500 Year Old Mysterious Buddhist Mummy of Spiti Valley dgtl
Spiti Valley
হাতে জপমালা, স্পিতি উপত্যকায় ৫০০ বছর ধরে ধ্যানরত প্রাচীন লামার মমি
গ্রামবাসীরা ভালবেসে ডাকেন ‘মমি লামা’। বিশ্বাস, তিনি ছিলেন বৌদ্ধদের গেলুগাপা শাখার সন্ন্যাসী, সাঙ্ঘা তেনজিন। কার্বন ডেটিং বলছে, তিব্বতীয় এই লামা ধ্যানরত অবস্থায় প্রয়াত হন ১৪৭৫ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ মমিটি প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ১৭:১৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
‘মমি’ মানেই রহস্যে ঘেরা মিশরীয় বা দক্ষিণ আমেরিকার পেরুভিয়ান সভ্যতা নয়। প্রাচীন মমি আছে আমাদের দেশেও। হিমাচল প্রদেশের স্পিতি উপত্যকায় সেই এক চিলতে গ্রামের নাম ‘গিউ’ বা ‘গেউ’ বা ‘ঘুয়েন’। পর্যটকদের কাছে যা ‘মমি গ্রাম’।
০২১১
এই ‘মমি’ কিন্তু মিশরীয় সভ্যতার ব্যান্ডেজ মোড়া কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন শব নয়। বরং স্পিতির মমি হল পদ্মাসনে আসীন এক বৌদ্ধ লামা। তাঁর দেহ শুকিয়ে গিয়েছে সম্পূর্ণ। কিন্তু অটুট দাঁত এবং মাথার চুল।
০৩১১
গ্রামবাসীরা ভালবেসে ডাকেন ‘মমি লামা’। বিশ্বাস, তিনি ছিলেন বৌদ্ধদের গেলুগাপা শাখার সন্ন্যাসী, সাঙ্ঘা তেনজিন। কার্বন ডেটিং বলছে, তিব্বতীয় এই লামা ধ্যানরত অবস্থায় প্রয়াত হন ১৪৭৫ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ মমিটি প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন। ( ছবি : শাটারস্টক )
০৪১১
মমির হাতে এখনও আছে জপমালা। বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি ‘জোগচেন’ অনুশীলন করতেন। যা নাকি তাঁদের কাছে তপস্যার সর্বোচ্চ পথ। তাই তাঁর কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত বেষ্টন করে আছে পবিত্র সুতো ‘গোমথক’। ( ছবি:শাটারস্টক)
০৫১১
মিশরীয় মমির সঙ্গে তিব্বতীয় মমির অনেক পার্থক্য আছে। প্রাচীন মিশরে ‘এমবাম’ বা রাসায়নিকের সাহায্যে ফারাও বা অন্য অভিজাতদের শব সংরক্ষণ করা হত। তিব্বতি সভ্যতায় মমিতে রাসায়নিকের ভূমিকা নেই। প্রাকৃতিক ভাবে সংরক্ষিত হত শব।
০৬১১
বিশ্বাস করা হয়, তিব্বতি লামারা ধ্যানের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতেন। কঠোর যোগের ভঙ্গিমায় বসে থাকার জন্য এবং দূষণহীন প্রাকৃতিক শীতলতায় থাকার জন্য দেহ সংরক্ষিত থেকেছে দীর্ঘ কাল। বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন, ওই লামা এখনও মৃত নন। তিনি এখনও তপস্যারত।
০৭১১
প্রাচীন তিব্বতি বৌদ্ধ লামাদের আরও মমি আছে। লাদাখ, স্পিতি ছাড়াও কালিম্পং ও দেহরাদূনের বৌদ্ধ মঠে তাঁদের মমি সংরক্ষিত আছে। অনুমান, তিব্বত থেকে পালিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন তাঁরা।
০৮১১
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় গিউ গ্রামে মাত্র ৫০ থেকে ৭৫ ঘর পরিবারের বাস। এক হাজার বছরের প্রাচীন তাবো মনাস্ট্রি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামের জনশ্রুতি, মানুষের মঙ্গলকামনায় স্বেচ্ছায় প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন তিনি। যাতে গ্রাম থেকে কাঁকড়াবিছের উপদ্রব দূর হয়।
০৯১১
সাঙ্ঘা তেনজিনের মৃত্যুর পরে গ্রামে কাঁকড়াবিছের উপদ্রব সত্যিই নাকি আর দেখা যায়নি। কিন্তু কী ভাবে এই মমি আবিষ্কৃত হল? তা নিয়েও সংশয় আছে। অনেকের দাবি, সাতের দশকে ভূমিকম্পে মাটির তলা থেকে বেরিয়ে এসেছিল এই মমি। তারপর তা আইটিবিপি উদ্ধার করে তুলে দেয় প্রশাসনের হাতে। ( ছবি:শাটারস্টক)
১০১১
সরকারি খাতায় কলমে মমি উদ্ধারের কৃতিত্ব দেওয়া আছে আইটিবিপি-কেই। কিছু সূত্রের দাবি, রাস্তা সারাই বা ট্রেঞ্চ তৈরির সময়ে পাওয়া গিয়েছিল অর্ধ শতাব্দী প্রাচীন এই মমি।
( ছবি:শাটারস্টক)
১১১১
আগামী দিনেও তিনি গ্রামবাসীদের রক্ষা করবেন, এই বিশ্বাসে কাচের বাক্সে সংরক্ষিত ধ্যানরত প্রাচীন মমিকে নিয়মিত পুজো করা হয়। তর্কে বহু দূর হলেও এই মমির জন্যই পর্যটন মানচিত্রে উঠে এসেছে স্পিতির গিউ গ্রাম। ( ছবি:শাটারস্টক)