পুষ্টির সহায়ক সিদ্ধ ডিম। ছবি : সংগৃহীত।
ছোটবেলায় ছড়াটা লোকের মুখে মুখে ঘুরত— ‘সানডে হো ইয়া মনডে/ রোজ খাও অন্ডে’! ডিমের ব্যবসা বৃদ্ধি করতে বাঁধা হয়েছিল ওই বিজ্ঞাপনী স্লোগান। নিরামিষাশীদেরও ডিম খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে চেয়েছিল পোল্ট্রি চাষিদের সংগঠন ন্যাশনাল এগ কো-অর্ডিনেশন কমিটি। কিন্তু রোজ ডিম খাওয়া কি আদৌ উচিত বা নিরাপদ? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডিম খাওয়া বা না-খাওয়া নির্ভর করবে যিনি খাচ্ছেন, তাঁর স্বাস্থ্যের উপরে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, রোজ দু’টি করে সিদ্ধ ডিম খেলে তা শরীরের ১০ রকম পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
১। প্রোটিন: এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি দিন কতটা প্রোটিন জরুরি, তা নির্ভর করে তাঁর ওজনের উপরে। শরীরের ওজনের কিলোগ্রাম পিছু ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, কারও যদি ওজন ৭৫ কেজি হয়, তবে তাঁর দিনে প্রোটিন প্রয়োজন ৬০ গ্রাম। যে হেতু একটি ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তাই নিয়মিত দু’টি করে ডিম খেলে ১২ গ্রাম প্রোটিন যাবে শরীরে। যা নিয়মিত প্রয়োজনের অনেকটাই।
২। ভিটামিন এ: দু’টি সিদ্ধ ডিমে রয়েছে ৫৪০ আইইউ (আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) ভিটামিন এ। চোখ এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই ভিটামিন জরুরি। পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভাল রাখে ভিটামিন এ। কোষবৃদ্ধি, প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এই ভিটামিন উপযোগী। এক জন প্রাপ্তবয়স্কের নিয়মিত ৩০০০ আইইউ ভিটামিন এ প্রয়োজন। ডিম তার অনেকটাই পূরণ করে।
৩। ভিটামিন ডি: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয় হল ভিটামিন ডি। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও উপযোগী এটি। শরীরের প্রতি দিন ৬০০ আইইউ ভিটামিন ডি প্রয়োজন। দু’টি ডিমে থাকে ৮২ আইইউ ভিটামিন ডি।
৪। ভিটামিন বি ১২: মস্তিষ্ক সঞ্চালনে সাহায্য করে ভিটামিন বি ১২। আবার স্নায়ুর কাজেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এর পাশাপাশি, রক্তে লোহিতকণিকা বৃদ্ধি, দৈনন্দিন কাজে চনমনে ভাব বজায় রাখতেও ভিটামিন বি ১২ দরকারি। সাধারণত রোজ ২ মাইক্রোগ্রাম এই ভিটামিনের প্রয়োজন। দু’টি সিদ্ধ ডিমে থাকে ১.৬ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি ১২।
৫। ভিটামিন বি ২: ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট পরিপাকের জন্য দরকার হয় এই ভিটামিন। তা ছাড়া, ত্বক আর চোখের স্বাস্থ্যও ভাল রাখতে সাহায্যে করে ভিটামিন বি ২। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি দিন ১.৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ২ প্রয়োজন। ডিমে এই ভিটামিন থাকে ০.৬ মিলিগ্রাম।
৬। ফোলেট: ডিএনএ সংশ্লেষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ-র মেরামতিতে সাহায্য করে ফোলেট। কোষের স্বাস্থ্যের জন্যও ফোলেট প্রয়োজনীয়। যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের নিয়মিত ফোলেটের চাহিদা পূরণ করার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট জরুরি। প্রতিটি ডিমে ২৪ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট থাকে।
৭। স্যালেনিয়াম: এটি একটি জরুরি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। কোষের স্বাস্থ্য, থাইরয়েড, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল রাখতে কাজে লাগে। প্রতি দিনের প্রয়োজনের ৫৫ মাইক্রোগ্রাম স্যালেনিয়ামের মধ্যে ২৮ মাইক্রোগ্রামেরই জোগান দিতে পারে দু’টি সিদ্ধ ডিম।
৮। কোলাইন: দু’টি ডিমে ২৯৪ মিলিগ্রাম কোলাইন থাকে, যা দৈনিক প্রয়োজনের অর্ধেক। কোলাইন মস্তিষ্ক এবং লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য দরকারি।
৯। আয়রন: হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক আয়রন। দু’টি সিদ্ধ ডিমে থাকে ১.২ মিলিগ্রাম আয়রন।
১০। জ়িঙ্ক: দু’টি সিদ্ধ ডিমে ১.১ মিলিগ্রাম জ়িঙ্ক থাকে। জ়িঙ্ক শরীরের ক্ষত নিরাময়ে সহযোগী। কোষের ক্ষয় রোধ করতে এবং প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে। প্রতি দিন ১১ মিলিগ্রাম জ়িঙ্ক জরুরি এক জন প্রাপ্তবয়স্কের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy