ভোট মানচিত্র থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে চলেছে ১১টি গ্রাম!
আগামিকাল উত্তরপ্রদেশের অন্তিম দফার ভোটে শেষ বারের জন্য হাতে কালির ছাপ দিয়ে ভোটের লাইনে দাঁড়াতে চলেছেন বারাণসী থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে শোনভদ্র জেলার এগারোটি গ্রামের মানুষ। আর এক মাসের মধ্যেই এখানকার কানহার নদীর উপর বিরাট বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পাততাড়ি গুটিয়ে উঠে যেতে হবে চার হাজার গ্রামবাসীকে। বুলডোজারের তলায় চলে যাবে গ্রামগুলি।
উন্নয়নের নীচেই জমাট বাঁধা থাকে অন্ধকার। ব্যতিক্রম নয় এখানেও। এই বাঁধ তৈরি হলে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা এবং ঝাড়খণ্ড সীমান্তে কৃষিকাজের অনেকটাই সুরাহা হবে, এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু গোল বেধেছে উৎখাত হওয়া মানুষদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে। আর ভোটের বাজারে এটাই হয়ে উঠেছে দল নির্বিশেষে প্রচারের অস্ত্র।
২৭ হাজার হেক্টর জমিতে জলসেচের এই বাঁধের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। তবে কাজ এগোয়নি। খাতায় কলমে অধিগ্রহণ হলেও গ্রামবাসীরা নির্বিবাদে থেকে গিয়েছেন বাপ-দাদার ভিটেতেই। তখন যে অঙ্কের ক্ষতিপূরণ ধার্য হয়েছিল, তা আজ চল্লিশ বছর পর কণিকামাত্র। ভোটের মুখে এই ক্ষতিপূরণই তাই রাজনীতির অস্ত্র। ‘‘কাকে ভোট দেব আমরা? কেউই কি আমাদের কথা ভাবছে?’’ রীতিমতো ঝাঁঝিয়ে উঠছেন ফুলকানোয়ার দেবী। ৫০ বছর বয়স্ক ফুলকানোয়ারের কথায়, রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা দলবদ্ধ ভাবে ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন। কিন্তু অখিলেশ সরকারের যুক্তি, যেহেতু বাঁধের কাজ কখনওই পুরো বন্ধ হয়নি, ফলে প্রকল্পটিকে জীবিত ধরতে হবে। ধার্য ক্ষতিপূরণ তাই বদলানো যাবে না। তবে ভোটের আগে সুর পাল্টে সপা নেতারা এসে বলে গিয়েছেন, জিতলে ক্ষতিপূরণ একলাফে অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হবে। একই কথা বলছে মায়াবতী এবং রাহুল গাঁধীর দলও।
ঘটনা হল, কারও কথাই বিশ্বাস করছেন না এখানকার মানুষ। ইদ্রিস আনসারির মতো অনেকেই তাই খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘আমরা দল বেঁধে নোটায় ভোট দেব ঠিক করেছি। আমাদের পাশে কেউ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy