কথাতেই আছে ‘আপনা হাত জগন্নাথ’! নিজের দু’টি হাত থাকতে পরের হাতের ভরসা করবেন কেন?
কিন্তু হাতে তো জোরই নেই! ভারী কিছু বইতে পারেন না। ঘাড়ে, কাঁধে ব্যথা হয়। হাতের মুঠোতেও বিশেষ জোর নেই। বেশি ক্ষণ কিছু ধরে রাখতে পারেন না। ভেজা তোয়ালে নিঙড়ে ছাদে মেলে দেবেন, তার জন্যও অন্য কারও উপর ভরসা করতে হয়। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, আসনের মাধ্যমেই এই সমস্যা আসান হতে পারে। তবে এই আসনটি খুব সহজ, সাধারণ নয়। হাতের জোর বাড়িয়ে তুলতে, দেহের ‘ব্যালান্স’ ধরে রাখতে হলে নিয়মিত অভ্যাস করতে হবে বকাসন।
বকপাখির নাম অনুসারে এই আসনের নামকরণ করা হয়েছে। অনেকে আবার এই আসনটিকে কাকের সঙ্গে তুলনা করেন। তাই এটি ‘কাকাসন’ নামেও পরিচিত। ইংরেজিতে এই ভঙ্গির নাম ‘ক্রেন পোজ়’ বা ‘ক্রো পোজ়’। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, আসনের এই ভঙ্গিটির সঙ্গে বক বা কাকের শরীরের বিশেষ মিল রয়েছে। শিখে নিন পদ্ধতি।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
- প্রথমে ম্যাটের উপর উবু হয়ে বসুন। দু’টি হাঁটুর মধ্যে যেন যথেষ্ট ব্যবধান থাকে
- এ বার দু’টি হাতের তালু রাখুন মাটিতে। পায়ের পাতা থেকে ৫-৬ ইঞ্চি দূরে রাখবেন। কাঁধ যতটা চওড়া, হাত দু’টির মধ্যে ততটাই ব্যবধান থাকবে।
- এ বার পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে গোটা শরীরটা ধীরে ধীরে টেনে সামনের দিকে নিয়ে আসুন।
- হাতের পাতার উপর গোটা শরীরের ভার বহন করতে হবে। পায়ের আঙুল মাটি স্পর্শ করে রাখুন।
- এ বার ধীরে ধীরে মাটি থেকে পায়ের পাতা দু’টি উপরের দিকে তুলে ধরুন। গোটা শরীরের ভার থাকবে দু’টি হাতের উপর। বাহুমূল এবং কাঁধের পেশি রাখতে হবে টান টান করে।
- এই অবস্থান ধরে রাখুন পাঁচ সেকেন্ড। চাইলে দশ সেকেন্ডও থাকতে পারেন এই ভাবে। তার পর আবার আগের ভঙ্গিতে ফিরে আসুন।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
নিয়মিত এই আসন অভ্যাস করলে শুধু হাত বা কাঁধ নয়, বরং দেহের উপরিভাগের প্রায় সব ক’টি পেশিই মজবুত হয়। একাগ্রতা বাড়ে। হাঁটু, পিঠ, কোমর, মেরুদণ্ডের পেশির নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়।
সতর্কতা:
কব্জিতে চোট-আঘাত লেগে থাকলে এই আসন করা যাবে না। নিতম্ব, ঊরু বা কাঁধে কোনও সমস্যা থাকলে বকাসন অভ্যাস না করাই ভাল। যাঁদের কার্পল টানেল সিনড্রোম, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, স্পনডিলাইটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য এই আসন নিষিদ্ধ।