির মামলা প্রত্যাহার করতে পদক্ষেপ করেছে আদানি গোষ্ঠী। ওই গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের প্রতিবেদনের জেরেই মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল। বিষয়টি চূড়ান্ত হলে বিবৃতি দেব। এই কথাই আমি সংবাদ সংস্থাকে বলেছি।’’

প্রসঙ্গত, ‘রাফাল চুক্তির ১০ দিন আগে অনিল অম্বানী রাফাল ডিফেন্স সংস্থা তৈরি করেছিলেন’— এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, সম্পাদক ও একাধিক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ৫০০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিল অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। গত কাল অনিলের গোষ্ঠী বলেছে, ওই মন্তব্য করা হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। এখন ভোট মিটে গিয়েছে। রাফাল মামলাও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি মোদীর রাজ্যেরই মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের বলে পরিচিত তিনি। ২০১৭ সালে যে প্রতিবেদনের জেরে আইনি জটের সূত্রপাত, সেটি লিখেছিলেন ‘ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি’ (ইপিডব্লিউ)-এর প্রাক্তন সম্পাদক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সংক্রান্ত আইন পাল্টে ‘আদানি পাওয়ার’-কে ৫০০ কোটি টাকার মুনাফা পাইয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। ফলে কাঁচামাল আমদানির শুল্ক না-দিয়েও নয়া নিয়ম মোতাবেক আদানিরা তা ফেরত পেয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনটিতে। ওই বছরেরই ১৪ জুন প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলেও আদানিদের আইনি নোটিসের জেরে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ‘দ্য ওয়্যার’ সেটি পুনঃপ্রকাশ করে ১৯ জুন। তাদের বিরুদ্ধে মানহানির দেওয়ানি মামলা করে আদানি গোষ্ঠী।

২০১৭ সালের নভেম্বরে নিজস্ব একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়েব পোর্টালটি। শিরোনাম— ‘আদানিদের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস টার্মিনালে ইন্ডিয়ান অয়েল এবং গেল ইন্ডিয়ার লগ্নি করার কি অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা রয়েছে?’ সাংবাদিক নুর মহম্মদের ওই প্রতিবেদনের জেরে মানহানির ফৌজদারি মামলা দায়ের করে আদানি গোষ্ঠী। অভিযোগ তোলে, মানহানি ও সস্তা প্রচারের উদ্দেশ্যেই তোলা হয়েছে ওই অভিযোগ। ২০১৮-র এপ্রিলে তার জেরে সমন জারি করে আদালত। তবে ২০১৮-র জুলাইয়ে গুজরাতের আদালতেই এই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক এন আর জোশী তাঁর রায়ে বলেছিলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা সমনে ‘‘জোরালো যুক্তির অভাব ছিল।’’

ওই ওয়েব পোর্টাল, সিদ্ধার্থ বরদারাজন এবং নুর মহম্মদ ছাড়াও আর এক প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক এম কে বেণু, সিদ্ধার্থ ভাটিয়া, মনোবীণা গুপ্ত, পামেলা ফিলিপোসের নামও ছিল আদানিদের মামলায়। সে সবই এখন প্রত্যাহার হয় কি না, সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Adani Group Defamation Case The Wire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE