শীত হোক বা গ্রীষ্ম, কাজের চাপ থাক বা আয়েস করার মেজাজে থাকুন কেউ, এক কাপ ধূমায়িত কফি নিমেষে শরীর-মস্তিষ্ক চাঙ্গা করে তুলতে পারে। কফিতে থাকা ক্যাফিন ক্লান্তি কাটিয়ে, শরীর চনমনে করে তুলতে পারে। আবার হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এর ভূমিকা আছে।
তবে ক্যাফিন সামান্য পরিমাণ শরীরে গেলে তার যেমন উপকারিতা, তেমনই কাপ কাপ কফি খেলে ক্ষতি হতে পারে শরীরের। বড় এক কাপ কফিতে ১১৩ থেকে ২৪৭ মিলিগ্রাম ক্যাফিন পাওয়া যায়। কিন্তু এক কাপ কফিতে তো দিন কাটে না! বিশেষত যাঁদের ঘন ঘন কফি খাওয়ার অভ্যাস।
সচেতন ভাবে ক্যাফিনের পরিমাণ কমাতে ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ডিক্যাফিনেটেড কফি’।
বিষয়টি কী?
‘ডিক্যাফিনেটেড কফি’ বলতে পুরোপুরি ক্যাফিনহীন কফি বোঝায় না, বলছেন পুষ্টিবিদ শ্রুতি কে ভরদ্বাজ। তবে অন্তত ৯৭ শতাংশ ক্যাফিন কমিয়ে দেওয়া হয়। কফি বিন্ থেকে নানা উপায়ে ক্যাফিন বার করে দেওয়া হয়। ‘সুইস ওয়াটার প্রসেস’-সহ একাধিক পদ্ধতি রয়েছে এ জন্য।
ডি-ক্যাফিনেটের কফির উপকারিতা
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস: সিংহভাগ ক্যাফিন বাদ চলে গেলেও ডিক্যাফ কফিতে ফিনোলিক এবং ক্লোরোজ়েনিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। ক্ষতিকর উপাদান, ফ্রি র্যাডিক্যালসের হাত থেকে কোষকে রক্ষা করতে সাহায্য করে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস।
আরও পড়ুন:
অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স: ঘন ঘন কফি খেলে অনেকেরই হজমের সমস্যা হয়। শরীরে জলশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। ক্যাফিনের জন্য অম্বলের সমস্যা হয় কারও কারও, বলছেন পুষ্টিবিদেরা। সে ক্ষেত্রে কালো কফির তুলনায় স্বল্প পরিমাণে ক্যাফিন থাকা কফি উপকারী।
ঘুম: কালো কফিতে থাকা ক্যাফিন ঘুমের জন্য জরুরি অ্যাডিনোসাইন নামক রাসায়নিক উপাদানকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই উপাদান কমে গেলে ঘুমের সমস্যা হয়। সে কারণে সন্ধের পর কফির কাপে চুমুক দিতে হলে ডিক্যাফিনেটেড কফি বেছে নেওয়া ভাল।
এ ছাড়াও হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে, উদ্বেগ কমাতে এবং শরীর তরতাজা রাখতেও এই কফি উপকারী।
কী ভাবে বানাবেন এমন কফি?
বাজারে যেমন রোস্টেড কফি বিন, গ্রিন কফি বিন পাওয়া যায়, তেমনই আলাদা ভাবে ডিক্যাফিনেটেড কফিও পাওয়া যায়। সরাসরি বিন্স কিনে যন্ত্রের সাহায্য তা গুঁড়িয়ে গরম জলে মিশিয়ে কফি বানাতে পারেন। আবার সরাসরি গরম জল বা দুধে মিশিয়ে খাওয়ার মতো ‘ইনস্ট্যান্ট’ কফিও মেলে। গরম জলে বা গরম দুধে কফি মিশিয়ে, স্বাদমতো চিনি দিয়ে বা চিনি ছাড়া তা খাওয়া যায়। স্বাস্থ্য এবং ক্যালোরির দিকে নজর দিলে, চিনি এবং দুধ বাদ দেওয়া ভাল। তবে ডিক্যাফিনেটেড হলেও, দু-তিন কাপের বেশি তা না খাওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা।