Tanaaz Irani is happily married with her second husband Bakhtiyaar Irani dgtl
bollywood
প্রথম বিয়ের পর সমাজচ্যুত, পরে জনপ্রিয় টেলি অভিনেতাকে বিয়ে করে ঘোর সংসারী তনাজ
মা হওয়ার পরেও কেরিয়ারের স্বপ্ন মুছে যায়নি তনাজের। নবাগত তরুণী একটু একটু করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর এবং স্বামীর কাজের ব্যস্ততা সম্পর্কে ফাটল তৈরি করল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ১৫:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
তনাজ লাল, তনাজ কুরিম এবং তনাজ ইরানী। জীবনের তিন পর্বে একাধিক পরিচয়ে তাঁকে পেয়েছে বিনোদন দুনিয়া। টেলিভিশনের প্রথম সারির এই অভিনেত্রী কাজ করেছেন বড় পর্দাতেও। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনও চিত্রনাট্যের মতোই রঙিন।
০২২০
মুম্বইয়ের এক পার্সি পরিবারে জন্ম তনাজের। প্রথম বিয়ে হয়েছিল কৈশোরে। নাটকের অডিশন দিতে গিয়ে আলাপ হয়েছিল ফরিদ এবং তনাজের। সেই নাটক অবশ্য কোনওদিন মঞ্চস্থ হয়নি। কিন্তু বয়সে ১৮ বছরের বড় ফরিদের প্রেমে পড়েছিলেন তনাজ।
০৩২০
ভিন ধর্মে বিয়ে করায় তনাজকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও জীবনসঙ্গীর হাত ধরেছিলেন তিনি। বিয়ের পরে তনাজ লাল থেকে তিনি হন তনাজ কুরিম। ২০ বছর বয়সেই মাতৃত্বের স্বাদ। ফরিদ কুরিম এবং তনাজের সংসারে এসেছিল নতুন অতিথি। মেয়ের নাম তাঁরা রেখেছিলেন জিয়ান।
০৪২০
মা হওয়ার পরেও কেরিয়ারের স্বপ্ন মুছে যায়নি তনাজের। নবাগত তরুণী একটু একটু করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর এবং স্বামীর কাজের ব্যস্ততা সম্পর্কে ফাটল তৈরি করল।
০৫২০
মঞ্চশিল্পী ফরিদের সঙ্গে তনাজের বিয়ে ভেঙে যায়। তাঁদের মেয়ে এখন থাকেন বাবার সঙ্গেই। মেয়েকে কাছে না পাওয়ার শূন্যতা এখনও কষ্ট দেয় তনাজকে। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, জিয়ানকে নিজের কাছে রেখে বড় করতে চান। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আর সম্ভব নয়।
০৬২০
প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরে কিছু দিন এক জন পাইলটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তনাজের। কিন্তু সেই প্রেমও বেশ দিন স্থায়ী হয়নি।
০৭২০
বিচ্ছেদের পরে তনাজ ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন। ২০০৬ সালে ‘ফেম গুরুকুল’-এর সেটে বখতিয়ার ইরানীর সঙ্গে আলাপ হয় তনাজের। প্রথম দর্শনেই প্রেম।
০৮২০
দীর্ঘ প্রেমপর্বের পরে বিয়ের কথা ভাবতে শুরু করেন দুই কুশীলব। কিন্তু তাঁদের বিয়ের পথে অনেক বাধা ছিল। বখতিয়ারের থেকে বয়সে ৮ বছরের বড় তনাজ। তার উপর তিনি ডিভোর্সি। ফলে তনাজকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে তীব্র আপত্তি ছিল বখতিয়ারের পরিবারে।
০৯২০
শেষে বখতিয়ারের বোন অভিনেত্রী দেলনাজ বোঝান বাবা মাকে। তার পর তাঁরা সম্মতি দেন। ২০০৭ সালে বিয়ে করেন তনাজ এবং বখতিয়ার। তখন তনাজের প্রথম পক্ষের মেয়ে জিয়ানের বয়স ১৩ বছর।
১০২০
পার্সি রীতিনীতি মেনে বিয়ে হয় বখতিয়ার এবং তনাজের। ২০০৮ সালে জন্ম হয় তাঁদের ছেলে জিউস এবং ৩ বছর পরে পরিবারে আসে কন্যা জারা।
১১২০
তনাজের দ্বিতীয় দাম্পত্যের টানাপড়েন নিয়ে অনেক কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ব্যস্ত অভিনেত্রী। বরং জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিয়ে তাঁর মধ্যে অনেক পরিবর্তন এনেছে। আগে তিনি রুক্ষ ছিলেন। এখন অনেক পরিণত এবং আবেগপ্রবণ।
১২২০
দুই সন্তানের পাশাপাশি তাঁরা একে অন্যের বৃহত্তর পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারেও নিয়মিত খোঁজখবর নেন বলে জানিয়েছেন তনাজ। এই খুঁটিনাটি দিকগুলি তাঁদের সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মনে করেন তনাজ।
১৩২০
পরিবার অন্ত প্রাণ তনাজ সমান সক্রিয় কেরিয়ার নিয়েও। ২০০২ সালে মিসেস ইন্ডিয়ার চূড়ান্ত পর্বের এক জন প্রতিযোগিনী ছিলেন তিনি। নয়ের দশকে ‘জবান সামহাল কে’, ‘স্বাভিমান’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তিনি ছিলেন অন্যতম মুখ।
১৪২০
কেরিয়ারের সূত্রপাতে জনপ্রিয়তার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তনাজকে। ‘শ্রী’, ‘মিলে জব হাম তুম’, ‘শশসসস…কোই হ্যায়’, ‘বড়ি দূর সে আয়ে হ্যায়’, ‘কহাঁ হম কহাঁ তুম’-সহ বহু ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় মনে রেখেছেন টেলি দর্শক।
১৫২০
তনাজ সেই সব অভিনেত্রীদের মধ্যে পড়েন যাঁরা টেলিভিশন থেকে সিনেমায় এসেও সমাদৃত হয়েছেন। ২০০০ সালে তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘হদ কর দি অপনে’-তে। সে বছরই মুক্তি পায় তাঁর আরও দু’টি ছবি। ‘হমারা দিল আপকে পাস হ্যায়’ এবং সুপারহিট ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’।
১৬২০
সিনেমায় নায়ক-নায়িকাদের পাশাপাশি সব সময় নজর টেনেছে পার্শ্বচরিত্রে তনাজের উজ্জ্বল উপস্থিতি। তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘রেহনা হ্যায় কেরে দিল মেঁ’, ‘মেরে ইয়ার কি শাদি’, ‘দিওয়ানগি’, ‘ম্যায়ঁ প্রেম কি দিওয়ানি হুঁ’, ‘কুছ না কহো’, ’৩৬ চায়না টাউন’, ‘রোডসাইড রোমিয়ো’ এবং ‘গোলমাল থ্রি’।
১৭২০
তবে দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরে ছবিতে কাজ কমিয়ে দিয়েছেন তনাজ। ২০১০ সালে তাঁর শেষ ছবি ‘গোলমাল থ্রি’ মুক্তি পেয়েছিল। গত ১ দশক বড় পর্দায় অভিনয় না করলেও টেলিভিশনে তনাজ বিরাজমান স্বমহিমাতেই।
১৮২০
তনাজের পাশাপাশি বখতিয়ারও ব্যস্ত নিজের কেরিয়ারে। দু’জনে দক্ষ নৃত্যশিল্পীও। বিদেশে নাচ শেখানোর প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করেন তাঁরা। ‘নাচ বালিয়ে’-সহ একাধিক রিয়েলিটি শো-এ অংশ নিয়েছেন এই তারকা দম্পতি।
১৯২০
তবে বখতিয়ার-তনাজ সম্পর্কেও ওঠাপড়া এসেছে। অন্য নায়িকার সঙ্গে বখতিয়ারের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। তনাজের সঙ্গেও সহ অভিনেতার প্রেমের গুঞ্জন শোনা গিয়েছে। অভিযোগ, বদমেজাজি বখতিয়ার একবার প্রকাশ্যেই তনাজকে চড় মেরেছিলেন।
২০২০
কিন্তু সে সব অভিযোগকে রটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তনাজ। তিনি এবং বখতিয়ার দু’জনেই জানিয়েছেন, কাজ এবং পরিবার নিয়ে তাঁরা খুশি। পরিবারকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এভাবেই সবদিকে ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে যেতে চান তাঁরা।