স্বপন দে।
বারাণসীর মাফিয়া ডনের বন্দুকবাজরাই মোগলসরাইয়ের রেল ইয়ার্ডে বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার স্বপন দে হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের হাতে যে তথ্য এসেছে, তাতে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত ‘গ্যাং অব গাজিপুর’ এই ঘটনায় যুক্ত। তোলাবাজি থেকে সরকারি টেন্ডার, সর্বত্রই বারাণসীর বাহুবলী নেতাদের মূল অস্ত্র এই ‘গ্যাং অব গাজিপুর’।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার স্বপন দে’কে হত্যার সুপারিও পেয়েছিল এই ‘গ্যাং অব গাজিপুর’। তারাই রেল ইয়ার্ডে বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারকে ‘সীতাপুর কি চকোলেট’ খাইয়েছে। গুলি করে খুন করাকে স্থানীয় ভাষায় এ ভাবেই বর্ণনা করা হয়। বিভিন্ন সময়ে এলাকার ছোট-বড় মাফিয়া ডনদের হয়ে কাজ করে এই দল। অন্য রাজ্যে গিয়ে খুন করে চলে আসাটাও তাদের কাছে জলভাত।
ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায় হত্যার ঘটনাতেও এদের নাম জড়িয়ে রয়েছে। ওই ঘটনায় বারাণসীর লজ থেকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছিল। খুন করে খুব সহজেই এরা ভিড়ে মিশে যায় বলে পুলিশের দাবি। আর পিছনে রাজনৈতিক মদত তো থাকেই। ফলে এই দলের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করে তাদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা স্থানীয় পুলিশের পক্ষে কষ্টকর বলেই দাবি পুলিশ সূত্রের। তদন্তকারী দলের এক অফিসার জানিয়েছেন, একাধিক বার এই দলের বন্দুকবাজদের গ্রেফতার করা হলেও কোনও ক্ষেত্রেই তাদের কাছ থেকে নাটের গুরুদের নাম বার করা যায় না।
স্বপনবাবুর খুনের সাত দিন পরেও পুলিশ অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করেনি। জেলা ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক অফিসার দাবি করেছেন, ‘‘আগামী দু’দিনের মধ্যেই খুনিকে গ্রেফতার করা যাবে।’’ তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তদন্তে খুশি নন নিহতের স্ত্রী নন্দিতা দে। তিনি ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করছেন।
পাশাপাশি, মোগলসরাই রেল ইয়ার্ডে গত কাল থেকে ফের ওয়াগন সারাইয়ের কাজ শুরু করেছে টুয়াম্যান ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। অফিস খোলা হয়েছে। বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার পাশাপাশি দু’জন আরপিএফ কর্মীকেও ইয়ার্ডে মোতায়েন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। রয়েছে স্থানীয় পুলিশের টহল। ইয়ার্ডে প্রবেশ-প্রস্থানের খাতা চালু হয়েছে। লাগানো হয়েছে বড় লোহার গেটও। স্থানীয়দেরও এলাকায় ঢোকা নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে তাতে কি রোখা যাবে মাফিয়া গ্যাংকে? সন্দিহান সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy