Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

বেগতিক বুঝে নরম কেন্দ্র ও আধার কর্তৃপক্ষ

গত কাল পর্যন্ত সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের নামে অভিযোগ দায়ের করার কথা বলে যাওয়া আধার কর্তৃপক্ষ, আজ একেবারে ওই দুর্নীতি ফাঁসের জন্য সংবাদমাধ্যমের প্রশংসায় সরব হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share: Save:

দুর্নীতি ফাঁস করা সত্ত্বেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে খোদ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন আধার কর্তৃপক্ষকে। দেশব্যাপী প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে আজ পিছু হটতে বাধ্য হল সরকার। আজ প্রথমে সুর নরম করেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। খানিক পরেই টুইট করে মন্ত্রীর দেখানো রাস্তায় হাঁটে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই)। গত কাল পর্যন্ত সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের নামে অভিযোগ দায়ের করার কথা বলে যাওয়া আধার কর্তৃপক্ষ, আজ একেবারে ওই দুর্নীতি ফাঁসের জন্য সংবাদমাধ্যমের প্রশংসায় সরব হন।

গত সপ্তাহে ট্রিবিউন সংবাদপত্র দাবি করে, মাত্র পাঁচশো টাকার বিনিময়ে তাঁদের সাংবাদিক রচনা খয়রা আধার ওয়েবসাইটে প্রবেশের অধিকার হাতে পেয়ে যান। ফলে হাতে চলে আসে একশো কোটি মানুষের আধার সম্পর্কিত তথ্য। আধার ওয়েবসাইটের এই খামতি ধরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ উল্টে ওই সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে বসেন। বিষয়টি সামনে আসতেই সরব হয় সংবাদমাধ্যম ও বিরোধী শিবির। আধার কর্তৃপক্ষ তথা সরকারের সমালোচনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন মানুষ। কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির আধার কেলেঙ্কারির বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলে।

দিল্লির প্রেস ক্লাবে পূর্বনির্ধারিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে রবিশঙ্কর এ নিয়ে কী বলেন তা শোনার আগ্রহ ছিল সকলেরই। পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে সকালেই ওই অনুষ্ঠান বাতিল করে রবিশঙ্করের দফতর। পরিস্থিতি সামলাতে মন্ত্রী টুইট করেন, ‘‘সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এফআইআর পরিচয়হীন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। ইউআইডিএআই-কে আমার পরামর্শ, পুলিশকে সব রকম সাহায্য করার জন্য তারা যেন ওই সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করেন।’’ এর কিছু পরেই সুর নরম করে ইউআইডিএআই টুইট করে, ‘‘আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। আমরা ট্রিবিউন ও সাংবাদিক রচনা খয়রার কাছে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন আসল অপরাধীদের ধরতে পুলিশকে সব রকম সাহায্য করেন। কোনও গঠনমূলক পরামর্শ দিলেও আমরা তার মর্যাদা দেব।’’

আধার কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছেন বিভিন্ন সময়ে তথ্য ফাঁসের ঘটনা সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঝাড়খণ্ডে ১৫ লক্ষ পেনশন গ্রাহকের নাম প্রকাশ্যে আসা, ১০০ দিনের কাজে যুক্ত প্রায় ৩ কোটি মানুষের নাম ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ যেমন রয়েছে তেমনি রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকা গ্রাহকের অনুমতি ছাড়াই এয়ারটেলে ব্যাঙ্কে জমা পড়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনেক এয়ারটেল গ্রাহকের আধার তথ্য যাচাইয়ের ফাঁকে সেই তথ্য দিয়ে তাদেরই অজান্তে এয়ারটেল পেমেন্টস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। যেখানে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির টাকা জমা পড়ে। অভিযোগ প্রায় ২৩ লক্ষ এমন এয়ারটেল গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ৪৭ কোটি টাকা জমা পড়ে। এই ঘটনা আধার আইন লঙ্ঘনেরই নামান্তর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE