তনুশ্রী ছবি: রিকি রাজ
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে বারো বছর হল আপনার। কেমন ছিল জার্নিটা?
উ: ভাল-মন্দ মিশিয়েই ছিল। এই বারো বছরে শিখেছি কাকে বিশ্বাস করতে হয়, কাকে এড়িয়ে চলতে হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে একটা জায়গা তৈরি করতে পেরেছি, যেখানে পরিচালকেরা বলতে পারেন, এই চরিত্রটা তনুশ্রীই করতে পারবে। এই আস্থাটাই তো বড় পাওনা।
প্র: রাজর্ষি দে-র ছবি ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’য় একাধিক বলিষ্ঠ অভিনেতা। নার্ভাস লাগেনি?
উ: না। বরং উত্তেজিত ছিলাম অপুদা (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), বাবানদা (কৌশিক সেন), বিদীপ্তাদির (চক্রবর্তী) সঙ্গে কাজ করতে পারব ভেবে। শুটিংয়ের সময়ে আমরা সবাই পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। ফেরার সময়ে তো কান্নাকাটি করছিল সকলে!
প্র: মলাট চরিত্রর বদলে, অঁসম্বল কাস্টের ছবিতে আপনাকে বেশি দেখা যায়। এটার কারণ কী?
উ: সেটা ইন্ডাস্ট্রির কারণে। টলিউডে মহিলাকেন্দ্রিক ছবি ক’টা হয়? অনেকের মাঝেও কিন্তু নিজেকে চিনিয়ে দেওয়া যায়। আবীর (চট্টোপাধ্যায়) তো এত বড় স্টার। সে-ও ‘আবার বছর কুড়ি পরে’র মতো অঁসম্বল কাস্টের একটা ছবি করল। নায়ক-নায়িকার বদলে এখন কাহিনি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ‘অন্তর্ধান’এ যেমন আমিই প্রধান নারীচরিত্র। ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’ করলাম এর কাহিনির জন্য। ছবিটার কিছু ঘটনা, কিছু চরিত্র আমাদের ভীষণ চেনা। প্রতিটি পরিবারেই সাদা-কালো দিক আছে। যেটা আমরা ঢেকে রাখি, সংসারটা বেঁধে রাখব বলে।
প্র: আপনার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সকলের বন্ধুত্ব। এর রহস্যটা কী?
উ: আমি মানুষ হিসেবে খুব সাদামাঠা। সেটাই হয়তো অন্যদের আকর্ষণ করে।
প্র: মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়— এদের মধ্যেকার বন্ধুত্বের রসায়ন অনেক বার বদলেছে। কিন্তু আপনার সঙ্গে সকলেরই আলাদা সেতু রয়েছে...
উ: আমি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখেছি বলেই, আমার সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব রয়েছে। তবে সায়ন্তিকার সঙ্গে অনেক দিন সে ভাবে কথা হয়নি। কিন্তু কোনও মনোমালিন্য নেই। বাইরে থেকে সকলে বিষয়টা যে ভাবে দেখেন, তা সব সময়ে সত্যি হয় না। ধরা যাক, কোথাও একটা গেটটুগেদার হল। সেখানে ইন্ডাস্ট্রির সমসাময়িক সব নায়িকা একসঙ্গে আড্ডা দিল। তারা একটা ছবি পোস্ট করল। অমনি সকলে ভাবে, এদের এত বন্ধুত্ব? আবার যদি অনেক দিন কোনও ছবি না দেখে, তা হলে ভাবে নিশ্চয়ই ঝগড়া হয়েছে। নুসরত, শ্রাবন্তী, মিমির মতো ইন্ডাস্ট্রির অন্যদের সঙ্গেও আমার বন্ধুত্ব রয়েছে। আবার ওদেরও নিজস্ব বন্ধু সার্কল আছে।
প্র: বলা হয়, তনুশ্রী ডিপ্লোম্যাটিক।
উ: আমরা এখন যে কমপ্লেক্স দুনিয়ায় বাস করি, সেখানে কাউকে ভাল দেখলে মনে হয়, এই মেয়েটা বা ছেলেটা সত্যিই কি এতটা ভাল? আমরা চট করে ভালমানুষিটাও হজম করতে পারি না।
প্র: শোনা যাচ্ছে, আপনার প্রেম-জীবনে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
উ: আমি ব্যক্তিগত সম্পর্ক আড়ালে রাখতে পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকে মেয়েদের শেখানো হয়, বিয়েটাই শেষকথা। মনে হত, আমাদের কি আলাদা কোনও মূল্য নেই? আমি এখন মন দিয়ে অভিনয় করতে চাই। যখন মনে হবে, বিয়ে করব। একটা জিনিস বলতে পারি, আমার সঙ্গে থাকতে গেলে কসরত করতে হবে। ঢিলে দিলে চলবে না (হাসি)!
প্র: রাজনীতিতে গেলেন আবার বেরিয়েও এলেন। এটা কি নেহাতই হুজুগ ছিল?
উ: এত বড় সিদ্ধান্ত কেউ হুজুগে পড়ে নেয় না। পরিস্থিতির সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই। যে ভাবে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছি, খেটেছি... অনেক কিছু শিখেছি। এর সঙ্গে জেতা-হারার কোনও সম্পর্ক নেই। এটুকু বুঝেছি, রাজনীতি করতে গেলে অনেক পড়াশোনা করা দরকার।
প্র: সৎ ভাবে কাজ করার ইচ্ছে যথেষ্ট নয় বলছেন?
উ: আমি অভিনয় শিখে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি। কিন্তু অভিনয় আমার মধ্যে সহজাত ভাবেই ছিল। যদি ছাত্ররাজনীতি করতাম, তা হলে হয়তো আলাদা করে শেখার দরকার পড়ত না। অভিনেত্রী হিসেবে আমার একটা ফেসভ্যালু আছে। সেটার জোরেই রাজনীতিতে ডাক পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি চাই, জনগণ আমার মেধা, রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়ে কথা বলুন। সেটার জন্যই পড়াশোনা দরকার।
প্র: অভিনেতাদের রাজনীতিতে আসা এবং বেরিয়ে যাওয়া বা অন্য দলে যাওয়া, এটা সাধারণ মানুষ ভাল ভাবে নেননি।
উ: জানি। এর পর রাজনীতিতে এলে ফেসভ্যালুতে নয়, যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আসতে চাই। মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেই ময়দানে নামব। অভিনেত্রী সত্তা আমাকে একটা জায়গা পর্যন্ত নিয়ে যাবে, বাকিটা আমার মেধা, পরিশ্রম...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy