হ্যারি স্টাইল্সের নাম যখন ‘ডানকার্ক’ ছবির জন্য শোনা গিয়েছিল, অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ছবিতে কিনা ‘ওয়ান ডিরেকশন’ ব্যান্ডের গায়ক! পরিচালক যে ভুল করেননি, সেটা ট্রেলার থেকেই স্পষ্ট। সোশ্যাল মিডিয়া তাঁর ক্ষণিক দর্শনেই মোহিত। অভিনয়ের জন্য আত্মত্যাগও কম করেননি হ্যারি। সাধের লম্বা চুলও কেটে ফেলেছিলেন ‘ডানকার্ক’-এর জন্য।
হ্যারি অবশ্য প্রথম নন। গায়ক থেকে অভিনেতা হওয়ার তালিকাটা বেশ লম্বা।
ম্যাডোনা
পপ গানের জগতে ম্যাডোনা অবিসংবাদী সম্রাজ্ঞী। তবে নিজেকে শুধু গানে আটকে রাখেননি ম্যাডোনা। প্রায় চব্বিশটা সিনেমায় অভিনয় করে ফেলেছেন তিনি। টম হ্যাঙ্কসের সঙ্গে ‘আ লিগ অব দেয়ার ওন’, ডাস্টিন হফম্যানের সঙ্গে ‘ডিক ট্রেসি’। আর অবশ্যই ‘বডি অফ এভিডেন্স’। ‘এভিটা’ ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করে গোল্ডেন গ্লোব-ও পেয়েছিলেন। তবে ২০০২-এর পর আর তাঁকে প্রধান কোনও চরিত্রে দেখা যায়নি। শেষ ছবিতে সমালোচকদের বিরূপ সমালোচনা নাকি মেনে নিতে পারেননি ম্যাডোনা।
সেলেনা গোমেজ
সেলেনা গোমেজকে অবশ্য গায়িকা থেকে অভিনেত্রী বললে অর্ধেক বলা হবে। গায়িকা হিসেবে কেরিয়ার শুরু করলেও টেলিভিশন, সিনেমা, ডকুমেন্টারি... কোথায় নেই তিনি! আর অভিনয় ক্ষমতায় তিনি প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রীদেরও চাপে ফেলতে পারেন। ‘স্প্রিং ব্রেকার্স’ আর ‘দ্য বিগ শর্ট’-এর পর নেটফ্লিক্সের ‘দ্য ফান্ডামেন্টালস অব কেয়ারিং’ সিনেমায় বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর অভিনয় দক্ষতা। তবে অভিনয়ের প্রতি টান তাঁর ছোট থেকেই। বড় ব্যানার নয়, ছোট ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবির প্রতিই তাঁর ঝোঁক বেশি। সদ্য এক সাক্ষাৎকারে সেলেনা বলেছেন, ‘‘গানের ক্ষেত্রে আমি জানি, আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। কিন্তু অভিনয়ের ব্যাপারে আমি প্রায় কিছুই করিনি। এখনও অনেক কিছুই করা বাকি রয়েছে।’’
জাস্টিন টিম্বারলেক
জাস্টিন টিম্বারলেক সবার নজরে আসেন ‘দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক’ ছবিতে। সিন পার্কারের ভূমিকায় টিম্বারলেক বুঝিয়ে দেন শুধু পপ গানে আটকে থাকার পাত্র তিনি নন। বক্স অফিস সফল অনেক ছবিতেই অভিনয় করেছেন তিনি। ‘ব্যাড টিচার’, ‘ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস’, ‘ইন টাইম’ তার মধ্যে অন্যতম। অনেকে বলেন, অভিনয় নিয়ে এতটাই মেতে আছেন জাস্টিন যে, গানের জন্য এখন আর সময় বের করতে পারছেন না। ২০১৩ সালে ‘দ্য টোয়েন্টি/টোয়েন্টি এক্সপেরিয়েন্স’-এর পর কোনও অ্যালবাম রিলিজ হয়নি তাঁর।
জেনিফার লোপেজ
তাঁর ফিল্মোগ্রাফিও বেশ লম্বা। এক সময় হলিউডে সব থেকে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের তালিকারও প্রথম স্থানটা ছিল জেনিফার লোপেজের দখলে। পাঁচ বছর বয়স থেকে গান আর নাচের প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন জেলো। গানের জগতে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে না করতেই প্রবেশ হলিউডে। মাত্র ষোলো বছর বয়সে প্রথম ছবি ‘মাই লিটল গার্ল’। তার পর তো জনপ্রিয় ‘সেলেনা’ বা ‘আউট অব সাইট’ আছেই। শুধু বড় পরদা নয়, ছোট পরদাতেও জেলো-র জনপ্রিয়তা অপ্রতিরোধ্য। ‘আমেরিকান আইডল’ হোক কি ‘হাউ আই মেট ইয়োর মাদার’ টিভি সিরিজে গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স, জেনিফার লোপেজ মানেই টিআরপি মাত্রা ছাড়া।
রিহানা
এ প্রজন্মের গায়িকা থেকে অভিনেত্রী হওয়ার তালিকায় ব্যস্ততম নামটা নিঃসন্দেহে রিহানার। সিনেমা আর টিভি সিরিজ মিলিয়ে এ বছর তিনটে কাজ তাঁর হাতে। পরের বছরের জন্যও পুরো ‘বুকড’। প্রথম মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় ২০১২-র ‘ব্যাটেলশিপ’ ছবিতে। বক্স অফিসে মাঝারি চললেও চিত্র সমালোচকদের নিন্দার মুখেই পড়তে হয়েছিল তাঁকে। দর্শকদের অবশ্য মন্দ লাগেনি রিহানাকে। অনেকের মতে, চিত্রনাট্য বাছাইয়ে ভুল করেছিলেন। সমালোচনায় দমে যাননি,
গানের পাশাপাশি অভিনয়কে আঁকড়ে ধরার সিদ্ধান্ত যে ঠিকই নিয়েছিলেন, তার প্রমাণ ‘বেটস মোটেল’। সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন জনপ্রিয় এই টিভি সিরিজে আবির্ভাবের একেবারে সঙ্গে সঙ্গেই।
হলিউডের এই ধারার সঙ্গে অবশ্য বলিউডকে মেলানো যাবে না। কিশোরকুমার ছাড়া কোনও গায়ক সফল নায়ক হয়েছেন, এমন উদাহরণ সহজে মিলবে না। সোনু নিগম, লাকি আলি, অভিজিৎ সাওয়ন্ত, হিমেশ রেশম্মিয়া... সকলেই মুখ থুবড়ে পড়েছেন বক্স অফিসে। গান আর অভিনয় সমান তালে চালিয়ে যাওয়া বলতে এখন একমাত্র দিলজিৎ দোসঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy