তিনি বিশ বছর আগে যেমন ছিলেন এখনও সেই রকম। ‘কাল হো না হো’-র প্রিটি উওম্যান আর আজকের প্রীতি জ়িন্টার মধ্যে তফাত খুঁজতে হলে আতসকাচ নিয়ে বসতে হবে। অথচ গত বিশ বছরে তাঁর জীবনে বদলেছে অনেক কিছুই। প্রেম ভেঙেছে, নতুন প্রেম এসেছে, বিয় করেছেন, বিদেশ থিতু হয়েছেন, এখন তিনি দুই সন্তানের মা আবার তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সামলান আইপিএল দলের দায়িত্বও। অথচ এখনও তিনি পর্দায় এলে তাঁকে দেখে একই রকম ভাল লাগে। কে বলবে, ‘ইটস দ্য টাইম টু ডিস্কো’র তালে পর্দায় সাড়া ফেলে দেওয়া ২৮ বছরের সেই নায়িকা এখন ৫০ পেরিয়েছেন। ত্বকে এখনও টান টান ভাব, গালে একই রকম টোল পরে, চেহারাও আগের মতোই ছিপছিপে বরং ইদানীং তাঁকে দেখলে আরও বেশি ফিট মনে হয়!
প্রীতি অবশ্য বরাবরই বলেছেন, তাঁর ফিটনেসের চাবিকাঠি লুকিয়ে শরীরচর্চায়। সে ব্যাপারে তিনি কোনও দিনই কোনও রকম কসুর করেন না। নিজের তৈরি কড়া শৃঙ্খলা মেনে চলেন। তার সুফলও যে হাতেনাতে পান, তা দেখলেই বোঝা যায়। সেই প্রীতিই এ বার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে পরামর্শ দিলেন কর্পোরেটের সংস্কৃতির জাঁতাকলে পড়ে স্বাস্থ্যের ‘বারোটা বাজা’ এ কালের কর্মীদের। ইনস্টাগ্রামে তাঁর একটি শরীরচর্চার ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখলেন, এই ব্যায়ামটি তাঁদের জন্য, যাঁদের দিনের অধিকাংশ সময়েই চেয়ার বসে কাটে।

কে বলবে, ‘ইটস দ্য টাইম টু ডিস্কো’র তালে পর্দায় সাড়া ফেলে দেওয়া ২৮ বছরের সেই নায়িকা এখন ৫০ পেরিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
দিনের একটা বড় সময় চেয়ারে বসে কম্পিউটারের পর্দায় তাকিয়ে থেকেই কেটে যায় কর্পোরেট জগতের কর্মরতদের। ফল— প্রায়ই কোমর থেকে পায়ের পেশিতে ব্যথা। যন্ত্রণার চোটে রাতে ঘুমোনোর সময় বিছানায় সোজা হয়ে শুতেও পারেন না অনেকে। এই ধরনের সমস্যা ইদানীং এতটাই বেড়েছে যে, চিকিৎসকেরাও প্রায়শই বলছেন, একটানা বসে না থেকে আধঘণ্টা অন্তর অন্তত মিনিট পাঁচেকের জন্য পায়চারি করে নিতে। প্রীতি আরও এক ধাপ এগিয়ে বললেন, একটি বিশেষ ব্যায়াম নিয়মিত করলে, কোমর, নিতম্ব, ঊরু এবং পায়ের পেশি ভাল থাকে। অল্প বয়সে কোমরে পায়ে ব্যথা বা টান ধরার মতো সমস্যা হবে না।
প্রীতি কী ধরনের শরীরচর্চার কথা বলছেন?
ভিডিয়োয় প্রীতিকে দেখা যাচ্ছে একটি এক্সারসাইজ় করার বল, যাকে ‘স্টেবিলিটি বল’-ও বলা হয়, তার উপর পা রেখে শরীরচর্চা করতে। বিবরণে তিনি লিখেছেন, ‘‘যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করেন, তাঁদের জন্য এটি একটি দারুণ এক্সারসাইজ়।’’ শরীরচর্চার প্রশিক্ষক দীপিকা শর্মা বলছেন, প্রীতিকে যে ব্যায়াম করতে দেখা যাচ্ছে, তাকে বলা হয় ‘গ্লুট ব্রিজ় উইথ স্টেবিলিটি বল’।

মেয়েদের ৪০ বছর বয়সের পর এই ব্যায়াম ফিটনেসের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং উপকারীও। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কী ভাবে করতে হয় ওই ব্যায়াম?
দীপিকা জানাচ্ছেন মসৃণ সমতলে শুয়ে প্রথমে পা দু’টি স্টেবিলিটি বলের উপর রাখতে হবে। বল যেন হাঁটুর সামান্য নীচের অংশ থেকে ছুঁয়ে থাকে। এর পরে কাঁধের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশটা উঁচু করে একটি সরলরেখায় নিয়ে আসতে হবে। যাতে মাটির সঙ্গে আপনার অবস্থান ৩০-৪০ ডিগ্রি কোণে থাকে। এ বার ওই অবস্থাতে থেকেই গোড়ালির সাহায্যে বলটিকে টেনে কোমরের কাছে নিয়ে আসতে হবে তার পরে একই ভাবে আবার ঠেলে দিতে হবে।
এই ব্যায়ামের উপকারিতা কী?
দীপিকা জানাচ্ছেন, এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে কোমর, নিতম্ব, হ্যামস্ট্রিং এবং তলেপেটের নীচের অংশের পেশির শক্তি বৃদ্ধি হয়। মেরুদণ্ডের নমনীয়তাও বৃদ্ধি পায়। ফিটনেস প্রশিক্ষক দীপিকা বলছেন, মেয়েদের ৪০ বছর বয়সের পর এই ব্যায়াম ফিটনেসের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং উপকারীও।