Nargis's mother Jaddanbai was once famous tawaif of Varanasi dgtl
Entertainment news
বারাণসীর বিখ্যাত বাঈজি, সঞ্জয় দত্তের দিদা সুরকার, অভিনেত্রী জদ্দনবাঈয়ের ছিলেন ৩ স্বামী
জদ্দনবাঈ হুসেন। অধিক পরিচিত জদ্দনবাঈ নামেই। সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী এবং চিত্র পরিচালক। তাঁর নামের আগে এতগুলো পরিচয় বসানো যেতে পারে। এ ছাড়াও ভারতীয় ফিল্মের ইতিহাসের প্রথম ৩ মহিলা সুরকারের মধ্যে তিনি অন্যতম।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১১:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
জদ্দনবাঈ হুসেন। অধিক পরিচিত জদ্দনবাঈ নামেই। সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী এবং চিত্র পরিচালক। তাঁর নামের আগে এতগুলো পরিচয় বসানো যেতে পারে। এ ছাড়াও ভারতীয় ফিল্মের ইতিহাসের প্রথম ৩ মহিলা সুরকারের মধ্যে তিনি অন্যতম।
০২২২
আরও একটি কারণে তিনি পরিচিত। তিনি অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের দিদা। অর্থাৎ নার্গিসের মা। জদ্দনবাঈয়ের ছেলেবেলা কেটেছে বেনারসের কোঠাতে। ছেলেবেলায় তাঁর মা দলীপাদেবীকে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা।
০৩২২
১৮৯২ সালে বারাণসীতে জন্ম জদ্দনবাঈয়ের। দলীপাদেবী এবং মিয়াঁজানের সন্তান তিনি। দলীপাদেবী সম্মাননীয় হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে ছিলেন। ছোটবেলায় একদল দুষ্কৃতী তাঁকে অপহরণ করে।
০৪২২
সেই থেকে তাঁর ঠাঁই হয় বারাণসীর এক কোঠাতে। সেই কোঠায় আসা পুরুষদের বিনোদনের জন্য নাচ এবং গানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঁকে। তিনি এই পেশায় তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
০৫২২
তাঁকে পছন্দ হয়ে গিয়েছিল তাঁরই দলের এর সারেঙ্গীবাদকের। তাঁর নাম ছিল মিয়াঁজান। দলীপাবাঈকে বিয়ে করেন মিয়াঁজান। তাঁদেরই একমাত্র সন্তান জদ্দনবাঈ।
০৬২২
শোনা যায়, স্বামীর সঙ্গে থাকাকালীনই এক আইনজীবীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল দলীপাবাঈয়ের। স্বামীর অনুমতিতেই নাকি দলীপাবাঈ এই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।
০৭২২
জদ্দনবাঈ যখন ৫ বছরের, তাঁর বাবা মিয়াঁজানের মৃত্যু হয়। ছোট থেকে তিনিও কোঠাতে গান গাইতে শুরু করেন। কিন্তু প্রশিক্ষণ না থাকায় মায়ের মতো জনপ্রিয়তা পাচ্ছিলেন না।
০৮২২
তারপর তাঁকে কলকাতার গণপত রাওয়ের কাছে তালিম নিতে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই গুরুর মৃত্যু হয়। এরপর উস্তাদ মইনুদ্দিন খানের কাছে তিনি তালিম নেন।
০৯২২
প্রশিক্ষণের পর মা দলীপাবাঈয়ের থেকেও বেশি জনপ্রিয়তা পান জদ্দন। কলম্বিয়া গ্রামাফোন কোম্পানিতে তিনি গজল রেকর্ড করতে শুরু করেন।
১০২২
রামপুর, বিকানের, গ্বালিয়র, জম্মু-কাশ্মীর, ইনদওর, জোধপুর— দেশের নানা প্রান্ত থেকে ডাক আসতে শুরু করেছিল তাঁর কাছে। রেডিয়ো স্টেশনেও গান রেকর্ড করছিলেন তিনি।
১১২২
গানের পাশাপাশি কয়েকটি ফিল্মেও তিনি অভিনয়ের সুযোগ পান। কয়েকটি ফিল্মের গানে সুরও দেন।
১২২২
নিজের প্রোডাকশন কোম্পানিও গড়ে তোলেন। নাম ছিল সঙ্গীত ফিল্মস। তাঁর সংস্থা ‘তালাশ-এ-হক’ নামে এক ফিল্ম প্রযোজনা করে।
১৩২২
জদ্দনবাঈয়ের ৩ স্বামী। প্রথম স্বামী ছিলেন গুজরাতের এক হিন্দু ব্যবসায়ী। বিয়ের সময় মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তাঁর প্রথম স্বামী। তাঁদের প্রথম সন্তান আখতার হুসেন।
১৪২২
পরে এক হারমোনিয়াম বাদককে বিয়ে করেন জদ্দনবাঈ। তাঁর নাম ছিল উস্তাদ ইরশাদ মীর খান। আনোয়ার হুসেন নামে তাঁদেরও এক সন্তান হয়।
১৫২২
আর জদ্দনবাঈয়ের তৃতীয় স্বামী ছিলেন পঞ্জাবি ব্রাহ্মণ মোহনচাঁদ উত্তমচাঁদ ত্যাগী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত উচ্চবিত্ত পরিবারের।
১৬২২
জদ্দনবাঈয়ের প্রেমে তিনিও বিয়ের সময় ধর্মান্তরিত হন। ধর্ম বদলে মুসলিম হয়েছিলেন তিনি।
১৭২২
ধর্মান্তরণের পরে নিজের নাম রাখেন আব্দুল রশিদ। বলিউড অভিনেত্রী নার্গিস তাঁদেরই মেয়ে।
১৮২২
তবে বিয়ের পর উপার্জনের জন্য প্রায় কিছুই করতেন না জদ্দনবাঈয়ের তৃতীয় স্বামী। জদ্দনবাঈয়ের উপার্জনের টাকাতেই তাঁদের সংসার চলত।
১৯২২
ধর্মান্তরণ করলেও নিজের হিন্দুসত্ত্বা পুরোপুরি ভুলে যাননি আব্দুল। জদ্দনবাঈও স্বামীর এই হিন্দুসত্ত্বাকে সমান সম্মান দিতেন। তাই জদ্দনবাঈ এবং আব্দুল দু’জনেরই মুসলিম নামের পাশাপাশি বিভিন্ন নথিতে হিন্দু নামেরও উল্লেখ রয়েছে।
২০২২
স্বামীর সঙ্গে জদ্দনবাঈও অনেক সময় হিন্দু রীতি-নীতি নিয়ে চর্চা করতেন। জদ্দনবাঈয়ের হিন্দু নাম ছিল জয়াদেবী ত্যাগী।
২১২২
এমনকি কিছু নথিতে সুনীল দত্তের শাশুড়ি বা সঞ্জয় দত্তের দিদা হিসাবে তাঁর এই হিন্দু নামটাই দেওয়া রয়েছে।
২২২২
১৯৪৯ সালে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তিনি মুম্বইয়ে ছিলেন।