ওজন কমানোর ওষুধ ওজ়েম্পিকের প্রতিদ্বন্দ্বী কি তবে আসতে চলেছে? আমেরিকার ওষুধ নির্মাতা সংস্থা এলি লিলি-র নতুন ওষুধ ওজন কমাতে পারে বলেই দাবি করা হয়েছে। ওষুধটির ক্লিনিকাল ট্রায়াল টাইপ ২ ডায়াবিটিসের রোগীদের উপর করা হচ্ছিল দীর্ঘ সময় ধরেই। তাতেই দেখা যায়, ওষুধটির ডোজ়ে রক্তে শর্করার মাত্রা তো কমছেই, সেই সঙ্গে রোগীদের ওজনও কমছে।
লিলি-র চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার দানিয়েল স্কোভ্রোনস্কি জানিয়েছেন, বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৭০ কোটির বেশি লোক টাইপ ২ ডায়াবিটিসে ভুগছেন। তাঁদের বেশির ভাগেরই স্থূলত্বের সমস্যাও রয়েছে। সেখানে ওজ়েম্পিকের মতো কেবল একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে একই সঙ্গে ডায়াবিটিস ও স্থূলত্বের সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। লিলি-র তৈরি ওষুধের নাম ‘অরফর্গলিপ্রোন’। এটি ক্যাপসুলের মতো খাওয়ার ওষুধ। দানিয়েল জানাচ্ছেন, ৫৫৯ জন টাইপ ২ ডায়াবিটিসের রোগীকে ওষুধটি খাইয়ে দেখা গিয়েছে, ৪০ সপ্তাহের মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক নেমে গিয়েছে এবং প্রত্যেকের ওজনও কমেছে ৭ কিলোগ্রামের বেশি।
আরও পড়ুন:
স্থূলতা কমানোর সব ওষুধ মোটেই নিরাপদ নয়। সকলকে তা দেওয়া হয় না। ওজ়েম্পিক এক ধরনের ‘সেমাগ্লুটাইড’, যা খিদে কমিয়ে দেয়। ওষুধটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিতে হয় যার খরচ অনেকটাই বেশি। নির্দিষ্ট ডোজ়ের বেশি এই ওষুধ শরীরে গেলে কিডনির রোগ, অ্যালার্জি, হাইপারটেনশন, হাইপোগ্লাইসেমিয়া, এমনকি থাইরয়েড, ক্যানসারের মতো রোগ হতে পারে। তবে নতুন ওষুধটির নাকি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম বলেই দাবি করা হয়েছে। ওষুধটি বেশি ডোজ়ে খেয়ে ফেললে বমি, বদহজম, ডায়েরিয়া হতে পারে, তবে লিভার ও কিডনির ক্ষতি হবে না বলেই দাবি গবেষকদের। ওষুধটি অনুমোদনের জন্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছে আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের মধ্যেই সেটি বাজারে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এলি লিলির ওজন কমানোর ওষুধ মাউনজারো দেশের বাজারে চলে এসেছে। সেটিও ডায়াবিটিসেরই ওষুধ। এলি লিলি-র তরফে জানানো হয়েছে, অরফর্গলিপ্রোন নামক ওষুধটি জিআইপি ও জিএলপি-১ নামক দু’টি হরমোনকে সক্রিয় করে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এটি মূলত অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ওষুধ। কেবল মাত্র ওজন কমানোর জন্য ওষুধটি তৈরি করা হয়নি। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সেটি বাড়তি মেদ ঝরাবে। তাই ওষুধটি ততটা ক্ষতিকর হবে না বলেই দাবি গবেষকদের।