জল দেখলেই আতঙ্ক হয় বিশ্বের কারও কারও। কারণ কয়েক ফোঁটা গায়ে পড়লেই সেখানে দগদগে ঘা হয়ে যেতে পারে। শরীরের যেখানে যেখানে জল পড়বে সেখানেই লাল লাল দাগ, র্যাশ হয়ে যাবে নিমেষে। প্রচণ্ড যন্ত্রণা, অস্বস্তিও হবে। ভাবছেন তো জলাতঙ্কের লক্ষণ? একেবারেই নয়। এমন এক বিরল রোগ যা খুব কম জনেরই হয়। জলাতঙ্ক ভেবে ভুল করেন অনেকেই। আসলে এটা এক ধরনের অ্যালার্জি যা খুবই বিরল। এই অ্যালার্জি হয় কেবলমাত্র জল থেকেই। জল ছুঁলে যেন মনে হবে অ্যাসিড। ফোস্কা পড়ে যাবে গায়ে। এমনকি জল খেলেও গলায় সমস্যা হবে।
জলকেই আমরা বলি জীবন। ভাবুন তো, সেই জলই যদি অ্যালার্জির কারণ হয়ে ওঠে, তা হলে জীবন কতটা দুর্বিষহ হয়ে যাবে। চিকিৎসার পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় ‘অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়া’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) হিসাব বলছে, পৃথিবীতে এখনও অবধি মাত্র ৫০ জনের এই রোগ ধরা পড়েছে। প্রথম এই রোগ চিহ্নিত হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। আমাদের দেশে এই রোগ এখনও তেমন ভাবে দেখা যায়নি। তবে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনবিআই)-এর তথ্য অনুযায়ী এ দেশে মাত্র দু’জনের ধরা পড়েছিল এই রোগ। তার মধ্যে একজন ছিল শিশু।
কিন্তু জল থেকে অ্যালার্জি যে কোনও কারও হতে পারে। যে কোনও বয়সেই হতে পারে। তবে মহিলাদের মধ্যে নাকি বেশি দেখা গিয়েছে।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
শরীরের যেখানে জল পড়বে, সেখানেই ফোস্কা পড়ে যাবে। চাকা চাকা র্যাশ ফুটে উঠবে।
জল ছুঁলেই জ্বালাপোড়া ব্যথা হবে। প্রদাহ শুরু হবে শরীরে।
‘অ্যাকুয়াজেনিক আর্টিকারিয়া’-র রোগী স্নানও করতে পারবেন না। তা হলে সারা শরীরে র্যাশ বেরিয়ে যাবে। ঘামাচির মতো চুলকানি শুরু হবে।
ঘাম হলেও অ্যালার্জি হবে, আবার চোখের জলেও অ্যালার্জির লক্ষণ ফুটে উঠবে।
এই রোগী যদি বৃষ্টিতে ভিজে যান, তা হলে আর দেখতে হবে না।
কেন হয় এই রোগ?
কিছু মানুষের শরীরে জল লাগলেই ‘অ্যালার্জেন’ তৈরি হয়। জল শরীরের সংস্পর্শে এলে হিস্টামিন তৈরি হয় যা অ্যালার্জির কারণ। জল থেকে অ্যালার্জি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে এমন সম্ভাবনা কম। জল থেকে সারা শরীরে অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিলে তা ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা অবধি স্থায়ী হয়। তার পর আপনা থেকেই কমে যায়। তবে যদি রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায়, তা হলে মুখে ঘা, খাদ্যনালিতে সংক্রমণ হতে পারে। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারেন রোগী। ঢোক গিললেও সমস্যা হতে পারে।
জলই যেহেতু অ্যালার্জির কারণ, তাই জল থেকেই দূরে থাকতে হবে রোগীকে। জলের বদলে দুধ খাওয়া যেতে পারে। প্রোটিন, ফ্যাট বা শর্করা রয়েছে এমন তরল খেলে গলায় কোনও অসুবিধে হবে না। এই অসুখ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy