ভাতঘুম দিতে পছন্দ করেন অনেকেই। দুপুরে খাওয়ার পরে কিছু ক্ষণ গড়িয়ে না নিলে যেন তৃপ্তি আসে না। বড়রা ভাতঘুম দিচ্ছেন তা না হয় হল, কিন্তু বাড়ির খুদে সদস্যটিকেও কি দুপুরে ঘুমোতে বলেন? অনেক শিশুরই দুপুরে খেয়ে উঠে ঘুমনোর অভ্যাস রয়েছে। এমন অভ্যাস কি ভাল?
খাওয়ার পর দেহে ইনসুলিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার ফলে ঘুমের সহায়ক বেশ কিছু হরমোন নির্গত হয়। এই হরমোনগুলি মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনে পরিণত হয়, যা আলস্য আরও বাড়িয়ে দেয়। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, শরীর যদি খুব ক্লান্ত থাকে বা রাতে ঘুম না হয়, তা হলে দুপুরে আধ ঘণ্টার মতো ঘুমনো যেতেই পারে। এতে শরীর চাঙ্গা হয়। কিন্তু যদি প্রয়োজন না থাকে, তা হলে ঘুমনোর দরকার নেই। বিশেষ করে ছোটদের ভাতঘুমের অভ্যাস না করানোই ভাল। এতে ওদের আলসেমি আরও বেড়ে যাবে। কোন বয়সের শিশু কতটা ঘুমোবে, তারও একটা হিসাব আছে।
· ৩ মাস অবধি দিনে ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুম জরুরি
· ৪ থেকে ১২ মাসে ১২-১৬ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে
· ১ থেকে ২ বছরের শিশুর সারা দিনে ১১-১৪ ঘণ্টা ঘুম জরুরি
· ৩ থেকে ৫ বছরে ১০-১৩ ঘণ্টা ঘুমই আদর্শ
· স্কুল পড়ুয়া ৬-১৩ বছরের খুদের ৯-১২ ঘণ্টা ঘুম দরকার
অনিন্দিতার মতে, রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হলে আর দিবানিদ্রার প্রয়োজন পড়ে না। বরং ওই সময়ে নানা কাজে ব্যস্ত রাখুন খুদেকে। কী কী কাজ?
আরও পড়ুন:
খেয়ে উঠে প্রথম কাজ হাঁটাহাঁটি করা। ঘরের ভিতরে, বাড়ির উঠোনে, ছাদে— যে কোনও জায়গায় হাঁটতে পারে। এতে হজমশক্তি আরও ভাল হবে।
দুপুরে গল্পের বই পড়ানোর অভ্যাস করান শিশুকে। তা না হলে ছবি আঁকতে পারে। মোবাইল, ট্যাব বা কোনও রকম বৈদ্যুতিন ডিভাইসে চোখ না রেখে বরং সৃজনশীল কাজের অভ্যাস করাতে পারলে ভাল হয়।
বিকেলের দিকে শরীরচর্চা বা পার্কে গিয়ে হাঁটা, স্পট জগিং করতে পারলে ভাল। এতে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে, আলস্যও কাটবে।
দুপুরের দিকে অনেকেরই খিদে পায়। ওই সময়ে ভাজাভুজি বা চকোলেট হাতে না দিয়ে, ফ্রুট স্যালাড বা দই খাওয়াতে পারেন। বিভিন্ন রকম বাদাম, ড্রাই ফ্রুট্স রেখে দেবেন হাতের কাছে।
শিশু দুপুরের দিকে যেন পর্যাপ্ত জল খায়, দেখতে হবে। শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হলেই ক্লান্তি বাড়বে। ফলের রস বা ডিটক্স পানীয়ও খাওয়াতে পারেন।
যদি শিশুকে খুব ভোরে উঠতে হয় এবং বেলার দিকে সে ক্লান্ত বোধ করে, তা হলে ৩০ মিনিটের জন্য বিশ্রাম নিতে পারে।