ন্যাদস না বলেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল অন্য মহিলার খোঁজে!
সেই নিয়ে সোহিনীর মন খারাপ।
‘খুব আপসেট ছিলাম লাস্ট দু দিন। বাড়ি ফিরে ওর গায়ের ঘষা না খেলে আমার তো ওটসই হজম হয় না,’ মিষ্টি হেসে কফির অর্ডার দিলেন ‘ফড়িং’-এর মাস্টারনি।
কিন্তু কে এই ন্যাদস?
‘আমার বিড়াল’-সিগারেটের ধোঁয়া ছড়িয়ে ছোট্ট ফ্রক আর কাজল ভরা চোখে সোহিনী হাসলেন।
বয়স-২৬, উচ্চতা- ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, ওজন- ৫৭ কেজি, গায়ের রং ফর্সা, শরীরে মেদ চোখে পড়ে না।
চুমু থেকে সেক্স অ্যাপিল
খড়দার মায়াপীঠ আশ্রম আর ব্যারাকপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজের এই মেয়েকে নিয়ে ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রি সরগরম। কলকাতার ফ্ল্যাটে তিনি নাকি একা থাকেন, তার নাকি অগুনতি বয়ফ্রেন্ড! ‘ফড়িং’-এর পরেই নাকি তার সেক্স অ্যাপিল বেড়েছে?
প্রশ্ন ছুড়তেই উত্তর এল ঝটপট!
“বরাবরই আমি আমার সেক্স অ্যাপিল নিয়ে কনফিডেন্ট। আসলে যারা এত দিন এই বিষয় নিয়ে কনফিডেন্ট ছিলেন না, তাঁরা ‘ফড়িং’ দেখে সেটা বুঝতে পেরেছেন। প্রথম যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি সকলে বলেছিল আমি যে একা ফ্ল্যাটে থাকি সেটা সবাইকে না জানাতে, বলতে আমি মামার বাড়িতে থাকি। আপনি বলুন মামাই যেখানে নেই আমার, সেখানে মামার বাড়ি কী করে বানাই? হ্যাঁ আমি একা থাকি, ছোট পোশাক পরি কারণ আমায় তা মানায়। আর সিগারেটও খাই। তো? কোনও পুরুষ অভিনেতা সম্পর্কে তো এমন কৌতূহল দেখানো হয় না?”
আসলে শরীর নিয়ে কোনও বাতিক নেই ক্লাস সেভেন-এ প্রথম চুমু খাওয়া অতনু ঘোষের ‘রূপকথা নয়’-এর এই নায়িকার। বললেন, ‘আজ যদি কোনও তামিল পর্ন স্টারের ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য আমায় বিকিনি পরতে বলা হয় সেটা নিয়ে আমি ততটা না ভাবলেও, মুম্বইয়ের মডেলের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য বিকিনি পরতে হলে আমি আরও একটু ওয়েট লুজ করতে চাইব’।
আর চুমু খাওয়ার দৃশ্য হলে? শুনেছি ঋত্বিক চক্রবর্তী ছবিতে চুমু খেতে চান না!
‘‘এ বাবা! তাহলে ঋত্বিকদাকে তো চুমু খাওয়াই হল না। চরিত্র ভাল হলে চুমু খাওয়া যেতেই পারে।
তবে ভাল চরিত্র পাওয়ার জন্য কিন্তু পরিচালককে চুমু খেতে পারব না। ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা কাজের মানুষ তাঁরা ভাল কাজ দেওয়ার বিনিময়ে কিন্তু চুমু খেতে চান না।”
সিরিয়াল থেকে সিনেমায়
‘একদিন প্রতিদিন’-এর মেগা সিরিয়ালে ত্যাঁদড় নেশা করা মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করার পর থেকে সোহিনীকে সকলে চিনতে আরম্ভ করে। মাঝে চলতে থাকে নাটক করা। দেবেশ রায় চৌধুরীর ট্রেনিং-এর কথা আজও ভোলেননি সোহিনী। মেগা সিরিয়ালের একটানা ব্যস্ততায় ‘আমি আদু’ ছবিতে অভিনয়ের অফারটাই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বললেন, ‘সত্যি ওটা নিয়ে আজও মন খারাপ করে।’ এর পর ‘অদ্বিতীয়া’ সিরিয়ালে নায়িকা চরিত্রের অফার আসে। সোহিনী বললেন, “দারুণ ভাল লেগেছিল বুম্বাদার ফোন পেয়ে। এমন চুটিয়ে অভিনয় করেছিলাম যে আমার অভিনয় দেখে বুম্বাদা তো বলেই ফেলেছিলেন, ‘ওরে লড়কে লেঙ্গে মনোভাবটা ছাড়। তুই যদি সবই করে দিস তবে নায়ক কী করবে রে?’” এর পরেই ‘ফড়িং’-এ অভিনয়ের ডাক আসে। পরিচালক ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখে নিয়েছিলেন সোহিনী। আর সেই শেখাটাই বোধ হয় অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এ অভিনয়ের সময় কাজে লেগে গিয়েছিল। কেমন লাগল সেই বায়োস্কোপে কাজ করে? ‘‘দারুণ! মনে হয় ছবিতে অনিন্দ্যদাকেই যেন খুঁজে পাচ্ছি,” বললেন সোহিনী।
শোভন তরফদারের ছবি ‘সেলফি’ আর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঝুমুরা’তে অভিনয় করেও তিনি উচ্ছ্বসিত।
আলিয়া ভট্ট থেকে শাবানা আজমি
সমসাময়িক নায়িকাদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন? ইচ্ছে করে না মিমির মতো দেবের সঙ্গে অভিনয় করতে?
“দেবের সঙ্গে নাচতে তো ভালই লাগবে তবে গানের মধ্যে যেন বাঙালিয়ানা থাকে। নায়িকা কেবলমাত্র নায়কের পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে এমন দৃশ্য আমার না-পসন্দ। ‘বসন্ত বিলাপ’-এর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাচটা ভাবুন... উফফ!! আর হিংসে? ধুর! পার্নোর ‘অপুর পাঁচালী’ দেখে মনে হয়েছিল এই চরিত্রটা আমি পেলে কী কী করতাম। পার্নোর সঙ্গে দেখা হতেই জানতে চেয়েছিলাম এই চরিত্রটার জন্য ও নিজেকে কী ভাবে তৈরি করেছিল। ভাল অভিনয় করার মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা তো থাকেই। কিন্তু এটাকে নিশ্চয়ই হিংসে বলবেন না,” বলেন সোহিনী।
যত ব্যস্ততাই থাক আলিয়া ভট্টের ছবি সোহিনী কোনও দিন মিস করেননি। তবে অভিনেত্রী হিসেবে স্বপ্ন দেখেন শাবানা আজমির ‘মান্ডি’-র মতো চরিত্রে অভিনয় করার। আর দীপিকা পাড়ুকোনের মতো সেক্সি হওয়ার অদম্য ইচ্ছেয় সোহিনী নিজেকে যোগা, ওটস আর টক দইয়ের কড়া ডায়েটের মধ্যে বেঁধে ফেলেছেন। তবে কখনও বন্ধু-আড্ডায় ফিশ ফ্রাইয়ে কামড় বসাতেও ভোলেন না তিনি।
বয়ফ্রেন্ড, রণবীর কপূর আর ইরফান খান
এত খোলামেলা সোহিনী কিন্তু কিছুতেই বয়ফ্রেন্ডের নাম নিতে চাইলেন না। যদি তাঁর পরবর্তী বয়ফ্রেন্ড বর্তমান বয়ফ্রেন্ডের নামটা জেনে যান। ইদানীং বয়ফ্রেন্ডকে খুব বেশি সময় দিয়ে উঠতে পারছেন না। কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের লেখা নাটকে অভিনয় করছেন বলে। রাতদিন সেটার পেছনে পড়ে আছেন। আচ্ছা, বয়ফ্রেন্ড রেগে যাচ্ছেন না? “না ও চায় আমি ব্যস্ত থাকি। ও জানে আমার কাছে সিরিয়াল, নাটক, সিনেমা সব সমান। একেকটা একেক রকম নয়। যে ফিল্ডেই হোক কাজটা ভাল লেগে গেলে আমি আমার পুরো সময়টা ওখানেই দিয়ে দিই।” ঘুমকাতুরে, ইচ্ছে মতো নিজের জীবন চালানো এই মেয়ে ‘রকস্টার’ দেখার পর রণবীর কপূরের জন্য পাগল।
আর স্বপ্নের ডেটিংটা কার সঙ্গে? এই প্রথম যেন লজ্জা পেলেন সোহিনী। ঝিলিক খেলে গেল তাঁর সুঠাম শরীরে। বললেন, ‘ইরফানের(খান)সঙ্গে স্বপ্নের ডেটিংয়ে যেতে চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy