—ফাইল চিত্র।
কখনও একসঙ্গে একাধিক দেশে সফরে গিয়েছেন। কখনও আবার দ্বিপাক্ষিক সফরে গিয়েছেন কোনও দেশে। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে ৫৮টি দেশে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ হয়েছে ৫১৭ কোটি টাকা। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এই হিসাব তুলে ধরল বিদেশ মন্ত্রক।
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ জানান, ২০১৫ থেকে আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, জার্মানি, ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-সহ মোট ৫৮টি দেশে গিয়েছেন মোদী। তার মধ্যে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন— এই তিনটি দেশে পাঁচ বার গিয়েছেন। আর এই খাতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫১৭ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা।
করোনা সঙ্কটের আগে গত বছরের নভেম্বরে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে শেষ বিদেশ সফরে ব্রাজিল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এই বিদেশযাত্রার ফলে ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশের সম্পর্ক মজবুত হয়েছে এবং বহির্বিশ্বের মানুষ দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সমস্যা সম্পর্কে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন বলেও দাবি করেন মুরলীধরণ। শুধু তাই নয়, এর ফলে ভারত ব্যবসা-বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও লাভবান হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ছিল গরু, হয়ে যাচ্ছে বাছুর, কোটি কোটি টাকা ঘুষে অভিযুক্ত বিএসএফ, শুল্ক কর্তারা
কিন্তু এত কিছুর পরেও নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হল কেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের উপর নির্ভরশীলতা ছেড়ে নেপাল কেন ধীরে ধীরে চিনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন মুরলীধরণ। তবে তিনি জানান, নেপালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দুই তৃতীয়াংশই ভারতের উপর নির্ভরশীল। যে কোনও তৃতীয় দেশের সঙ্গে তাদের যাবতীয় আদান প্রদান ভারতের মাধ্যমেই হয়। ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক অন্য দেশের চেয়ে একেবারেই আলাদা।
তবে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর বাবদ কেন্দ্রের তরফে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ এ বছর মার্চে বাজেট অধিবেশন চলাকালীন মুরলীধরণ জানিয়েছিলেন, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর বাবদ খরচ হয়েছে ৪৪৬ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ২০১৫-’১৬ সালে খরচ হয়েছে ১২১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। ২০১৬-’১৭-য় ৭৮ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা, ২০১৭-’১৮-য় ৯৯ কোটি টাকা এবং ২০১৯-’২০-তে ৪৬ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইটে স্পষ্ট লেখা রয়েছে যে ২০২০-তে এক বারও বিদেশ সফরে যাননি প্রধানমন্ত্রী। তা হলে কয়েক মাসের ব্যবধানে খরচের অঙ্ক ১২৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা বেড়ে গেল কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: ভারতের উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় একাধিক হানা চিনের! দাবি মার্কিন সংস্থার
এর আগে, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর বাবদ খরচের হিসেব দিতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিংহ জানিয়েছিলেন, ২০১৪-র ১৫ জুন থেকে ২০১৮-র ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর বিমানের রক্ষণাবেক্ষণে ১ হাজার ৫৮৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। চার্টার্ড বিমানে যাত্রা বাবদ খরচ হয়েছে ৪২৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। ৯ কোটি ১১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে হটলাইন চালু রাখতে। তা নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন রাহুল গাঁধীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy