আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর আজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য আধারকে বাধ্যতামূলক করা যাবে না। সংসদেও এ নিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছে কেন্দ্র। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দাবি, আধারের মাধ্যমে নাগরিকদের উপরে নজরদারি চালাতে চাইছে কেন্দ্র।
মিড-ডে মিল, আয়কর রিটার্ন থেকে শুরু করে মোবাইল সংযোগ— সরকারি সুবিধে, সামাজিক প্রকল্প থেকে শুরু করে যে কোনও কাজেই আধার বাধ্যতামূলক করতে চাইছে মোদী সরকার। কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মত দিয়েছেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার মতো কাজে আধার ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য আধার বাধ্যতামূলক করা যাবে না।
আধার কার্ডের সঙ্গে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রশ্ন জড়িত বলেও অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন শিবির। আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে প্রবীণ আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান যুক্তি দিয়েছেন, বেসরকারি সংস্থা বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করছে। এর সঙ্গে দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রশ্ন জড়িত। সুপ্রিম কোর্টেরও মত হল, সাত বিচারপতির বেঞ্চে এর শুনানি হওয়া উচিত। কিন্তু এখন বিচারপতির অভাব ও মামলার চাপে তা সম্ভব হচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ সব বিরোধী দল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সকলের হাতে এখনও আধার কার্ড পৌঁছয়নি। কাজেই আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা অনুচিত।’’
শীর্ষ আদালতে আইনজীবী শ্যাম দিওয়ানের সওয়ালের সুরেই রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘যাঁদের প্রয়োজন কেবল তাঁদেরই ভর্তুকি দিতে ইউপিএ সরকার আধারের পরিকল্পনা করেছিল। এখন মোদী সরকার নাগরিকদের উপর নজরদারি চালাতে আধারকে কাজে লাগাতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অবমাননা করছে।’’ সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘এমন পরিচয়পত্রের সাহায্যে কী ভাবে নজরদারি চলে, তা এনিমি অফ দ্য স্টেট বা ম্যাট্রিক্সের মতো ছবিতে দেখেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সরকার যদি আধার বাধ্যতামূলক করতে চায়, বিল নিয়ে আসুক। পিছনের দরজা দিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy