হার্ট অ্যাটাকের আগে শরীরে কী কী লক্ষণ ফুটে ওঠে, কখন সতর্ক হতে হবে। ছবি: ফ্রিপিক।
হার্ট অ্যাটাক মানেই আতঙ্ক। আচমকা বুকে ব্যথা, সারা শরীরে ঘাম, তার পরেই চোখের সামনে সব অন্ধকার। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ভয় কাটিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। বাড়িতে হার্টের রোগী থাকলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে নির্দিষ্ট কিছু ‘বেসিক লাইফ সাপোর্ট’ জেনে রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরাই। হার্ট অ্যাটাক হলে তার পরের ১ থেকে ২ ঘণ্টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকেই বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এই সময়ের মধ্যে যদি রোগীর সঠিক চিকিৎসা শুরু হয়, তা হলে বাঁচানো সম্ভব।
কী কী লক্ষণ বুঝলেই চিকিৎসকের কাছে যাবেন
১) রোগী দরদর করে ঘামতে শুরু করবেন, পাশপাশি শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ এটাই।
২) দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকবে রোগীর। বুকে চাপ চাপ ব্যথা অনুভূত হবে।
৩) রোগীর শীত করতে পারে।
৪)বুক থেকে ব্যথা ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে সতর্ক হতেই হবে।
৫) মহিলাদের ক্ষেত্রে আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বুকে ব্যথা, ঘাম হওয়া বা শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি পেটে অস্বস্তি, পিঠে ব্যথার মতো কিছু লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
বাড়ির লোকজনের কী করণীয়?
১) রোগীর অবস্থা যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, তা হলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরের ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে ইকো কার্ডিয়োগ্রাফি, ইসিজি করে দেখতে হবে, হার্টের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধেছে কি না। বাঁধলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি বা থ্রম্বোলাইসিস করে রক্ত বার করতে হবে।
২) চিকিৎসকের আসতে দেরি হলে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিলম্ব হলে, বাড়িতে সিপিআর দেওয়া যেতে পারে রোগীকে। বাড়িতে যদি হার্টের রোগী থাকেন, তা হলে সিপিআর দেওয়ার পদ্ধতি শিখে রাখাই ভাল। বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম ভাবে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয় এ ক্ষেত্রে।
৩) ধরুন, বাড়িতে আর কেউ নেই আর আপনার এই সব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, তখন সময় নষ্ট না করে ‘সেলফ সিপিআর’ শুরু করতে পারেন। নিজেকে নিজে সিপিআর দেওয়ার এই পদ্ধতিকে বলে ‘কাফ সিপিআর’। এটি সম্পূর্ণ ভাবে বিপদ কাটাতে পারে তা নয়, তবে সাময়িক ভাবে স্বস্তি দিতে পারে। খুব জোরে জোরে কাশতে হবে। সেই সঙ্গে ‘ডিপ ব্রিদিং’ করতে হবে। তার মানে হল গভীর ভাবে শ্বাস টানুন আর কাশতে শুরু করুন। কাশির সঙ্গে সঙ্গেই গভীর ভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। এই প্রক্রিয়া কয়েক সেকেন্ড অন্তর-অন্তর করে যেতে হবে। ‘ডিপ ব্রিদিং’ করলে হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ চালু থাকবে এবং জোরে কাশতে থাকলে হার্টে রক্ত সঞ্চালন কিছু ক্ষণের জন্য হলেও বজায় থাকবে।
৪) অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ সব সময় সঙ্গে রাখতে হবে।
৫) যদি দেখেন রোগীর শরীরে খুব অস্বস্তি হচ্ছে, শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে শবাসনে শুইয়ে দিন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে বলুন।
বাড়িতে হার্টের রোগী থাকলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান একেবারেই চলবে না। কোনও রকম ভাবেই উত্তেজিত হওয়া চলবে না। উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা কমিয়ে ফেলতে হবে। শরীরচর্চা করতে হবে নিয়মিত। তবে হার্টের অসুখ থাকলে, কী ধরনের শরীরচর্চা করা যাবে তা চিকিৎসক ও প্রশিক্ষকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy