আমায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, সৃজিত প্রসঙ্গে বললেন রাজনন্দিনী।
সম্প্রতি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে রাজনন্দিনী পাল অভিনীত ‘পায়েস’। প্রথম সারির প্রযোজনা সংস্থার আগামী ছবিতেও চুক্তিবদ্ধ তিনি। নিজে কখনও পায়েস রেঁধেছেন? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অকপট অভিনেত্রী।
প্রশ্ন: রাজনন্দিনী পায়েস খেতে ভালবাসেন? জন্মদিনে পায়েস রাঁধা হয়?
রাজনন্দিনী: (ছোট্ট হাসি) হ্যাঁ, পায়েস খাই তো! খেতে ভালবাসি। প্রতি জন্মদিনে দিদা পায়েস রেঁধে দেন আমায়।
প্রশ্ন: নিজে কোনও দিন রেঁধেছেন?
রাজনন্দিনী: আমি রান্নাবান্না কমই জানি। তবে লকডাউনে একটু আধটু রেঁধেছি। আর হ্যাঁ, আকাশ আটের ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ‘প্ল্যাটফর্ম আট’-এ সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘পায়েস’ ছবির প্রচারে গিয়ে অনেক জায়গায় নিজের হাতে পায়েস রেঁধেছি।
প্রশ্ন: অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের ‘লকডাউন’-এর পরেই মুক্তি পেল প্রমিতা ভট্টাচার্যের এই ছবি। খুশি?
রাজনন্দিনী: গোটা লকডাউন বসে কেটেছে। হাতে কাজ না থাকলে কার ভাল লাগে! আমারও মনখারাপ ছিল। এখন পর পর দুটো ছবি মুক্তি পাওয়ায় সত্যিই ভাল লাগছে। আরও একটি ছবি তৈরি হয়ে রয়েছে। অতিমারি সব ভেস্তে দিয়েছে। দেখা যাক, কবে মুক্তি পায়।
প্রশ্ন: প্রথম সারির একটি প্রযোজনা সংস্থার লুক টেস্টের ফলাফল কী?
রাজনন্দিনী: সসম্মানে উত্তীর্ণ (হাসি)। আর কিছু বলতে পারব না।
প্রশ্ন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় অভিনয়ে হাতেখড়ি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়। তুলনায় নবীন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?
রাজনন্দিনী: বেশ ভাল। প্রমিতা এর আগে হইচই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সোহম চক্রবর্তী-শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ‘দু’জনে’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন। তারও আগে রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার সহযোগী পরিচালক হিসেবে ‘রং দে বাসন্তী’, ‘দিল্লি ৬’-এর মতো জনপ্রিয় ছবির কাজ সামলেছেন। ফলে ছবির খুঁটিনাটি জানেন। আত্মদীপ ভট্টাচার্যের কাহিনি অবলম্বনে ঘরোয়া গল্প বলেছেন। বিপরীতে ছিলেন নীল চট্টোপাধ্যায়। নীলদা আমার থেকে আগে অভিনয়ে এসেছেন। পাশাপাশি ছিলেন সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়, তীর্থঙ্কর চক্রবর্তী, মৈত্রেয়ী চক্রবর্তীর মতো প্রবীণ অভিনেতা।
প্রশ্ন: পাভেলের ‘অসুর’ ছবিতে জিতের বিপরীতে ছোট চরিত্রে আপনাকে শেষ দেখা গিয়েছিল...
রাজনন্দিনী: ছবির পাশাপাশি আমার অভিনয়ও সবার প্রশংসা পাচ্ছিল। অতিমারি থাবা না বসালে এ দিনে আরও ভাল কাজ দর্শক দেখতে পেতেন। লকডাউনে তো সবই থমকে গেল। তা ছাড়া, বেছে ছবি করছি। যাতে দর্শকেরা অনেক দিন আমায় মনে রাখেন।
প্রশ্ন: সৃজিতেরও বিয়ে হয়ে গেল....
রাজনন্দিনী: জানি, কোন কথা নতুন করে বলতে চাইছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায় আর আমাকে নিয়ে যে বিতর্কের সূত্রপাত সেটা কিন্তু সংবাদমাধ্যমেরই তৈরি। আমায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এটাই আমার বলার। বয়সে সৃজিত আমার পিতৃসম। ওঁকে নিয়ে এর বেশি আর কিছু বলার নেই।
প্রশ্ন: আসলে, প্রথম কাজেই ‘সৃজিত’ সম্বোধন তাই...
রাজনন্দিনী: আমি কিন্তু ওঁকে ‘আঙ্কল’ বলে ডেকেছিলাম। এতে পরিচালক ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। শুধু সৃজিত বলে ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আমি নিজে থেকে কিছুই করিনি।
প্রশ্ন: জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক অনেক ছবি পরিচালনা করছেন। আপনি কোন ছবিতে?
রাজনন্দিনী: দেখুন, সৃজিত আমায় ওঁর ‘এক যে ছিল রাজা’ ছবির জন্য ডেকেছিলেন। যেখানে যিশু সেনগুপ্তের বিপরীতে ‘বাচ্চা বৌ’ দরকার ছিল। আমি তখন খুবই ছোটো। এখন তো আর সেই বয়সে নেই! তবে আমার উপযুক্ত চরিত্র পেলে সৃজিত আবার ডাকবেন, এটা আমি জানি।
প্রশ্ন: প্রথম থেকে বড় ব্যানার, প্রযোজনা সংস্থা, নামী পরিচালক, দামি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ। ইন্দ্রাণী দত্তের মেয়ে হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন, এই অপবাদ শোনেনি?
রাজনন্দিনী: কপাল ভাল, সেটা শুনতে হয়নি। আর আমিও প্রথমে পড়াশোনার দুনিয়াতে থাকব বলেই ঠিক করেছিলাম। হঠাৎই এই পেশায় চলে আসি। তবে মায়ের সঙ্গে আমার তুলনা শুনতে হয়েছে। সৌন্দর্য, অভিনয় সব নিয়ে। অবাক হয়েছি, কার সঙ্গে কার তুলনা! যেন মা-মেয়ে প্রতিযোগী। এখনও আমার পড়াশোনাই শেষ হল না। সেই জায়গায় মায়ের কত অভিজ্ঞতা। তবে বহু অভিনেতা সেটে বলেছেন, ‘‘আগে তোর মায়ের সঙ্গে কাজ করেছি। এখন তোর সঙ্গে কাজ করছি।’’
প্রশ্ন: আপনার প্রতিযোগী কে?
রাজনন্দিনী: কেউ আমার প্রতিযোগী নন। আমরা সবাই সহকর্মী। ফলে, কাউকে নিয়ে এই ধরনের তুল্যমূল্য বিচারের কথা কখনও ভাবিনি। আমার একমাত্র প্রতিযোগী আমিই। প্রতি ছবিতেই তাই নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।
প্রশ্ন: পড়াশোনা করছেন, অভিনয় করছেন, প্রেম করছেন না?
রাজনন্দিনী: পাচ্ছি না কাউকে! (জোরে হাসি) আসলে আমিও সময় দিতে পারছি না। কাউকে মনেও ধরছে না। ফলে, প্রেম আসছে না।
প্রশ্ন: কেমন প্রেমিক পছন্দ? ব্যবসায়ী না প্রযোজক?
রাজনন্দিনী: যাঁর উপরে নির্ভর করতে পারব তেমন কাউকে চাই। যিনি আমায় বুঝতে পারবেন। আমায় নিয়ে জড়িয়ে থাকবেন। আমার পেশাকে বুঝবেন। এবং চাইব ইন্ডাস্ট্রির বাইরের কোনও মানুষ যেন আমার সঙ্গী হন।
প্রশ্ন: ‘জীবনসঙ্গী’ খুঁজবেন না ‘সহবাস সঙ্গী’?
রাজনন্দিনী: কথাগুলো বড্ড ভারী। এখন এগুলো নিয়ে ভাবার বা কথা বলার মতো সময়, বয়স কোনওটাই আমার হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy