জল খাওয়ার ফলে শুধু আমাদের তেষ্টাই মেটে না, সেই সঙ্গে শরীরে জলের মাত্রা বা ভারসাম্যও বজায় থাকে। ছবি: সংগৃহীত
শরীর সুস্থ রাখতে সঠিক পরিমাণে জল খান— চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদরা এই পরামর্শ সকলেই দিয়ে থাকেন। আপনার ত্বক, চুল এবং শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য জলের প্রয়োজনতীয়তা কতটা তা বলে শেষ করা যাবে না।
জল খাওয়ার ফলে শুধু আমাদের তেষ্টাই মেটে না, সেই সঙ্গে শরীরে জলের মাত্রা বা ভারসাম্যও বজায় থাকে। কিন্তু কী ভাবে জল খান আপনি? আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়, সঠিক পদ্ধতিতে জল না খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে!
জেনে নিন, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে জল খাওয়ার সময় ঠিক কী কী নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়।
১) বিশেষজ্ঞদের মতে, তাড়াহুড়ো করে অথবা দাঁড়িয়ে ঢক ঢক করে জল খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই ভাল না। দাঁড়িয়ে জল খেলে আমাদের স্নায়ু উত্তেজিত হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় রক্তচাপ। ফলে এ ভাবে জল খেলে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। কিডনির কর্মক্ষমতা কমে। ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত বা বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, এ ভাবে জল খেলে বুকের পেশিতে চাপ পড়ে ফলে হৃদ্যন্ত্রের উপরে চাপ তৈরি হয়ে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই এক জায়গায় বসে জল খাওয়াই শ্রেয়।
২) এক নিঃশ্বাসে ঢকঢক করে জল খেয়ে ফেলবেন না যেন। চুমুক দিয়ে অল্প অল্প করে জল খান। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, খাওয়ার সময় কে কখন জল খাবেন তা ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন হয়। শরীরে তিনটি দোষ রয়েছে— বাত, পিত্ত এবং কফ। আপনি কী ভাবে জল পান করবেন তা অবশ্যই এই দোষগুলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। বাত প্রকৃতির মানুষদের খাওয়ার এক ঘণ্টা পরেই জল পান করা উচিত। এতে খাবার আরও ভাল ভাবে হজম করতে সাহায্য করে। পিত্ত প্রকৃতির মানুষদের হজম প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি শুরু করার জন্য খাওয়ার সময়ে চুমুক দিয়ে অল্প জল খেতে পারেন। কফ প্রকৃতির মানুষদের খাবার খাওয়ার আগে জল পান করা উচিত যাতে তাঁদের পেট ভর্তি থাকে এবং অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে ফেলেন। এটি তাঁদের সহজেই ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৩) ফ্রিজের ঠান্ডা জল কখনওই খাওয়া উচিত নয়। ঠান্ডা জল শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত চলাচল করতে বাঁধা দেয়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে। ঈষদুষ্ণ জল খাওয়া শরীরের পক্ষে বেশ উপকারী। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, হজমশক্তি বাড়াতে এবং ব্যথা দূর করতে গরম জল দারুণ কার্যকর।
৪) কেবল তেষ্টা পেলেই জল খাওয়া উচিত। আপনার শরীরের ওজন ও উচ্চতার উপর নির্ভর করবে আপনি দিনে ঠিক কতটা জল খাবেন। অতিরিক্ত জল খেলে শরীরে অস্বস্তি হতে পারে। প্রস্রাবের রং দেখতেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনা শরীরে জলের ঘাটতি হচ্ছে কি না। গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব হলেই বুঝবেন শরীরে জলের ঘাটতি হচ্ছে। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফাটতে শুরু করলেও বুঝবেন আপনি ঠিকঠাক পরিমাণে জল খাচ্ছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy