মহিষ বা মুরগি কোনও মাংসই খায়নি সে। শুধু ওআরএস ও জল মুখে দিয়েছিল। —ফাইল চিত্র।
বাংলা সফরের পরে অবশেষে বাঘিনি জ়িনত ফিরল ওড়িশায়। মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ তাকে গ্রিন করিডোরে করে সিমলিপালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে নিজের ঠিকানায় ফিরলেও এখনই বাঘিনি জঙ্গলে বিচরণ করবে না। তাকে রাখা হবে পর্যবেক্ষণে।
দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে জ়িনতকে ধরার পরে আলিপুর চিড়িয়াখানার পশু হাসপাতালে নিয়ে এসে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। তবে সেখানে মহিষ, ছাগল বা মুরগি কোনও মাংসই খায়নি সে। সোম ও মঙ্গলবার শুধু ওআরএস ও জল মুখে দিয়েছিল।বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঘিনির প্রায় ৪৮ ঘণ্টা না খাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বাঘ প্রতিদিন খাবার খাবে এর কোনও মানে নেই। টানা সাত দিন না খেয়েও থাকতে পারে বাঘ।
বনদফতর সূত্রে খবর, ঘুমপাড়ানি গুলির কারণে বাঘিনির যে ঝিমুনি ভাব ছিল, তা কেটে গিয়েছে। শরীরে কোথাও চোট নেই। বাঘিনি চনমনে রয়েছে। মাঝেমধ্যে ডাকাডাকিও করেছে। সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে বাঘিনির একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভাল আছে বাঘিনি। বন দফতর তার খেয়াল রাখছে। মঙ্গলবারেও বাঘিনির সুস্থ থাকার খবর জানান বনমন্ত্রী। বলেন, ‘‘জ়িনতকে সিমলিপাল পাঠানো হলেও এখনই জঙ্গলে ছাড়া হবে না। আপাতত পর্যবেক্ষণে থাকবে সে।’’ জানা গিয়েছে, ওড়িশা থেকে একটি মেডিক্যাল টিম এসেছিল আলিপুরে। তার আগে বাংলার চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিল সে। দুপুরে দুই রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ ও যৌথ সিদ্ধান্তের পরেই রাতে জ়িনতকে সিমলিপালে ফেরানো হয়।
এক নজরে জ়িনত
মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র সংরক্ষণে জন্ম জ়িনতের। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয়েছিল ওড়িশার সিমলিপালে। সেখানকারই বাসিন্দা সে। কিন্তু দিন কয়েক আগে ঝাড়খণ্ডের কুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা হয়ে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার কাটচুয়া জঙ্গলে প্রবেশ করেছিল বাঘিনি। তার পর দু’দিন ধরে কখনও ময়ূরঝর্নার জঙ্গলে, আবার কখনও কাকড়াঝোড়ের জঙ্গলে নিজের ঠিকানা বদল করছিল। পরে তেলিঘানার জঙ্গল হয়ে জ়িনত প্রবেশ করে পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান থানা এলাকার রাইকা পাহাড়ে। সংলগ্ন অঞ্চলে দিন চারেক কাটিয়ে মানবাজারের ডাঙরডিহির জঙ্গলে হাজির হয় জ়িনত। সেখান থেকেই শুক্রবার ভোরের দিকে কুমারী নদী পেরিয়ে বাঘিনি ঢুকে পড়ে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর রবিবার সেই জঙ্গল থেকেই ধরা হয় জ়িনতকে। এর পর ওড়িশার সিমলিপাল থেকে আনা বিশেষ খাঁচায় বাঘিনিকে বন্দি করে ফেলে বন দফতর। বিষ্ণুপুর বন বিভাগের দফতরে নিয়ে গিয়ে বাঘিনির একদফা শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুরে। এর পর মঙ্গলবার ফের ওড়িশায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy