সরস্বতী পুজো করলেন তাঁরা।
মঙ্গলবারের বৃষ্টিভেজা সকালে উত্তর কলকাতার লাহাবাড়ির উল্টোদিকের গলির সামনে জটলা। ফুটপাথ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বড় ভ্যানিটি ভ্যান। জটলায় ভিড় করেছেন নানা বয়সের মানুষ। সবার চোখ এক বার ভ্যানিটি ভ্যানের দিকে। আরেক বার গলির মধ্যের পুরনো অভিজাত বাড়িটির দিকে।
দেহরক্ষীদের কড়া পাহারায় ওই ভ্যানেই সাজগোজে ব্যস্ত শ্রাবন্তী-দেব-রুক্মিণী। আজ তাঁরা নাকি সরস্বতী পুজো করবেন!
ঘোর বর্ষায় বাগদেবীর আরাধনা! হঠাৎ এমন অকালবোধন? উত্তর মেলার আগেই সাদা সিক্যুয়েন শাড়ি, লাল ব্লাউজ, মানানসই গয়না আর রূপসজ্জায় ঝলমলে শ্রাবন্তী পুজো মণ্ডপে পা রাখলেন। কিছু সময় কাটিয়ে ফের তিনি ভ্যানিটি ভ্যানে। তার পরেই মণ্ডপে উপস্থিত দেব এবং রুক্মিণী। তাঁদের ক্যামেরায় ধরতে ধরতে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে রহস্য ফাঁস করলেন পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। ‘‘মঙ্গল এবং বুধবার, ২ দিন ধরে 'কিশমিশ'-এর কয়েকটি দৃশ্য শ্যুট হবে। সেখানেই সরস্বতী পুজোর আয়োজন। এই দু’দিনের শ্যুটে দেব-রুক্মিণী ২০১৪-র লুকে ধরা দেবেন,’’ জানালেন তিনি। তাঁর কথা অনুযায়ী, ছ’জন তারকা অভিনেতা ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করে সমৃদ্ধ করছেন দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্সের আগামী ছবির গল্পকে। ‘কিশমিশ’ ইতিমধ্যেই সুস্বাদু যিশু সেনগুপ্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে। রহস্য জিইয়ে রাখতে আরও দুই তারকার নাম এখনই ফাঁস করতে নারাজ পরিচালক। তবে শ্যুটিংয়ে এ দিন তিন তারকা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লিলি চক্রবর্তী, অঞ্জনা বসুর মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা।
দেবের আগামী ছবি ‘কিশমিশ’ নিয়ে চর্চা চলছে আরও একটি কারণে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পরে একটি ছবিতে শাসক দল, বিরোধী পক্ষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। অঞ্জনা বসু, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় যদি বিজেপি-র প্রতিনিধি হন, তা হলে দেব, জুন মালিয়া, রুক্মিণী মৈত্র যথাক্রমে শাসকদলের সাংসদ, বিধায়ক, সমর্থক। অন্য দিকে, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বামপন্থায় বিশ্বাসী। কী করে এটা সম্ভব হল? জবাব দিয়েছেন শ্রাবন্তী। তাঁর দাবি, ‘‘রাজনীতির বাইরে আমরা সবাই অভিনেতা। সেখানে কোনও বিরোধিতা নেই। তাই এ ভাবে মিলেমিশে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।’’ এই ছবিতে তিনি 'শ্রাবন্তী' হয়েই দেখা দেবেন। পায়েসে কিশমিশ ছড়িয়ে খেতে ভালবাসেন বিজেপি প্রার্থী। তাঁর মতে, ছবির গল্প, উপস্থাপনা ভাল লেগে যাওয়ায় তিনি ক্যামিওতেও রাজি।
বাকি দেব-রুক্মিণী। এই ছবি নিয়ে তাঁরা ছ’বার জুটি বাঁধলেন। নিজেদের চরিত্র নিয়ে এই মুহূর্তে মুখ খুলতে নারাজ উভয়েই। তবে দেব জানান, খরাজ মুখোপাধ্যায়ের কাছে তিনি রাহুলের নাম শোনেন। যোগাযোগের পর গল্প শোনেন। তাঁর মনে হয়, এতে টক মিষ্টি ঝাল-- সব রকমের উপাদান আছে। যা দর্শকদের ভাল লাগবে। চিত্রনাট্য শোনার দিনেই রাহুলের সঙ্গে চুক্তিপত্রে সইসাবুদ সেরে ফেলেন।
পরিচালক রাহুলের বক্তব্য, অতিমারির মধ্যেও এত বড় ক্যানভাসে ছবি তৈরির ঝুঁকি একমাত্র প্রযোজক দেবই নিতে পারেন। একই সঙ্গে অভিনেতা দেব পারেন নিজেকে ইচ্ছে মতো ভাঙতে। তাই একই সঙ্গে তিনি টিনটিন, ফেলুদা, স্কুল ছাত্র,কৃশাণু। স্কুলবেলা ফিরিয়ে আনতে দেব ওজন ঝরিয়ে ছিপছিপে হয়েছেন। চুল কপালের উপর ফেলে তাকে কার্ল করিয়েছেন। চোখে গোল ফ্রেমের চশমা পরেছেন। রুক্মিণী এক সকালে তিন বার তাঁর ‘লুক’ বদলে পাঁচটি দৃশ্যে অভিনয় করে ফেলেছেন।
তাঁদের প্রেম, থুড়ি সফল রসায়ন এই ছবিতে কী অনুপাতে পরিবেশিত হবে? হেঁয়ালি ছড়ালেন পরিচালক, ৪:৩! অর্থাৎ, দেব যদি চার রকমের অবতারে ধরা দেন তা হলে তাঁর দেবীকে দেখা যাবে তিন ধরনের রূপে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy