কানহাইয়া কুমার
কানহাইয়া কাণ্ডে নতুন মোড়।
চলতি সপ্তাহে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা কানহাইয়া-সহ ওই প্রতিষ্ঠানের দশ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে দিল্লির পাটিয়ালা আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু যে তথ্য-প্রমাণের ভরসায় ওই চার্জশিট জমা পড়েছে, সেটিই ভুয়ো বলে দাবি করেছেন সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র দুই প্রাক্তন সদস্য। তিন বছর আগে মূলত এবিভিপি-র করা অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু এখন এবিভিপি-র ওই দুই প্রাক্তন সদস্যের দাবি, ঘটনার দিন কানহাইয়াদের ফাঁসানোর লক্ষ্যেই পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দেন এবিভিপি-র সদস্যরাই। যাতে কানহাইয়াদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা সম্ভব হয়।
এক দিকে মূল অভিযোগ ঘিরেই প্রশ্ন। অন্য দিকে, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলা শুরু করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে (এ ক্ষেত্রে দিল্লি সরকার)-এর যে অনুমতির প্রয়োজন হয় তা দিতে প্রাথমিক ভাবে আপত্তি জানিয়েছে কেজরীবাল সরকার। ওই অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের পক্ষে ওই মামলা শুরু করা সম্ভব নয়।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশকে ওই অনুমতি দিতে অনিচ্ছুক কেজরীবাল প্রশাসন। কারণ জেএনইউ কাণ্ডের পরেই আলাদা করে নয়াদিল্লির জেলাশাসককে দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করে কেজরীবাল সরকার। জেলাশাসক রিপোর্টে জানান, ঘটনার দিনের মোট সাতটি ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে চারটি ভুয়ো। বাকি তিনটিতে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে মুখোশ পরে ভারত-বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। রিপোর্টে বলা হয়, স্লোগান দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কানহাইয়া, উমর খলিদ বা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো মূল অভিযুক্তরা ছিলেন না। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা দেশদ্রোহের অভিযোগ খারিজ করে দেয় কেজরীবাল সরকার। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি পুলিশ কানহাইয়াদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের যে অভিযোগ এনেছে তার ভিত্তিতে মামলা শুরু করার সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার অর্থই হল জেলাশাসকের দেওয়া রিপোর্টকে ভুল প্রতিপন্ন করা। যা নীতিগত ভাবে করতে রাজি নয় কেজরীবাল প্রশাসন। শনিবার থেকে ওই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা। তারমধ্যে দিল্লির স্বরাষ্ট্র দফতরের ছাড়পত্র না পাওয়া গেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
অনুমতি সংক্রান্ত বিতর্কের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে কানহাইয়াদের বিরুদ্ধে আনা মূল অভিযোগকে নিয়ে। যতীন গোরাইয়া ও প্রদীপ নারওয়াল নামে দুই প্রাক্তন এবিভিপি সদস্যের দাবি, কানহাইয়াকে ফাঁসাতে পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিয়েছিলেন এবিভিপি সদস্যরা। প্রদীপের কথায়, ‘‘লক্ষ্য ছিল কানহাইয়াদের দেশবিরোধী সাব্যস্ত করা। এবং সে সময়ে দেশ জুড়ে দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনায় যে রোষের আবহ তৈরি হয়েছিল, সে দিক থেকে নজর ঘোরানো। এই দুই লক্ষ্যেই পরিকল্পিত প্রচারে নেমেছিল এবিভিপি।’’
এক সময়ে এবিভিপি-র সদস্য হলেও বর্তমানে হরিয়ানা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রদীপ। তাঁর ওই দলবদল নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন তুলেছে এবিভিপি নেতৃত্ব। দলীয় নেতা সৌরভ শর্মার কথায়, ‘‘ওই ব্যক্তি কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। স্বভাবতই তিনি এখন কংগ্রেসের ভাষাতেই কথা বলবেন। রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেস যে শহুরে নকশালদের সমর্থন করেন এটা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy