Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
National News

খিদের জ্বালায় খেয়ে ফেলত মাটি, অন্ধ্রে অনাহারের বলি ২ শিশু

মহেশদের কোনও রেশন কার্ড ছিল না। ছিল না আধার কার্ডও।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
অমরাবতী (অন্ধ্রপ্রদেশ) শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ১৩:৫২
Share: Save:

মাস ছয়েক আগে মা-বাবার সঙ্গে অন্ধপ্রদেশে এসেছিল ছোট্ট সন্তোষ। সঙ্গে ছিল তার আরও পাঁচ ভাই-বোন। মা-বাবার তেমন কোনও রোজগার নেই। আশ্রয়হীন সন্তোষদের দিন কাটে গাছের তলায়। আর রাতে শুতে হয় রাস্তায়।

একটা সময়ে খিদে মেটাতে নেশাগ্রস্ত মা-বাবার চোখের আড়ালেই মাটি খেতে শুরু করে বছর পাঁচেকের সন্তোষ। মাটি খেত তার সমবয়সী মাসতুতো বোন বেন্নেলাও। গত ২৮ এপ্রিল মারা গিয়েছে সে। সন্তোষের মৃত্যু হয়েছিল আরও আগে, তা প্রায় ছ’মাস হয়ে গিয়েছে। তবে তেমন হইচই হয়নি মিডিয়ায়। সম্প্রতি এই মর্মান্তিক কাহিনি প্রকাশ্যে এনেছে অন্ধ্রপ্রদেশের একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। গোটা বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা। এনএইচআরসি-র কাছে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, অনাহারেই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুদের। চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বে যে অন্ধ্রপ্রদেশ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে একটা সময় সুনামের শিখর ছুঁয়েছিল, সেই প্রদীপের তলাতেই এমন অন্ধকার থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে আরও, লোকসভা ভোটের মতো গণতান্ত্রিক যজ্ঞের প্রস্তুতি ও পালন পর্বে যখন লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে, সে সময়েই অনাহারের বলি হতে হচ্ছে দেশের এক প্রান্তের শিশুদের!

পুলিশ জানিয়েছে, সন্তোষের মা-বাবা মহেশ বেনি ও তাঁর স্ত্রী নীলা বেনি আদতে কর্নাটকের বাসিন্দা। মাস ছয়েক আগে সেখানকার মাটি ছেড়ে রুজির খোঁজে অনন্তপুর জেলায় এসে ওঠেন তাঁরা। পাঁচ সন্তান ছাড়াও নীলার বোনের মেয়ে বেন্নেলাও ছিল তাঁদের সঙ্গে। তবে অনন্তপুরে এলেও সেখানে কোনও কাজকর্ম জোটাতে পারেননি মহেশরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায়শই অনাহারে দিন কাটত ওই পরিবারের। মাঝেমধ্যে পড়শিরাই খেতে দিতেন মহেশদের।

আরও পড়ুন: মোবাইল টাওয়ারগুলো যেন কেউ খেলনার মতো ভেঙে দিয়েছে, ইটের চাঙড় উড়ে এসে পড়ল গাড়িতে

আরও পড়ুন: বিপদ কাটল কান ঘেঁষে, স্থলভাগে ঢুকে ফণীর দ্রুত শক্তি খোয়ানোই বাঁচিয়ে দিল বাংলাকে

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অচ্যুত রাও জানিয়েছেন, মহেশদের কোনও রেশন কার্ড ছিল না। ছিল না আধার কার্ডও। গোটা ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। মহেশের পরিবারের জন্য রেশন কার্ডের বন্দোবস্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। ওই এলাকার বিভাগীয় রাজস্ব আধিকারিক টি অজয় কুমার তড়িঘড়ি পৌঁছন মহেশদের গ্রামে। ওই পরিবারকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আধার কার্ড করিয়ে দেওয়া হবে। হবে রেশন কার্ডের বন্দোবস্তও। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে বিভিন্ন পরিকল্পনাতেও তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হবে।

আরও পড়ুন: বিজেপি নই, ছেলেও নয়, কবুল মঞ্জুলকৃষ্ণের

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মহেশ ও নীলার বাকি চার সন্তানদের আপাতত সরকারি হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের কাছে লেখা চিঠিতে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অচ্যুত রাও দাবি করেছেন, মহেশদের বাকি সন্তানদের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করা হোক, যাতে সন্তোষ বা বেন্নেলার মতো আর কোনও প্রাণ অকালে ঝরে না যায়!

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)

অন্য বিষয়গুলি:

Andhra Pradesh Starvation N Chandrababu Naidu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE