মান্না দে-র গান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য সোহিনী দাশগুপ্তের।
মান্না দে-র ‘কফি হাউস’ কিংবদন্তি গান। শিল্পী এবং তাঁর পাশাপাশি গীতিকার এবং সুরকারও কালজয়ী। তাঁরা যথাক্রমে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার এবং সুপর্ণকান্তি ঘোষ। যে কোনও বাংলা রিয়্যালিটি শো এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আজও এই গান সমসাময়িক। সেই গান নিয়েই শুক্রবার ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা ভীষণ ‘লুজার সং’! সাতটা ন্যাকার ঘ্যানঘ্যান। নস্টালজিয়ারও একটা স্ট্যান্ডার্ড থাকা উচিত।’
হঠাৎ কেন এই ধরনের মন্তব্য তাঁর? বিশেষ করে যে গান কালজয়ী! আনন্দবাজার অনলাইনকে পরিচালকের দাবি, ‘‘সকালে এফএম চ্যানেলে গানটি শুনতে শুনতে এ কথাগুলোই মনে হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে কথাগুলো বলেছি। এবং এগুলো আমার উপলব্ধি।’’
সোহিনীর পোস্টের নীচে একাধিক পরিচিত ব্যক্তিত্বের সমর্থন। সেখানে এই প্রজন্মের সুরকার উপালী চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের পরেই তিনি মন্তব্যটি মুছে দেন। এবং মতামত দিতেও রাজি হননি। তবে কমবেশি সকলের কথাতেই উঠে এসেছে, প্রয়াত শিল্পীর এই গান আজকের প্রজন্মের কাছে ‘ভ্যাদভেদে। ভেতো বাঙালি এই ধরনের গান বেশি খায়!’ কারও দাবি, ‘যেমন গানের কথা খারাপ, তেমনই ফ্ল্যাট সুর।’ কেউ কেউ নচিকেতা চক্রবর্তীর গাওয়া ‘নীলাঞ্জনা’ বা ‘অনির্বাণ’কেও একই গোত্রে ফেলেছেন।
তার পরেও কেন এই গানগুলোকেই আজকের প্রজন্ম রিয়্যালিটি শো-তে গাইছেন? বাঙালি ভাল খায় বলে? আজকের গান কেন শোনা যায় না তাঁদের কণ্ঠে!
সোহিনীর যুক্তি, ‘‘আটের দশকে প্রথম এই গান শুনেছি। ভীষণ ভাল লেগেছিল সেই সময়। যেমন সুর, তেমনই গানের কথা। স্মৃতি তার সিংহভাগ জুড়ে। আস্তে আস্তে বড় হয়েছি। বারেবারে শুনতে শুনতে মনে হয়েছে গানে যেন একটি মেয়ের সম্পর্কেই বলা হয়েছে। সেই সময় হয়তো ওই গান সমসাময়িক ছিল। এখন সম্ভবত সেই সময় আর নেই। এই প্রজন্মের নিরিখে দেখলে আমার যেমন মনে হয়েছে বাকিদেরও সেটাই বক্তব্য, গানটি কিছু হেরে যাওয়া মানুষের। কয়েক জনের হতাশ মানুষের ব্যর্থতার কাহিনী এই গান। তাঁরা তাঁদের দুঃখের কাঁদুনি গাইছেন!’’ তাঁর আরও দাবি, কফি হাউস সবসময়েই স্মৃতি-বিজড়িত। তা বলে সেখানে শুধুই কান্না, হতাশা থাকবে? গানের পাত্র-পাত্রীরা সবাই খুবই খারাপ আছেন। ব্যতিক্রম সুজাতা। তিনি সুখে আছেন বলে তাঁর সুখকে যেন কটাক্ষও করা হয়েছে। এটা বোধহয় একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যদিও সোহিনীর কথায়, ‘‘স্বাধীন মতপ্রকাশের জায়গা থেকেই ফেসবুকে এই মন্তব্য লিখেছি। সুরকার, গীতিকার বা গায়ককে আক্রমণ করতে নয়। পুরোটাই করেছি মজার ছলে।’’
মজার ছলেই যদি আগামী প্রজন্ম বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের কোনও কাজকে একই ভাবে ব্যাখ্যা করেন? সোহিনীর মতো শব্দবন্ধ ব্যবহার করে? সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের স্ত্রী বলেই কি পরিচালকের নাম উঠে এল?’’ তাঁর আরও মত, এই সমালোচনা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। একটি শিল্প সবার জন্য। তাকে ঘিরে ভাল লাগা বা মন্দ লাগা থাকবেই। সেটা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের কাজ হতে পারে। কিংবা মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy