প্রতীকী ছবি।
সমস্যার সূত্রপাত হয় বয়সন্ধির শুরুতেই। কষ্টদায়ক কোনও উপসর্গ থাকে না বলে এই নিয়ে কেউই খুব একটা মাথা ঘামান না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সে রকম কোনও অসুবিধে না হলেও আসল সমস্যা দেখা দেয় মা হওয়ার সময়ে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস শব্দটা সাম্প্রতিককালে কমবেশি প্রায় সকলের চেনা হলেও কিছু ব্যাপারে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই, মত স্ত্রীরোগ চিকিৎসক বাসুদেব মুখোপাধ্যায়ের।
পিসিও থাকলে ডিম্বাণু নিঃসরণের চক্র এলোমেলো হয়ে যায় বলে সন্তান ধারণে সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি। তাই মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে নিয়ম করে ব্যায়াম ও সুষম খাবার খেয়ে ওজন কমান জরুরি বলে মনে করেন বাসুদেব মুখোপাধ্যায়। পিসিও থাকলে মা হওয়ার সময়ে মূলত কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, জানালেন তিনি।
১। যাঁরা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ সহ গর্ভধারণ করেছেন, তাঁদের হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি গ্রুপে রাখতে হয়। কারণ এই সমস্যা সহ মা হতে গেলে মিসক্যারেজের ঝুঁকি সাধারণ মেয়েদের থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি। তাই সতর্ক থাকা দরকার। পিসিওর জন্যে যাঁদের মেটফরমিন নামক ওষুধ খেতে হয়, তাঁদের কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করা চলবে না। মেটফরমিন ওষুধটি মিসক্যারেজ আটকে দিতে সাহায্য করে।
২। প্রথম তিন মাস হবু মাকে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। দরকার হলে বিশ্রামে থাকতে হতে পারে।
৩। পিসিও সহ অন্তঃসত্ত্বা হলে গর্ভবতীদের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে প্রিএক্লাম্পশিয়া নামক এক জটিল পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে, যা হবু মা ও গর্ভস্থ সন্তান দু’জনের জন্যেই যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।
কী করণীয়
১। এই মায়দের নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্ববধানে থেকে সাবধানতা মেনে চলা জরুরি।
২। পিসিও সহ মা হতে গেলে অনেকেরই জেস্টেশনাল ডায়বিটিসের (গর্ভাবস্থায় সাময়িক ডায়বিটিস) ঝুঁকি থাকে। ডায়বিটিস হলে ডায়েটিশিয়ানের নির্দেশ মেনে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি।
৩। পিসিও থাকলে ভ্রূণের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থার শুরুতে সাধারণ ইউএসজি করার পর ২০ সপ্তাহে লেভেল ২ আলট্রাসাউণ্ড বা অ্যানোমালি স্ক্যান করা উচিত, বললেন ফিটাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ দেবস্মিতা মণ্ডল।
৪। কোনও অসুবিধে দেখা গেলে ফিটাল ইকোকার্ডিওগ্রাফি করে দেখে নিতে হবে হার্টের কোনও গুরুতর সমস্যা আছে কি না।
৫। দেবস্মিতা জানালেন, আগে থেকে গর্ভস্থ শিশুর সমস্যা জানা গেলে প্রসবের সময় নিওনেটালজিস্ট ও নিওনেটাল ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ব্যবস্থা করা থাকলে সঠিক চিকিৎসায় ভাল থাকে শিশু। হবু মা ও বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে ভাল পরিকাঠামো যুক্ত হাসপাতালের প্রয়োজন। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে ভবিষ্যতে অনেক জটিল পরিস্থিতি সামলে দেওয়া যায়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ প্রতিরোধ করা মোটেও কঠিন নয়, প্রয়োজন সদিচ্ছা। ওজন স্বাভাবিক রাখতে নিয়ম করে হালকা এক্সারসাইজ ও শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। টাটকা শাক, সব্জি, ফল খেতে হবে নিয়ম করে। ফাস্ট ফুড ও চিনি খাওয়া মানা। মানসিক চাপ কমিয়ে মন ভাল রাখতে হবে। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলবেন। তা হলে আকাঙ্খিত সন্তানকে কোলে তুলে নিতে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy