অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং পায়েল দে।
রবিবারের সকাল। কাজ ভুলে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিলেন অভিনেত্রী পায়েল দে। ঘুম ভাঙল একটা ফোনে। ওপার থেকে পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তের পরিচিত কণ্ঠ, “আমার ছবিতে তুই অভিনয় করছিস। বিপরীতে অনির্বাণ।” বিরসার মুখে এই দু’টি বাক্য শুনেই থমকে গিয়েছিলেন ‘দেশের মাটি’-র উজ্জ্বয়িনী। খানিক সামলে নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, “কোন অনির্বাণ?” ওপার থেকে উত্তর এল, “অনির্বাণ ভট্টাচার্য। আর কিছু বলতে হবে?”
ব্যস, এতটুকুই। কয়েক মিনিটের এই কথোপকথনেই পায়েল বুঝেছিলেন তাঁর স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। বড় পর্দায় নায়িকা হচ্ছেন তিনি। পায়েলের কণ্ঠে উচ্ছ্বাস, “ফোনটা রাখার পর শুধু লাফিয়ে বেরিয়েছি। ভাবতে পারিনি আচমকাই এ রকম একটা সুযোগ চলে আসবে। প্রথম ছবি! বিরসাদার মতো পরিচালক। অনির্বাণের মতো সহ-অভিনেতা।” শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত ‘মুখোশ’ ছবিতে অনির্বাণের বিপরীতে নিজের চরিত্র নিয়ে রহস্য বজায় রাখলেন তিনি। শুধু বললেন, “আমার চরিত্রটা গল্পের অনুঘটকের মতো। এর বেশি জানতে হলে ছবিটি দেখতে হবে।”
বর্তমানে স্টার জলসার ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে পায়েলকে। মেগার টানা কাজ সামলেই ছবির শ্যুট করেছেন তিনি। ছোট পর্দা এবং বড় পর্দায় ভারসাম্য রাখতে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কে পাশে পেয়েছিলেন পায়েল। তিনি বলেন, “নতুন কাজের কথা জানিয়ে লীনাদিকে মেসেজ করেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান তিনি। আমাকে নিশ্চিন্তে কাজ করতে বলেছিলেন তিনি।” খুব সহজেই ছবির শ্যুটের জন্য সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন। কিন্তু তার ওয়ার্কশপের জন্য খুব বেশি সময় পাননি পায়েল।
পায়েলের প্রথম ছবি ‘মুখোশ’। তার উপর মুখ্য মহিলা চরিত্র! বিপরীতে অনির্বাণের মতো দুঁদে অভিনেতা। সবটা নিয়ে খানিক চিন্তায় থাকলেও পায়েলের মুশকিল আসান করেছিলেন অনির্বাণ স্বয়ং। আনন্দবাজার অনলাইনকে পায়েল বলেন, “অনির্বাণের মতো সহকর্মী হয় না। ও যে কতটা ভাল, সেটা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আমি ওকে ফোন করেছিলাম। ও ফোনে ফোনেই আমাকে সংলাপ বুঝিয়েছিল। কোন লাইন কী ভাবে বলতে হবে বুঝিয়ে দিয়েছিল।”
টানা ১৬ বছর ছোটপর্দায় কাজ করেছেন পায়েল। ‘বেহুলা’, ‘বধূ কোন আলো লাগল চোখে’-র মতো একাধিক ধারাবাহিকে মূল চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরেও বড় পর্দায় সুযোগের জন্য এতটা অপেক্ষা? পায়েল বললেন, “আসলে আমি বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিইনি আগে। ছবির প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু সময় করে উঠতে পারিনি।”
তবে বড় পর্দার সঙ্গেই ছোট পর্দাতেও কাজ চালিয়ে যাবেন পায়েল। তিনি মনে করেন, ধারাবাহিকে অভিনয় সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁকে। তাই ছোট পর্দায় তিনি কাজ করবেন। পায়েলের কথায়, “অনেক বছর ধরে আমার টেলিভিশনের সঙ্গে সম্পর্ক। সেই সম্পর্ককে কোনও ভাবেই অস্বীকার করে এগিয়ে যেতে পারব না।” আর ছোট পর্দার যে অভিনেতারা বড় পর্দায় অভিনয় করতে চান, তাঁদের কী উপদেশ দেবেন পায়েল? কিছুক্ষণ থেমে তিনি বললেন, “বড় পর্দায় কাজ করতেই হবে, এমন না ভেবে নিজের কাজের প্রতি সৎ থাকতে হবে। ঠিক সময়ে সব কিছু হবে। আমি ১৬ বছর অপেক্ষার পর পেলে, সকলেই সেই সুযোগ পাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy