Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
এক যুগ পরে ফিরল আতঙ্ক

ত্রিপুরায় ফের অপহরণ, ফোন মুক্তিপণ চেয়ে

দীর্ঘ বারো বছর পর ত্রিপুরায় ফের অপহরণের ঘটনা ঘটল। গত কাল সন্ধ্যায় গোমতী জেলার অম্পি মহকুমার তৈদু গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার-সহ চার জনকে অপহরণ করা হয়। কাল রাতেই অপহৃতদের বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণের দাবিও জানানো হয়েছে।

বাপি রায়চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৫
Share: Save:

দীর্ঘ বারো বছর পর ত্রিপুরায় ফের অপহরণের ঘটনা ঘটল। গত কাল সন্ধ্যায় গোমতী জেলার অম্পি মহকুমার তৈদু গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার-সহ চার জনকে অপহরণ করা হয়। কাল রাতেই অপহৃতদের বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণের দাবিও জানানো হয়েছে। তবে আজ রাত পর্যন্ত কোনও ‘জঙ্গি সংগঠন’ অপহরণের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসেনি। পুলিশ সংশ্লিষ্ট এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে।

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন কার্যত দরজায় কড়া নাড়ছে। ফেব্রুয়ারির শেষে মেয়াদ শেয হচ্ছে বর্তমান বিধানসভার। নির্বাচন হওয়ার কথা ফেব্রুয়ারিতেই। এই পরিস্থিতিতে পর পর দুই সাংবাদিক খুনের ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক বামফ্রন্ট সরকার। তাকে ঘিরে এই মুহূর্তে রাজ্যের সব থেকে বেশি সক্রিয় বিরোধী দল, বিজেপির ডাকা বন্‌ধও কার্যত সফল। সেই বন্‌ধ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এই অপহরণের ঘটনায় রাজ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। এক দিকে, বিজেপি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান অবনতি নিয়ে সরব হয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্যে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছে শাসক দল সিপিএম।

আজ রাতে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, রাজ্যের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট ও যথা সময়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন বিঘ্নিত করতেই এই ঘটনা সংগঠিত করা হয়েছে বলে পার্টির ধারণা। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে উপজাতি এলাকায় ব্যাঙ্ক পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আদতে উপজাতি জনগণেরই ক্ষতি হবে। একই সঙ্গে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার জন্য এক দিকে প্রশাসনের কাছে যেমন সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে দাবি করা হয়েছে, তেমনই সাধারণ মানুষকেও নজরদারি বাড়াতে হবে।

অন্য দিকে, পুলিশের তরফে রাজ্য পুলিশের আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) কে ভি শ্রীজেশ জানিয়েছেন, গত কাল সন্ধ্যায় তৈদু থেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তনুময় ভট্টাচার্য, সহকারি ম্যানেজার সুজিত দে ও ব্যাঙ্ক কর্মী রক্তিম ভৌমিক একটি গাড়িতে আগরতলার দিকে আসছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই মোটরবাইক চালিয়ে আসছিলেন ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুব্রত দেববর্মা। গাড়ি চালাচ্ছিলেন তনুময়বাবুই। কী ভাবে তাঁদের অপহরণ করা হল তা নিয়ে পুলিশও ধন্দে। কার্যত প্রথম তিনজনের বাড়িতে মুক্তিপণের জন্য ফোন আসার পরেই অপহরণের খবর জানাজানি হয়। ফোন করা হয় তনুময়বাবুর মোবাইল ফোন থেকেই। জানা গিয়েছে, জন প্রতি ২০ লক্ষ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। শ্রীজেশ জানান, পুলিশ গত রাত থেকেই অপহৃতদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, অপহৃতদের মোবাইল ফোনের অবস্থান যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

অপহৃতদের আত্মীয়রা অপহরণকারীদের হুমকিতে মুখ বন্ধ করে আছেন। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তনুময় ভট্টাচার্যের মা মীরা ভট্টাচার্য, রানীর বাজার নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন। সিপিএমের সক্রিয় নেত্রী। সুজিতবাবুর বাড়িতেও নীরবতা। এক আত্মীয় জানান, পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাঁদের কথা বলতে বারণ করেছে অপহরণকারীরা। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র মোহন গোস্বামী ত্রিপুরা পুলিশের ডিজি অখিল কুমার শুক্লর সঙ্গে আজ দেখা করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি অভিযানের তদারকি করছেন খোদ ডিজি।

অন্য বিষয়গুলি:

Kidnap Miscreants Officials Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE