RIP Rishi Kapoor: Real life story & Struggling days in Bollywood of Rishi Kapoor dgtl
bollywood
‘ঘুষ’ নিয়ে প্রথম ছবিতে অভিনয়, দাম্পত্যে সাময়িক ফাটল ধরিয়েছিল সুরাসক্তি
অভিনয়-জীবনের দ্বিতীয় পর্বে নিজের চকোলেট বয় ইমেজ ভেঙে নিজের অভিনয় প্রতিভাকে সবে ডানা মেলতে দিয়েছিলেন। কিন্তু আকাশ বড় তাড়াতাড়ি কালো হয়ে এল। সংক্ষিপ্ত উড়ান শেষ হয়ে গেল সময়ের আগেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১৪:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
বৃষ্টিভেজা পথ ধরে হেঁটে যেতে হবে। আরও দু’জন বাচ্চার সঙ্গে। এই দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য স্বয়ং নার্গিস চকোলেট দিয়েছিলেন। ‘ঘুষ’ পেয়ে তবেই রাজি হয়েছিল তিন বছরের ছোট্ট ছেলে। তার পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বলিউডের সরণি বেয়ে যত হেঁটেছেন, দীর্ঘ হয়েছে ঋষি কপূরের ছায়া।
০২১৬
‘শ্রী ৪২০’ ছবিতে আইকনিক গান ‘প্যায়ার হুয়া ইকরার হুয়া’-র দৃশ্যায়নেই প্রথম বড় পর্দায় আবির্ভাব ঋষি কপূরের। এর পর অপেক্ষা ১৫ বছরের। রাজ কপূরের মেজো ছেলে ঋষি তাঁর বাবার যুবক বয়সের ভূমিকায় অভিনয় করলেন ‘মেরা নাম জোকার’ ছবিতে।
০৩১৬
মুম্বইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলের পরে ঋষির পড়াশোনা অজমেঢ়ের মেয়ো কলেজে। পারিবারিক ধারা অনুসরণ করে অভিনয়কেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। নিজের প্রতিভার জোরেই অতিক্রম করেছিলেন পূর্বজদের ছায়া। সমসাময়িক অভিনেতাদের কাছ থেকেও এসেছিল কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সে সব ছাপিয়েই নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন ঋষি।
০৪১৬
১৯৭৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ববি’। ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে নবাগত ঋষির জুটি সুপারডুপার হিট। ববির পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছিল। এই ছবি তাঁকে শক্ত জমি দিয়েছিল। তবে এও শুনতে হয়েছে, ছেলেকে লঞ্চ করার জন্যই রাজ কপূর এই ছবি বানিয়েছিলেন।
০৫১৬
এই আক্ষেপ সারা জীবন ছিল ঋষি কপূরের। বছর কয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কৈশোর-প্রেম নিয়ে ছবি করতে চেয়েছিলেন রাজ কপূর। কিন্তু সে সময় রাজেশ খন্নাকে নেওয়ার আর্থিক সঙ্গতি তাঁর ছিল না। তাই, ঋষি সুযোগ পান। তাঁকে পরিচিতি দেওয়ার জন্য ‘ববি’ তৈরি হয়নি। দাবি করেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।
০৬১৬
সুপারস্টারের পরিচয় পেলেও কোথায় যেন ব্যর্থতার ছায়া একটু হলেও ঢেকে রেখেছিল তাঁর অভিনেতা জীবনকে। ১৯৭৩ থেকে ২০০০ অবধি মোট ৫১টি ছবি মুক্তি পেয়েছিল, যেখানে ঋষি কপূর ছিলেন একমাত্র নায়ক। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ১১টি ছবি বক্স অফিসে সফল হয়েছিল।
০৭১৬
তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘লায়লা মজনু’, ‘রফু চক্কর’, ‘সরগম’, ‘কর্জ’, ‘প্রেম রোগ’, ‘নাগিনা’, ‘হনিমুন’, ‘চাঁদনি’, ‘বোল রাধা বোল’ এবং ‘হিনা’।
০৮১৬
বরং, তুলনায় অন্য নায়কের সঙ্গে ঋষি কপূর অভিনীত ছবি তুলনায় অনেক বেশি সফল হয়েছে। ‘খেল খেল মে’, ‘কভি কভি’, ‘বদলতে রিসতে’, ‘আপ কে দিওয়ানে’, ‘সাগর’, ‘আজুবা’, ‘দামিনী’, ‘দিওয়ানা’ এবং ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’-র মতো ছবিতে তাঁকে কৃতিত্ব ভাগ করে নিতে হয়েছে অন্য নায়কের সঙ্গে।
০৯১৬
অভিনয়ের দ্বিতীয় পর্বে অনেক বেশি সাফল্যের পালক বসেছিল ঋষি কপূরের শিরোপায়। নায়কের ভূমিকা থেকে সরে গিয়ে তখন ঋষি বেছে নিতেন চরিত্রাভিনয়। বা, কখনও কখনও তাঁকে দেখা গিয়েছে খলনায়কের ভূমিকাতেও।
১০১৬
‘ডি ডে’, ‘মুলক’,‘ইয়ে হ্যায় জলওয়া’, ‘হাম তুম’, ‘ফনা’, ‘নমস্তে লন্ডন’, ‘লভ আজ কাল’, ‘পটিয়ালা হাউস’, ‘হাউসফুল টু’, ‘১০২ নট আউট’, ‘ঝুটা কহিঁ কা’, ‘জব তক হ্যায় জান’ ছবিতে যেন নতুন করে ধরা দেন অভিনেতা ঋষি।
১১১৬
অভিনয়-জীবনের দ্বিতীয় পর্বে তাঁর চকোলেট বয় ইমেজ ভেঙে নিজের অভিনয় প্রতিভাকে সবে ডানা মেলতে দিয়েছিলেন। কিন্তু আকাশ বড় তাড়াতাড়ি কালো হয়ে এল। সংক্ষিপ্ত উড়ান শেষ হয়ে গেল সময়ের আগেই।
১২১৬
অভিনয় জীবন তাঁকে যশ খ্যাতির পাশাপাশি দিয়েছে জীবনসঙ্গিনীকেও। ১৯৮০ সালে তিনি বিয়ে করেন নীতু সিংহকে। মোট ১৫টি ছবিতে নীতু ছিলেন তাঁর নায়িকা। বিয়ের পরে কপূর পরিবারের ধারা মেনে স্বেচ্ছায় অভিনয় ছেড়ে দেন নীতু।
১৩১৬
অভিনয় ছেড়ে দেওয়া নিয়ে নীতুর মনে কোনও ক্ষোভ ছিল না। তিনি আর ঋষি দু’জনে ছিলেন খুব ভাল বন্ধুও। বিয়ের আগে ভেঙে যাওয়া অন্য প্রেম থেকে বিয়ের পরের বান্ধবী, সবই স্ত্রীর সঙ্গে শেয়ার করতেন ঋষি।
১৪১৬
কিন্তু সমস্যা এল অন্য জায়গায়। শোনা যায়, ঋষি কপূরের অতিরিক্ত সুরাসক্তি মেনে নিতে পারেননি নীতু। দুই সন্তান রণবীর আর ঋদ্ধিমাকে নিয়ে তিনি নাকি রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলেও যান। পরে আবার ফিরে আসেন। তার পর আর দাম্পত্যের ফাটল প্রকাশ্যে আসেনি।
১৫১৬
ক্যানসারের বিরুদ্ধে ঋষির যুদ্ধে প্রথম থেকে পাশে ছিলেন তাঁর স্ত্রী নীতু। ২০১৮ সালে তাঁরা দু’জনে দীর্ঘ দিন নিউ ইয়র্কে ছিলেন। সেখানেই চলছিল ঋষির চিকিৎসা। গত বছর তাঁরা ফিরে আসেন দেশে। বোন ম্যারোর ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যতটা ছিল ঋষির, ততটাই ছিল নীতুর।
১৬১৬
‘চকোলেট বয়’ ইমেজের আড়ালে লুকিয়ে ছিল হার-না-মানা যোদ্ধা। অভিনয় জীবনে সে কথা প্রমাণ করার সুযোগ বেশি বার দেননি পরিচালকরা। জীবনমৃত্যুর লড়াইয়ে বোধহয় সেই পরীক্ষা দিয়ে গেলেন ঋষি। দেখিয়ে গেলেন, আদতে তিনিও এক জন ফাইটার।