ফোনে মেসেজ এলে বা নোটিফিকেশনের শব্দ হলেই, ছুটে যায় সন্তান? ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে থাকে? ফোনের নেশা যেন পেয়ে বসছে দিন দিন। হাত থেকে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেই কান্নাকাটি, চেঁচামেচি। এমন অভ্যাস দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেক অভিভাবকেরাই। ফোনের নেশা ছাড়ানো সহজ নয়। তবে সর্ব ক্ষণ ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করা থেকে কী ভাবে সন্তাকে দূরে রাখবেন, তার কিছু কৌশল জেনে রাখা ভাল।
ছোটদের মোবাইল-নির্ভরতা বাড়ছে। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই নিয়ে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে। বলা হয়েছে, ছোটদের মধ্যেও নোমোফোবিয়া বাড়ছে। মোবাইল আসক্তি চরম সীমায় পৌঁছলে, এমন মানসিক স্থিতি তৈরি হয়। অর্থাৎ মোবাইল ছাড়া একটি দিনও থাকা যায় না। হাতের কাছে মোবাইল না থাকলেই আতঙ্ক শুরু হয়, এমনকি ফোনে কোনও কল না দেখতে পারলে বা মেসেজ না দেখে থাকলে, তা নিয়ে প্যানিক অ্যাটাকও হয়। সমীক্ষা বলা হচ্ছে, দেশের কমবয়সিদের মধ্যে এই নোমোফোবিয়ার হার বেড়ে ৭০-৮০ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। অতিমারী পর্বে লকডাউন চলাকালীন এই আসক্তি আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে নেশা কমাবেন?
ফোনের ইন্টারনেট বেশ কিছু সময় বন্ধ রাখুন। সন্তান যেন তা চালু করতে না পারে, তা দেখুন। প্রয়োজন হলে বাড়ির ওয়াইফাই সংযোগও বন্ধ রাখুন বেশ অনেকটা সময়ের জন্য।
সন্তান যেখানে বসে পড়াশোনা করে সেই জায়গায় বা বিছানার কাছাকাছি ফোন চার্জ দেবেন না। দূরে কোথাও ফোন চার্জ দিন। চার্জের সময়ে ফোন বন্ধ রাখুন বা সাইলেন্ট করে দিন। এতে ফোনে মেসেজ এলে বা নোটিফিকেশন ঢুকলে তার শব্দ শোনা যাবে না।
টানা এক মাসের জন্য একটি পরীক্ষা করে দেখুন। ফোনের জন্য যে সময়টুকু লাগে, সেই সময়টা অন্য কাজে ব্যবহার করুন। ওই সময়টাতে গাছের পরিচর্যা করতে দিন সন্তানকে, কিংবা ঘর গোছানোর দায়িত্ব দিন। টুকিটাকি রান্না করা শেখান অথবা মিউজিক চালিয়ে শরীরচর্চা অভ্যাস করান। যে কোনও রকম ভাবেই, ওই সময়টা আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে খুদের কাছে। তা হলেই মন অন্য দিকে থাকবে।
খুব বেশি অ্যাপ ফোনে রাখবেন না। ভিডিয়ো গেমের সংখ্যা কমিয়ে দিন। অনলাইনে ভিডিয়ো গেমে সাইবার প্রতারণার আশঙ্কা থাকে। সেগুলি ব্লক করে রাখুন।
মজার ছলেই ‘ফোন-ফ্রি জ়োন’ তৈরি করুন। সেই জায়গাটিতে শুধু সকলে মিলে বসে গল্প করুন বা বই পড়ুন। তা হলে সন্তানেরও অন্য রকম অভিজ্ঞতা হবে।