রান্নায় চিলি অয়েল ব্যবহার করেন? ছবি: সংগৃহীত।
শুকনো বা কাঁচালঙ্কা খেতে আপত্তি থাকলেও চিনা খাবারে ‘চিলি অয়েল’ ব্যবহার করতে ভোলেন না। বাড়ির সাধারণ নুডলসে রেস্তরাঁর মতো স্বাদ এনে দিতে পারে এই অয়েল। তবে এই চিলি অয়েল শুধু যে খাবারের স্বাদের জন্য খাওয়া হয়, তা নয়। এই অয়েলের নাকি অনেক গুণ। শুনে মনে হতেই পারে শুকনো বা কাঁচালঙ্কা থাকতে হঠাৎ চিলি অয়েল খেতে যাবেন কেন? চিলি অয়েলের মধ্যে রয়েছে লঙ্কার নির্যাস। তা ছাড়া সব ধরনের লঙ্কায় ‘ক্যাপসাইসিন’-এর মাত্রাও এক নয়। আবার, লঙ্কার দানা খেলেও অনেকের পেটের সমস্যা দেখা দেয়। চিলি অয়েল ব্যবহার করলে এই সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়।
চিলি অয়েলের মধ্যে কী এমন রয়েছে?
১) চিলি অয়েলের মধ্যে রয়েছে ‘ক্যারোটিনয়েড’ এবং ‘ক্যাপসাইসিনয়েড’-এর মতো উপাদান। এই দু’টি উপাদান আসলে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ‘ফুড সায়েন্স’ জানার্লে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এই ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যার ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও নিয়ন্ত্রণ থাকে। এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে থাকলে ক্যানসারের মতো মারণরোগকেও আটকে দেওয়া যায়।
২) ‘ক্যাপসাইসিন’ এক দিকে যেমন অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অন্য দিকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিও। তাই শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে চিলি অয়েল। ‘বায়োমলিকিউলস’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যাঁরা চিলি অয়েল বা ‘ক্যাপসাইসিন’ আছে এমন লঙ্কা বেশি খান তাঁদের প্রদাহজনিত বহু সমস্যাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। সামগ্রিক ভাবে হার্ট ভাল রাখতেও এই অয়েলের ভূমিকা রয়েছে।
৩) প্রচণ্ড ব্যথা-যন্ত্রণায় আরাম দিতে পারে চিলি অয়েল। না, ভুলেও চিলি অয়েল মাখতে যাবেন না। মস্তিষ্কে ব্যথার সঙ্কেত প্রেরণকারী নিউরোট্রান্সমিটার বা স্নায়ুগুলিকে অকেজো করে দিতে পারে এই চিলি অয়েল। ফলে ব্যথা-যন্ত্রণায় প্রাকৃতিক ‘পেনকিলার’-এর মতো কাজ করে এই উপাদান।
৪) ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, টানা ১২ সপ্তাহ অর্থাৎ প্রায় মাস তিনেক লঙ্কা বা চিলি অয়েল খেলে ওজনে হেরফের বোঝা যাবে। ঝাল খেলে যে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে সে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
৫) শরীরে রক্ত সরবরাহ ভাল হলে অনেক সমস্যারই সমাধান সম্ভব। সেই কাজে সাহায্য করে চিলি অয়েলে উপস্থিত ‘ক্যাপসাইসিন’। রক্তবাহী নালির পথ প্রশস্ত করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এই উপাদানটি।
সাধারণ রান্নায় কী ভাবে যোগ করবেন চিলি অয়েল?
১) স্যালাডের ড্রেসিংয়ে ব্যবহার করা যায় চিলি অয়েল।
২) সাদামাঠা ‘ক্লিয়ার’ স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধি করতে পারে এই অয়েল।
৩) নুডলসে তো চিলি অয়েল দেন। পাস্তাতে এই অয়েল দিলেও খেতে মন্দ লাগে না।
৪) মাছ, মাংস ম্যারিনেট করতে অনেকে চিলি অয়েল ব্যবহার করেন।
৫) বাড়িতে মোমোর চাটনি না থাকলে উপর থেকে সামান্য চিলি অয়েল ছড়িয়ে নিতে পারেন।
তবে বেশি চিলি অয়েল খাওয়াও ভাল নয়। কী কী ক্ষতি হতে পারে?
১) যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা সাবধান। চিলি অয়েল খেলে সমস্যা বাড়তে পারে।
২) অনেকের লঙ্কায় অ্যালার্জি রয়েছে। তাঁরাও চিলি অয়েল খাবেন না।
৩) বেশি চিলি অয়েল খেলে পাকস্থলীতে ঘা বা ক্ষতও হতে পারে। সেখান থেকে শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণও অস্বাভাবিক নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy