যে কোনও দিন অলক্ষীকে তাড়ানো যায় না। এর জন্য বছরের মধ্যে একটি বিশেষ দিন ঠিক করছেন পণ্ডিতরা। কালীপুজোর অমাবস্যা হচ্ছে সেই নির্দিষ্ট দিন। বছরের মধ্যে ওই একটিই দিন। কাজেই নষ্ট না করে আসুন অলক্ষ্মীকে তাড়িয়ে ছাড়ি। এখন দেখে নেওয়া যাক কী ভাবে এবং কখন তাকে তাড়ানো সম্ভব।
প্রথমত কালীপুজোর অমাবস্যা হতে হবে। বর্তমান বর্ষে ১৪২৫ বঙ্গাব্দে ২০ কার্তিক, মঙ্গলবার, ইং ৬ নভেম্বর ২০১৮ রাত্রি ১০টা ২৭ মিনিট থেকে অমাবস্যা শুরু হচ্ছে। পর দিন অর্থাৎ ২১ কার্তিক, বুধবার, ৭ নভেম্বর রাত্রি ৯টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত অমাবস্যা থাকছে। যে হেতু সন্ধ্যাবেলা পাওয়া যাচ্ছে না, সুতরাং প্রদোষে (সন্ধ্যা ৫ টা ৫৩ মিনিট পরে রাত্রি ৬টা ২৯ মিনিট মধ্যে) শ্রীশ্রীমহালক্ষ্মী ও শ্রীশ্রীঅলক্ষ্মীপূজা, দীপাবলী। দেবগৃহাদৌ দীপদানম্, সুখরাত্রি, দীপাবলী(দেওয়ালী)। সুতরাং পর দিন অর্থাৎ ২১ কার্তিক বুধবার, ৭ নভেম্বর ২০১৮, অলক্ষ্মী পূজার দিন ঠিক করা হয়েছে।
এখন দেখে নেওয়া যাক এই অলক্ষ্মীর পূজা কী ভাবে করবেন-
অলক্ষ্মীর পূজা অভক্তি ও তাচ্ছিল্য ভাবে করতে হবে। অতিথিকে যদি তাচ্ছিল্য করা হয়, তবে অতিথি পালিয়ে বাঁচবে, আর আসবে না, এই রকম ভাব।
পূজার উপকরণ-
প্রদীপের পরিবর্তে কেরোসিনের প্রদীপ। আসনের পরিবর্তে পাপোশ, ধূপধুনোর পরিবর্তে লঙ্কা দিয়ে ঘুটের ধোঁয়া, ঠাকুরঘরের পরিবর্তে উঠোনে, ফলের নৈবদ্যের বদলে খোসার নৈবেদ্য, নতুন বস্ত্রের পরিবর্তে পুরাতন ছেঁড়া বস্ত্র, শাঁখ-ঘণ্টা ইত্যাদির পরিবর্তে টিন ও কুলো বাজিয়ে পূজা এবং দক্ষিণ হস্তের পরিবর্তে বাম হস্তে পিছন ফিরে বাসি ফুল দেওয়া।
এখন দেখে নিন অলক্ষ্মীর ধ্যান-
‘ওঁ অলক্ষ্মীঃ কৃষ্ণবর্ণাঞ্চ
ক্রোধানাং কলহপ্রিয়াং।
কৃষ্ণ বস্ত্র পরিধানাং
লৌহাভরণ ভূষিতাম্।।
ভগ্নাফল ছাং দ্বিভূজাং
শর্করাঘৃষ্ট চন্দনাম্।
যথার্জনী সর্ব্যহস্তাং দক্ষিণহস্তে চ যূ্ররূপকাম।
তৈলাভ্যঙ্গিত গাত্রাঞ্চ
গর্দভারোহনাং ভজো।।
অলক্ষ্মৈ নমঃ
তিনি কালো বর্ণের, রাগী এবং কলহপ্রিয়া। তিনি লোহার আভরণ ও মলিন বস্ত্র পরিহিতা, গোটা গায়ে তেল মেখেছেন, বাম হাতে ঝাঁটা ও দক্ষিণ হাতে কুলো নিয়ে গাধার ওপর বসে আছেন। এই তাঁর রূপ।
বিদায়ের পর এই রূপ মনেও আনবেন না।
এরপর ঠাকুর ঘরে মহালক্ষ্মীর ঘট পাতুন। উত্তর-পূর্ব বা ঈশান কোণে। এরপর মনের ভক্তি নিয়ে শুদ্ধ চিত্তে প্রাণ ভরে মহালক্ষ্মীর পুজো করুন।
মহালক্ষ্মীর ধ্যান-
ওঁ বালার্কদ্যুতিসিন্দু খণ্ড
বিসৎকোটির হারোজ্জ্বলাম্
রত্নাকল্প বিভূষিতাং কুচলতাং
শালেঃ করৈর্স্মজ্ঞরীম্।।
পদ্মং কৌশুভ রত্নম প্যবিরতং
সংবিভ্রতীং সস্মিতাং।
ফুল্লোম্ভোজ বিলোচন ত্রয় যুতাং
ধ্যায়েৎ পরমাম্বিকাম্।।
মন্ত্রঃ- ওঁ ঐং হ্রীং শ্রীং ক্লীং হেমৌঃ জগৎ প্রসূত্যৈ নমঃ।
স্তব- স্তোত্র কবচ পাঠ করে, দুর্ভাগ্যরূপিনী অলক্ষ্মীকে বিদায় করে সুখ, শান্তি, সৌভাগ্যরূপিনী মহালক্ষ্মীকে প্রতিষ্ঠা করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy