ম্যানহাটনের ৭৬৭ ফিফ্থ অ্যাভিনিউয়ের সামনে আজ থেকেই তো লোক তাঁবু খাটাতে শুরু করেছে। আর করবে না-ই বা কেন? ওটাই তো নিউ ইয়র্কে অ্যাপল স্টোরের ঠিকানা।
কারণ? অ্যাপলের অফিশিয়াল অ্যানাউন্সমেন্ট ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ নিয়ে শুধু পাঁচটা শব্দ: ‘উইশ উই কুড সে মোর’।
তাই অ্যাপলের বহু প্রতিক্ষিত আইফোন ৬-এর রিলিজ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। সেই সঙ্গে নতুন সেই ফোনের হাজারো ‘লিক্ড’ ছবি। এটাই অ্যাপলের স্টাইল সাসপেন্সের মাধ্যমে বিপুল উৎসাহ তৈরি করা। তবে আগের সব প্রোডাক্ট লঞ্চের মতো এ বারও আশা করা যায় যে, বেশির ভাগ গুজবই সত্যি হবে।
তা কী সেই গুজবগুলো?
• বেশির ভাগ আইফোন বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মত যে, মূলত তিনটে আইফোন ৬ প্রোডাক্ট আশা করা যেতে পারে। ৪.৭ ইঞ্চি স্ক্রিনের আইফোন ৬, ৫.৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের আইফোন ৬ ‘ফ্যাবলেট’ (ফোন ও ট্যাবলেটের মিশ্রণ যা সবাই আজকাল পছন্দ করছে), ও এই দু’টোকে ম্যাচ করা প্রথম ও বহু প্রত্যাশিত আইওয়াচ। এর সঙ্গে থাকবে নতুন আরও মসৃণ ডিজাইন, অ্যাপলের নতুন অপারেটিং সিস্টেম আইওস ৮ এবং আমাদের ছবি -ভিডিয়োর জন্য অনেক বেশি স্টোরেজ। শোনা যাচ্ছে একটা ১২৮ জিবি ভার্সনও থাকবে।
• স্ক্রাচ ও ভেঙে যাওয়ার ভয়ে আমরা সবাই কেস ও নানা অ্যাকসেসরির উপর বহু খরচা করি। বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে জানা যাচ্ছে যে আইফোন ৬ আসছে স্যাফায়ার গ্লাসের সঙ্গে, যা ভার্চুয়ালি স্ক্র্যাচপ্রুফ ও আনব্রেকেবল। হিরে ছাড়া স্যাফায়ারের উপর দাগ ফেলা যায় না। তবে এই দামি ও উচ্চমানের স্যাফায়ার গ্লাস ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা শোনা যাচ্ছে।
• আমার মতে, এর চেয়েও আকর্ষণীয় একটা বৈশিষ্ট্য আসছে, যেটাতে অ্যাপল এত দিন অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল, যার নাম এনএফসি নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন। দোকানে মোবাইল দিয়ে পেমেন্ট এবং বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে গান ও ছবি শেয়ার করা যায় শুধুমাত্র এই এনএফসি প্রযুক্তির মাধ্যমে। ভারতের মতো দেশে যেখানে ক্রেডিট কার্ডের প্রচলন কম ও মোবাইলের প্রচলন বেশি, সেখানে এই মোবাইল পেমেন্টের প্রভাব অপরিমেয়।
• স্টিভ জোবসের নেতৃত্বে অ্যাপল ছিল টেকনোলজি জগতের পথিকৃৎ, মোবাইল ফোনের নতুন বৈশিষ্ট্যর চিরঅগ্রদূত। অ্যাপলের নতুন কর্ণধার টিম কুক কি সেটা বজায় রাখতে পারবেন এটাই বিগত দু’ বছরে বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যাপলের আইওস ৮ অপারেটিং সিস্টেমও আসছে একই সঙ্গে। এর ফলে অ্যান্ড্রয়েডের দৌরাত্ম্য খানিকটা কমাতে পারবে অ্যাপল। অ্যাপল ব্যবহারকারীদের কাছে এর প্রভাব বহুমুখী আইপ্যাডে কল স্ক্রিন করে আইফোনে উত্তর দেওয়া যাবে। যে কোনও অ্যাপেল ডিভাইসে মেল লিখতে শুরু করে অন্য একটা ডিভাইসে শেষ করা যাবে। ও ধীরে ধীরে ১০ ইঞ্চি আইপ্যাড ও ৪ ইঞ্চি আইফোন-এর একাত্মীকরণ হবে ৫.৫ ইঞ্চির আইফোন ফ্যাবলেটে। দু’-তিনটে গ্যাজেট বয়ে নিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা লাঘব করবে এই ফ্যাবলেট। তবে এই উল্লিখিত আইফোন ৬-এর কোনওটাই মোবাইল জগতে নতুন নয়। স্যামসুং, নোকিয়া, এইচটিসি ও অন্য অনেক অ্যান্ড্রয়েড ও উইনডোজ স্মার্টফোনে এই বৈশিষ্ট্যগুলোর সূচনা আগেই হয়েছে।
তাহলে অ্যাপল কি নতুন গ্রাহক অর্জন করতে পারবে আইফোন ৬-এর মাধ্যমে? না কি শুধুমাত্র এখনকার গ্রাহকদেরই খুশি রাখার চেষ্টা করবে?
আমার মতে কোনও নতুন প্রযুক্তি বা গ্যাজেট কতটা সফল ও জনপ্রিয় হবে তার সবচেয়ে ভাল ইঙ্গিত পাওয়া যায় খুব কম বয়সের তরুণ-তরুণীদের হাতে সেটা দিয়ে অবসার্ভ করলে। বছরখানেক আগে আমার বারো বছরের মেয়েকে দেখি তার প্রিয় আইফোন থেকে নতুন উইনডোজ ফোনে সুইচ করতে। গত এক বছরে উইনডোজ ফোনের গুণগান রোজই শুনি। তাই নতুন আইফোন ৬-এর ফিচার ইত্যাদির উপর অনেক আর্টিকেল ওকে ক’দিন ধরে পড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম, ‘অ্যাপলের আশানুযায়ী এ বারের ক্রিসমাস গিফ্ট রিকোয়েস্ট কি আইফোন ৬ হতে পারে?’ আজ সকালে আমায় বলে গেল, “ড্যাডি, আমি তো আইফোনে ফেরত যাওয়ার মতো কিছু পেলাম না।”
অ্যাপলের নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ চিরকালই সেপ্টেম্বর মাসে হয়। তবে এ বার টাইমিং নিয়েও কিছু কোলাহল শোনা যাচ্ছে। তা মূলত একটা কারণে কিছু দিন আগে অ্যাপলের আইক্লাউড ‘হ্যাক্ড’ হয়ে যায় ও বহু সেলিব্রিটির ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবে অ্যাপলের সতর্কতা ও প্রযুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আইফোন ৬ আইক্লাউডকে আরও বেশি করে ব্যবহার করবে বিগত মডেলগুলোর চাইতে। তাহলে কি আইফোন ৬ হলিউড তারকাদের থেকে সেই ‘রিসাউন্ডিং এনডোর্সমেন্ট’ পাবে না?
কালকের পরেই তো পাওয়া যাবে এই সব প্রশ্নের জবাব...
টুইটপিক্স
নতুন লুক: এক ফোটোশ্যুটে সোনাক্ষী সিংহ
আনাচে কানাচে
ফেলুদার সঙ্গে বাবুদা: সন্দীপ রায়-আবির চট্টোপাধ্যায়। ফেলুদা সিরিজের নতুন ছবির ডাবিংয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy