হবু মায়েরা কী কী পরীক্ষা করিয়ে নেবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
মা হওয়ার অনুভূতি যেমন উপভোগ্য, তেমনই এর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে অনেক দায়িত্বও। সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করলে, তাই অনেক ভাবনাচিন্তা করেই এগোনো উচিত। অনেক সময়েই দেখা যায়, চেষ্টা করার পরেও গর্ভধারণ করতে পারছেন না কেউ কেউ। এর কারণ শারীরিক ছাড়াও, সঠিক পরিকল্পনার অভাব। গর্ভধারণের আগে হবু মা-রও কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি। কী কী খেয়াল রাখতে হবে, তা জেনে নিন।
এই বিষয়ে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, কারও আগে থেকে কোনও অসুস্থতা থাকলে, অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। তার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে হবে। সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে ‘প্রি প্রেগনেন্সি কাউন্সেলিং’ করিয়ে নিলে ভাল হয়। এ ক্ষেত্রে হবু সন্তান ও মায়ের অসুস্থ হয়ে পড়া ও অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি কমে যায়।
কী কী পরীক্ষা করাতে হবে?
১) প্রথমেই রক্তের ‘হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস’ করে দেখে নিতে হবে হবু মায়ের থ্যালাসেমিয়া আছে কি না। হবু মা যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হন, তা হলে বাবাকেও পরীক্ষা করাতে হবে। কারণ, দু’জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় যথেষ্ট বেশি।
২) ‘রুবেলা আইজিজি’ পরীক্ষা করানো জরুরি। মা যদি রুবেলার জীবাণুর বাহক হন, তা হলে গর্ভস্থ সন্তানের উপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। প্রসবের পরে সন্তানের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে অথবা হার্টের অসুখ হতে পারে। তাই আগে থেকেই হবু মাকে রুবেলার ভ্যাকসিন দিতে হবে।
৩) থাইরয়েড আছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া খুব জরুরি। অনিয়ন্ত্রিত থাইরয়েড নিয়ে গর্ভধারণ করতে সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েড হরমোনের তারতম্যের কারণেই গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। সে ক্ষেত্রে টি৩, টি৪, টিএসএইচ টেস্ট করিয়ে রাখা ভাল।
৪) রক্তে শর্করার মাত্রা, রক্তচাপ ইত্যাদিও পরীক্ষা করাতে হবে। যদি আগে থেকেই কেউ ‘ব্লাড সুগার’ বা রক্তচাপের ওষুধ খান, তা হলে গর্ভধারণ করার পর কোন ওষুধ কী ডোজ়ে খেতে হবে আর কোনটা বন্ধ রাখতে হবে, তা অবশ্যই চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে। প্রসবের পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ছে কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ‘এইচবিএ১সি টেস্ট’ ও ‘গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট’ করা প্রয়োজন।
৪) কয়েক ধরনের ওষুধ গর্ভাবস্থায় খেলে তা গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে।
৫) দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের অনেক জটিলতা দূর হয়েছে ফোলিক অ্যাসিড খেয়ে। তাই গর্ভধারণের আগে থেকেই যদি ফোলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করা যায়, তা হলে গর্ভস্থ ভ্রূণের অনেক জটিলতাই দূর হতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাবেন না।
চিকিৎসক পরামর্শ দিচ্ছেন, গর্ভে সন্তান আসার পরেও তাকে সুস্থ ভাবে ধারণ করতে আপনার শরীর প্রস্তুত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। গর্ভস্থ ভ্রূণ যখন একটু একটু করে বেড়ে উঠছে, সে সম্পূর্ণ সুস্থ কি না বা তার কোনও জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। ‘আল্ট্রা সাউন্ড স্ক্রিনিং’ করলে তা ধরা পড়ে। তা ছাড়া ‘ডবল মার্কার টেস্ট’ করে দেখে নেওয়া হয়, গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্রোমোজ়োমে কোনও সমস্যা আছে কি না বা ডাউন সিনড্রম হওয়ার ঝুঁকি আছে কি না। তা ছাড়া গর্ভাবস্থা আরও পরিণতির দিকে এগোলে একাধিক ইউএসজি করে গর্ভস্থ শিশুর গতিবিধি ও বেড়ে ওঠা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy