Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

আবার আন্দোলনের ডাক আসুর, সঙ্কটে শাসক জোট

নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী রুখতে ফের অসম-জুড়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিল আসু। নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনীর বিরুদ্ধে গুয়াহাটিতে আজ আসুর ডাকে এক নাগরিক সভা হয়। সেখানে আসু নেতৃত্বের বক্তব্য, ১৯৭১ সালের পরে আসা হিন্দুদের বোঝাও নরেন্দ্র মোদী অসমের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১২
Share: Save:

নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী রুখতে ফের অসম-জুড়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিল আসু।

নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনীর বিরুদ্ধে গুয়াহাটিতে আজ আসুর ডাকে এক নাগরিক সভা হয়। সেখানে আসু নেতৃত্বের বক্তব্য, ১৯৭১ সালের পরে আসা হিন্দুদের বোঝাও নরেন্দ্র মোদী অসমের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাতে সমর্থন আছে রাজ্যের বিজেপি-অগপ-বিপিএফ জোট সরকারের। এই পরিস্থিতিতে ভূমিপুত্র অসমীয়াদের অস্তিত্ব রক্ষায় ফের অসম আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া ভিন্ন পথ নেই।

আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য জানান, যৌথ পরিষদীয় কমিটি আসুকেও মতামত জানাতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু সেখানে আপত্তি করে লাভ হবে বলে মনে হয় না। তাঁর মতে, অসমের মানুষ যতক্ষণ না আগের মতো তীব্র আন্দোলন শুরু করবেন, ততক্ষণ কেন্দ্র অসমবাসীর দাবিকে পাত্তা দেবে না। গণ সমাবেশে হাজির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিদ্বজ্জনদের মতে, ওই সংশোধনী মোদী সরকারের হিন্দু সাম্রাজ্য গঠনেরই হাতিয়ার। ধর্মের

ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া সংবিধান বিরোধী। তা রাজ্যে ধর্মীয় সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে বলেও বক্তারা মনে করেন।

এই প্রেক্ষিতে অগপর উপরেও বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার জন্য চাপ আসছে। এই পরিস্থিতিতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, অগপ সভাপতি অতুল বরা ও মন্ত্রী কেশব মহন্তরা এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। যে আসু নেতারা অসম আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যাঁদের হাত ধরে অসম চুক্তি হয়েছিল—তাঁরাই এখন অগপর মন্ত্রী-বিধায়ক। অথচ তাঁরা মুখে বলছেন, অসম চুক্তি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা তথা চুক্তির সার্বিক রূপায়ণই অগপর ঘোষিত নীতি। আসুর বক্তব্য, কিন্তু নাগরিকত্ব আইনে পড়শি দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেওয়া তথা মানবিকতার ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি অসম চুক্তির বিরোধী। চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরে আসা আর কোনও ধর্ম বা ভাষার বহিরাগত বা তার বংশধরকে রাজ্যে ঠাঁই দেওয়া হবে না। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার তৈরি করায় অগপ বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারছে না। আবার রাজ্য

বিজেপিও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হতে পারছে না। যে সর্বানন্দ সোনোয়াল অগপ সভাপতি থাকার সময় আইএমডিটি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে ‘নায়ক’ খেতাব পেয়েছিলেন, বিজেপি দলের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তাঁরও হাত-পা বাঁধা। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি ও অগপ—দু’দলই পড়েছে উভয় সঙ্কটে।

মন্ত্রীদের কোর গ্রুপের বৈঠকের পরে অতুল বরা জানান, ২৭ নভেম্বর অগপর সাধারণ অধিবেশন বসবে। সেখানে সব বিষয় নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। ২৫ অক্টোবর নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটির শুনানিতে যাবেন অগপর পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। অসম চুক্তির পরিপন্থী ওই সংশোধনীর বিপক্ষে সরব হবেন তাঁরা।

অন্য দিকে, জামাতে উলেমায়ে হিন্দ এ দিন দরং জেলার বেসিমারিতে বিরাট গণ সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে জামাত তথা এআইইউডিএফ সভাপতি, সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল অভিযোগ করেন, বিদেশি সন্দেহে ও জবরদখলকারী উচ্ছেদের নামে সরকার অযথা সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। সেখানে দশ দফার একটি প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

AASU Assam Threatens
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE