এই ধরনের ব্রণ বাইরে থেকে ত্বকের যত্ন নিয়ে সারানো সম্ভব নয়। যতই ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রাখুন, ব্রণ ফিরে আসবে। ছবি: সংগৃহীত
কৈশোরে ব্রণর সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক বেশি বয়সেও ব্রণর প্রবণতা কমছে না। বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক, যাঁরা নিয়মিত ব্রণর সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের দেখা যায় শরীরে হরমোনের তারতাম্য রয়েছে। সেই কারণেই ঘন ঘন কপাল, চিবুক, নাকের চারপাশ, গাল, ঘাড়, গলা, পিঠ, বুকে, এমনকি হাতেও ব্রণ হতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করলে হয়তো দেখা যাবে মেয়েদের ক্ষেত্রে, শরীরে ছেলেদের হরমোন অ্যান্ড্রোজেনের পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে অত্যধিক বেশি। সেই কারণেই ত্বকে সেবাম কোষগুলি বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। তাই ত্বক চট করে তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। চুল ওঠার সমস্যা বেড়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে লাল হয়ে ফুলে ব্রণ বেরোয়। বেশির ভাগ ব্রণই বেশ বেদনাদায়ক হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি কারও কারও হয়তো শরীরে অবাঞ্ছিত লোমের পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে।
তাই এই ধরনের ব্রণ বাইরে থেকে ত্বকের যত্ন নিয়ে সারানো সম্ভব নয়। যতই ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রাখুন, ব্রণ ফিরে আসবে। শুধু তেল-মশলা না খাওয়া কিংবা বেশি করে জল খাওয়ার মতো উপদেশও কাজে লাগবে না। এই ধরনের ব্রণর সঙ্গে লড়ার প্রাথমিক উপায় ব্রণ হওয়ার আসল কারণ খুঁজে বার করা। দু’রকমের কারণ হতে পারে।
১। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: আপনার কি খাবার খাওয়ার পরও খিদে পুরোপুরি যায় না? কিংবা কখনও কখনও খুব বেশি মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হয়? রক্তপরীক্ষা করলে দেখা যেতে পারে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি। আবার তা না-ও হতে পারে। কিন্তু দু’ক্ষেত্রেই আপনার আরও এক ধরনের গোলমালের আশঙ্কা থেকে যায়। যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইনসুলিন রেজিস্টট্যান্স। মানে আপনার শরীরে ইনসুলিন তৈরি হচ্ছে, কিন্তু সে তার কাজ ঠিক মতো করতে পারছে না। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এই কারণেও আপনার ডিম্বাশয়ে বেশি পরিমাণে অ্যান্ড্রোজেন তৈরি করে। তা থেকেই সিস্ট তৈরি হয় এবং তাতেই কপাল, গাল, চিবুক ব্রণয় ভরে যায়।
২। দীর্ঘ প্রদাহ: মা-ঠাকুমারা ব্রণ দেখলেই বলেন, পেট পরিষ্কার হচ্ছে না। কথাটা শুনে বিরক্ত লাগলেও হজমশক্তি এবং ব্রণর এক গভীর যোগ রয়েছে। যদি আপনার শরীরে কোনও রকম দীর্ঘ প্রদাহ থাকে, তা হলে পাচনশক্তি কমজোরি হয়ে যায়। খাবার হজম হতে সমস্যা হয় এবং প্রত্যেক দিন পেট পরিষ্কার হতেও অসুবিধা হয়। এই কারণেও কিন্তু শরীরে অ্যান্ড্রোজেন উৎপাদন বেড়ে যেতে পারে। যার জন্য অনেকেই পলিসিস্টিটিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হন। তাই ব্রণর সমস্যাও যেতে চায় না।
কী ভাবে সামলাবেন?
ঠিক কী কারণে আপনার শরীরে অ্যান্ড্রোজেন বেশি, তা বার করা প্রয়োজন। যদি আপনার শরীর ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট হয়, তা হলে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনতে হবে। গ্লাইসেমিক সূচক কম, এমন খাবার খান। গমের রুটির বদলে জোয়ার-বাজরা-রাগির রুটি খেতে পারেন। কার্বোহাড্রেট কমিয়ে খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি রাখুন। খুব ঘন ঘন মুখ চালাবেন না। শরীরকে সময় দিন আগের খাবার হজম করার।
যদি পেটে প্রদাহের সমস্যা থাকে তা হলে আপনাকে খুঁজে বার করতে হবে কোন খাবারে আপনার সমস্যা বেশি হচ্ছে। অনেকের দুগ্ধজাত খাবারে সমস্যা হয়। অনেকের গ্লুটেনে সমস্যা হয়। এক মাস করে এগুলি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেখতে হবে আপনার পেট এবং ত্বক কেমন থাকছে। রোজের খাবারে প্রোবায়োটিক রাখুন। সেটা দই হতে পারে, আচার হতে পারে, ইডলি বা দোসা হতে পারে, কিংবা কম্বুচা পানীয়ও হতে পারে।
সিস্টিক অ্যাকনে বা হরমোনের তারতম্যের জন্য যে ব্রণ হয়, তা সম্পূর্ণ সারিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে সময় লাগবে। রাতারাতি কোনও বদল আশা করবেন না। জীবনযাপন বদলাতে নিজেকেও কিছুটা সময় দিন। ধৈর্য ধরে নিয়ম মেনে চললে সুফল নিশ্চয়ই পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy