সোহিনী দাশগুপ্ত, মান্না দে এবং সুদেব দে।
মান্না দে-র জনপ্রিয় গান ‘কফি হাউস’ সাত ন্যাকার ঘ্যানঘ্যান। ব্যর্থ কিছু মানুষের হতাশা গানের প্রতিটি কথায়, সুরে। শুক্রবার এমনই বক্তব্য প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্তের। সত্যিই কি তাই? ৪০ বছর আগের সৃষ্টির গায়ে কি অবশেষে জরার ছাপ? মান্না দে প্রয়াত। নেই গানের গীতকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। জবাব জানতে আনন্দবাজার অনলাইন তাই যোগাযোগ করেছিল মান্না দে-র ভাইপো সুদেব দে-র সঙ্গে। যিনি তাঁর কাকার গান কণ্ঠে ধারণ করেছেন।
কী বলছেন সুদেব? তিনি সোহিনী দাশগুপ্তকে তাঁর স্ব-পরিচয়ে চিনতে পারেননি। পারিবারিক পরিচয় জানার পরে শিল্পীর বক্তব্য, ‘‘কাকা মান্না দে আমার গুরু। আমার পিতার সমান। যিনি তাঁর গান নিয়ে ফেসবুকে নিজের মত প্রকাশ করেছেন, তাঁকে আমি চিনি না। কারণ, তিনি স্বনামধন্য নন। তবু বলব, কিছু কিছু মানুষের প্রচারের আলোয় আসতে কিছু নেচিবাচক কাজ বা কথা বলতে ভালবাসেন। সোহিনীও বুঝেছেন, এ ভাবে কিছু বললে তিনি আলোচনায় উঠে আসবেন। তাই বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি এক শিল্পীর সৃষ্টিকেও অস্বীকার করছেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ইদানীং পাঁক ঘাঁটার লোক অনেক। ভাল কাজ করে প্রশংসা পাওয়া অনেক কষ্টের। তুলনায় নেতিবাচক বক্তব্য দ্রুত প্রচার পায়। সোহিনী সম্ভবত সেই কারণেই তাঁর কাকা এবং ‘কফি হাউস’ গানটিকে বেছেছেন।
শিল্পীর স্মৃতিচারণায়, বিশ্বের একটি প্রথম সারির সংস্থা নানা দেশের ২৫টি গান বেছে নিয়েছে। তার অন্যতম ‘কফি হাউস’। দাবি, প্রয়াত পরিচালকের স্ত্রী মান্না দে-র সঙ্গে অপমান করেছেন গীতিকার, সুরকারকেও। এই ত্রয়ীর ভালবাসার ফসল এই গানটি। তাকে এ ভাবে অপমান করা কারও সাজে কি? সুদেব দে নিজেও সঙ্গীতশিল্পী। তাই তাঁর কথায়, ‘‘পেশার খাতিরে দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় কাকার গান গাই। আজও ‘কফি হাউস’ না গাইলে শ্রোতারা আমায় মঞ্চ থেকে উঠতে দেন না। সেটা কি ঘ্যানঘ্যানে গান বলেই? না, তাঁরা গান বোঝেন না!’’ তার মতে, প্রকারান্তরে শ্রোতাদেরও অপমান করা হল।
সুদেব আরও জানান, ফেসবুকে স্বাধীন মতপ্রকাশ করা যেতেই পারে। কিন্তু সেই মত যদি কোনও সৃষ্টি বা শিল্পীর জনপ্রিয় কাজকে অপমানিত বা আহত করে সেটা বোধহয় অনুচিত। উদাহরণ হিসেবে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও লেখা তাঁর ভাল না-ই লাগতে পারে। কিন্তু সে কথা প্রকাশ্যে বললে সমাজ শিল্পীকে নিচু নজরে দেখবে। রবীন্দ্রনাথের তাতে কিচ্ছু আসবে যাবে না। পাশাপাশি ‘কফি হাউস’ গান তৈরির ইতিহাসও তুলে ধরেন তিনি।
পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা, সূপর্ণকান্তি ঘোষের সুর দেওয়া ‘ছোট বোন’ তখন লোকের মুখে মুখে ফিরছে। সুদেব শুনেছিলেন, সুরকার তখন অনুরোধ জানিয়েছিলেন, আড্ডা নিয়ে একটা গান হোক। সঙ্গে সঙ্গে গীতিকার সিগারেটের প্যাকেটের রাংতার পিছনে পেনসিল দিয়ে গানের মুখরা আর অন্তরা লিখে ফেলেন। এই গান ঘিরে এখনও কত মিথ! প্রায়ই ফেসবুকে লেখা হয়, ‘ঢাকার মইদুল’ ভাল নেই। তিনি সদ্যপ্রয়াত। কিংবা ‘সুজাতা’র কথা উঠে আসে। সবটাই গল্পকথা। গীতিকারের সৃষ্ট চরিত্র এরা। বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। শ্রোতাদের কল্পনায় তারা আজও জীবিত। অবশ্য ‘কফি হাউস’-এর দ্বিতীয় পর্ব ততটা জনপ্রিয় হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy