সাঁইবাবার চরিত্রে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়
উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণের সেই মহাসন্ধিক্ষণ।
দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ঘরে গৃহী ভক্তদের ঢল। শোকদুঃখে আতুর মানুষজন তাঁর কথামৃতের ছোঁয়ায় ফিরে পাচ্ছেন নতুন জীবন।
ঠিক সেই সময়ে ভারতের পশ্চিমপ্রান্তে তাঁর সমসাময়িক সেই কিংবদন্তি ফকিরের ভাঙাচোরা মসজিদেও সর্বধর্ম মানুষের ভিড়। রোগব্যাধি-বিপদআপদ থেকে অগুন্তি সাধারণ ভক্তকে তিনি উদ্ধার করতেন তাঁর ঘরে অবিরাম জ্বলতে থাকা পবিত্র ধূনির ভস্ম বিতরণ করে।
আকাশ আট-এর ছোট পর্দায় এ বার শুরু হচ্ছে মহারাষ্ট্রের শির্ডির মহাপুরুষ, ভক্তদের ‘মসিহা’ সাঁই বাবাকে নিয়ে ধারাবাহিক ‘ওম সাঁই রাম’। “মজার ব্যাপার হল, ঠাকুরের অন্তিমদশায় সাঁইবাবা তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। যোগবলে। শির্ডিতে তখন তাঁর নিথর দেহ পাহারা দিচ্ছিলেন তাঁর শিষ্যেরা”, জানালেন আসন্ন ধারাবাহিকের পরিচালক সুশান্ত বসু।
ধারাবাহিকের শুরুতেই থাকবে এই ঘটনার উল্লেখ। কারণ রামকৃষ্ণদেবের মতোই সাঁইবাবাও বিশ্বাসী ছিলেন ‘যত মত তত পথ’ ভাবাদর্শে।
কিন্তু ধারাবাহিক শুরুর আগেই টলিউডে ফিসফাস। জমবে? পাল্টা প্রশ্ন, কেন নয়? এই তো ছোট পর্দায় আড়াই হাজার পর্বের পথে ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’। তারাপীঠের কিংবদন্তি বাঙালি সাধককে নিয়ে তৈরি ধারাবাহিকের সাফল্যে কি ভাগ বসাতে আসছেন ‘শির্ডি কে সাঁইবাবা’? ভাগ বসানোর প্রশ্নকে পাশ কাটিয়ে আকাশ আট-এর কর্ণধার ও প্রযোজক ঈশিতা সুরানার দাবি, “বাংলায় ইদানীং সাঁইবাবার প্রচারও তুঙ্গে। মানুষজনের প্রচুর আগ্রহ তাঁকে ঘিরে। অলৌকিক সেই মহাপুরুষের আসল জীবনীই আমরা দেখাব।”
সাঁইবাবাকে নিয়ে ধারাবাহিক তৈরির খবরে অবশ্য খুশি ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’র মুখ্য অভিনেতা। “কেন জানেন? আসলে চারিদিকে এখন অশান্তির বাতাবরণ, মারপিট, খুনজখম। এই সময়ে ‘সাঁইবাবা’র মতো ধারাবাহিক দর্শকদের মনে শান্তির একটু প্রলেপ দিতে পারবে,” মন্তব্য করেন অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু সাঁইবাবার ভূমিকায় মহানায়কের নাতজামাই ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় কতটা মানানসই?
টলিউডে তিনি তো রোম্যান্টিক নায়ক হিসেবেই পরিচিত। আত্মবিশ্বাসে এখনই ভরপুর ভাস্বর। “আমি নিজেও সাঁইবাবার একনিষ্ঠ ভক্ত। কিছু দিন আগে মায়ের অসুস্থতার সময়ে প্রার্থনা করে এলাম তাঁর মন্দিরে গিয়ে। তার পরেই সুস্থ হলেন আমার মা”, অটল তাঁর বিশ্বাস সাঁইবাবার উপরে।
কিন্তু কেন ভাস্বর? “অনেককেই আমরা অডিশনে ডেকেছিলাম। মেকআপ-এর পরে পছন্দ হয়নি। আসলে আগে তো দর্শনধারী। শেষ পর্যন্ত আমরা যা চাইছিলাম, তেমনটাই পেলাম ভাস্বরের মধ্যে,” জানালেন পরিচালক।
“সাধক বামাক্ষ্যাপা’ বা ‘শ্রীরামকৃষ্ণদেব’য়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন বাঙালি দর্শকেরা। সাঁইবাবা তো শির্ডির। সেখানে তাঁর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যাঁরা জড়িয়ে ছিলেন তাঁরা তো সবাই মরাঠি। কাজেই বাঙালি দর্শকদের কাছে ‘বাইজাবাঈ’, ‘খোটে পাটিল’, ‘তাতিয়া’, ‘দোগরু’র মতো চরিত্রেরা হয়তো একটু
অচেনা। তার পরেও যদি চিত্রনাট্যকার ‘সাঁইবাবা’ জমিয়ে দিতে পারেন, তার কোনও জবাব হবে না”, মন্তব্য করেন ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’র চিত্রনাট্যকার ঋতম ঘোষাল। তাঁর মতে, পুরোটাই পরীক্ষামূলক কাজ হতে যাচ্ছে। একবার সাঁইবাবা জমে গেলে বাংলা ধারাবাহিকের মুকুটে আরও একটি পালক যোগ হবে, এমনটাই তাঁর ধারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy