Advertisement
৩০ মার্চ ২০২৫
US Bomber

পেটের মধ্যে পরমাণু বোমা নিয়ে দাপাদাপি! বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখাচ্ছে মার্কিন বোমারু বিমান

প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপ এবং কানাডা সীমান্তে কৌশলগত বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নতুন কোনও হামলার ছক কষছে ওয়াশিংটন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ১২:৩২
Share: Save:
০১ ১৯
US Bomber

দিনভর বোমারু বিমানের গর্জন। বায়ুসেনা ঘাঁটিতে চরম ব্যস্ততা। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকের ছোট্ট একটা দ্বীপে সবার অলক্ষে চলছে আসন্ন কোনও যুদ্ধের প্রস্তুতি? ‘সুপার পাওয়ার’ দেশের যোদ্ধা পাইলটদের নিশানায় কে বা কারা? বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এই নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। আর সব কিছু দেখে প্রমাদ গুনছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।

০২ ১৯
US Bomber

প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম দ্বীপের অ্যান্ডারসন বায়ুসেনা ঘাঁটি। ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ শেষ হওয়ার প্রায় ৩০ বছর পর সেখানে শোনা গেল কৌশলগত মার্কিন বোমারু বিমান ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর কানফাটানো শব্দ। এই যুদ্ধবিমানের বিরাট একটি বহরকে আচমকাই সেখানে পাঠিয়েছেন আমেরিকার সেনাকর্তারা। এ হেন পদক্ষেপের উদ্দেশ্য নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন।

০৩ ১৯
US Bomber

গুয়াম ছাড়াও ‘বি-১বি ল্যান্সার’ বোমারু বিমানের বহর নর্থ ডাকোটার গ্র্যান্ড ফর্কস বায়ুসেনা ঘাঁটিতেও মোতায়েন করেছে ওয়াশিংটন। জায়গাটি উত্তরের কানাডা সীমান্ত থেকে খুব বেশি দূরে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এ হেন সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। এর নেপথ্যে দু’টি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

০৪ ১৯
US Bomber

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সুপ্ত ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। প্রকাশ্যে এই নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা। যদিও ট্রাম্পের দাবি মেনে আমেরিকায় অন্তর্ভুক্তিতে প্রবল আপত্তি রয়েছে স্বাধীনচেতা অটোয়ার রাজনীতিবিদদের একাংশের।

০৫ ১৯
US Bomber

এই পরিস্থিতিতে কানাডাকে কব্জা করতে ট্রাম্প সেনা অভিযান চালাতে পারেন বলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন সেই কারণেই ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর মতো পরমাণু হাতিয়ার বহনে সক্ষম বোমারু বিমানকে নর্থ ডাকোটার গ্র্যান্ড ফর্কস বায়ুসেনা ঘাঁটিতে মোতায়েন করেছে পেন্টাগন।

০৬ ১৯
US Bomber

অন্য দিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনা ‘দাদাগিরি’ বন্ধ করতে গুয়ামে ওই বোমারু বিমান নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কুর্সিতে বসেই বেজিংয়ের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধে জড়িয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়েছে ড্রাগন। ফলে আগামী দিনে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দুই মহাশক্তির মধ্যে ঠোকাঠুকি লাগার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের একাংশের অনুমান সেটা মাথায় রেখেই আগাম সতর্ক হয়েছে ওয়াশিংটন।

০৭ ১৯
US Bomber

দ্য ইউরেশিয়ান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর ৩৪ এবং ৩৭ নম্বর স্কোয়াড্রনকে গুয়াম এবং নর্থ ডাকোটার ঘাঁটিতে মোতায়েন করেছে মার্কিন বায়ুসেনা। এই বোমারু বিমানগুলি প্রায় ৪০ বছরের বেশি পুরনো হলেও যথেষ্ট কর্মক্ষম রয়েছে। সূত্রের খবর, দুই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার আগে ‌অবশ্য কিছু যুদ্ধবিমানে মেরামতির কাজ করতে হয়েছে পেন্টাগনকে।

০৮ ১৯
US Bomber

বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর ৩৭ নম্বর স্কোয়াড্রনের কমান্ডার মেজর অ্যান্ড্রু ফেইগেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতেই এগুলিকে গুয়ামে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা লম্বা সময় ধরে এই কৌশলগত বোমারু বিমানগুলি ওড়াচ্ছি। এগুলির রক্ষণাবেক্ষণে মার্কিন বায়ুসেনা খুবই যত্নবান। এখনও যুদ্ধের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বি-১বি ল্যান্সারের।’’

০৯ ১৯
US Bomber

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ‘শীত যুদ্ধ’-এ জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। ফলে দুই মহাশক্তির মধ্যে পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা তুঙ্গে ওঠে। দাবার চালে মস্কোকে মাত দিতে ওই সময় কৌশলগত বোমারু বিমান তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে কয়েক হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আণবিক আক্রমণ চালানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ওয়াশিংটনের।

১০ ১৯
US Bomber

১৯৮৬ সালে মার্কিন বায়ুসেনায় কর্মজীবন শুরু করে ‘বি-১বি ল্যান্সার’। প্রথম দিকে শুধুমাত্র পারমাণবিক হাতিয়ারেই সাজানো ছিল এই বোমারু বিমান। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে গেলে এই যুদ্ধবিমানের গা থেকে আণবিক অস্ত্র খুলে নেওয়া হয়। সেই জায়গায় প্রথাগত যুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমায় নতুন করে ‘বি-১বি ল্যান্সার’কে সাজিয়ে তোলে মার্কিন বায়ুসেনা।

১১ ১৯
US Bomber

১৯৯৪ সাল থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ শুরু করে আমেরিকার এই বোমারু বিমান। লড়াইয়ের ময়দানে এর প্রথম আগমন আরও চার বছর পর। ১৯৯৮ সালে ব্রিটেনকে সঙ্গে নিয়ে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিম এশিয়ার আরব মুলুকটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে মার্কিন বায়ুসেনা। এর সাঙ্কেতিক নাম ছিল ‘অপারেশন ডেজ়ার্ট ফক্স’। আর সেখানে নিজের জাত চিনিয়েছিল ‘বি-১বি ল্যান্সার’।

১২ ১৯
US Bomber

পরবর্তী সময়ে ইউরোপের কসোভোয় বোমাবর্ষণ করে আমেরিকার শক্তিজোট নেটো। এ ছাড়া ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে মারাত্মক জঙ্গি হামলার পর আফগানিস্তান আক্রমণ করে যুক্তরাষ্ট্র। দু’টি লড়াইয়েই যোগ দিয়েছিল ৮০ শতকে তৈরি কৌশলগত বোমারু বিমান ‘বি-১বি ল্যান্সার’।

১৩ ১৯
US Bomber

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বোমারু বিমানের বহরকে প্রাসঙ্গিক রাখতে ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এ নানা রকমের পরিবর্তন করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। ২০১১ সালের মধ্যে শেষ হয় এর পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া। বর্তমানে অন্য যে কোনও ধরনের বোমা নিয়ে উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই যুদ্ধবিমানের। ৭৫ হাজার পাউন্ড ওজন নিয়ে আকাশ কাঁপানোর ক্ষমতা রয়েছে ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর।

১৪ ১৯
US Bomber

এ ছাড়া নজরদারি ও গুপ্তচরবৃত্তির কাজেও এই বোমারু বিমানগুলিকে ব্যবহার করে থাকে মার্কিন বায়ুসেনা। তবে বয়সজনিত কারণে এই যুদ্ধবিমানগুলির অবসরের ব্যাপারে একরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে পেন্টাগন। ‘বি-১বি ল্যান্সার’-এর জায়গায় ‘বি-২১ রাইডার’-এর ব্যবহার শুরু করবে আমেরিকা।

১৫ ১৯
US Bomber

গত বছরের ডিসেম্বরে সিচুয়ান প্রদেশের চেংডুতে ‘ঝুহাই এয়ার শো’র আয়োজন করে চিনের পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি বা পিএলএর বিমানবাহিনী। সেখানে প্রথম বার ষষ্ঠ প্রজন্মের লড়াকু জেট প্রকাশ্যে এনে গোটা বিশ্বকে চমকে দেয় বেজিং। লালফৌজের বায়ুবীরদের অস্ত্রাগারে শামিল হতে চলা নতুন ওই হাতিয়ারের পোশাকি নাম ‘জে-৩৬’ বলে জানা গিয়েছে।

১৬ ১৯
US Bomber

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন ধরেই ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা করছে আমেরিকা। কিন্তু, এখনও তাতে সাফল্য পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে বেজিংয়ের কাছে কিস্তিমাত হওয়ায় ওয়াশিংটনের যে মুখ ব্যাজার হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। নতুন প্রজন্মের অত্যাধুনিক লড়াকু বিমান হাতে পাওয়ায় যুদ্ধের ময়দানে ড্রাগন বেশ কিছুটা এগিয়ে গেল বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।

১৭ ১৯
US Bomber

সূত্রের খবর, নতুন প্রজন্মের চিনা যুদ্ধবিমানে রয়েছে তিনটি ইঞ্জিন। ফলে পঞ্চম প্রজন্মের লড়াকু জেটগুলির থেকে এর গতিবেগ অনেকটাই বেশি। ‘জে-৩৬’ জেটে রয়েছে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। লেজের মতো অংশ না-থাকায় কোনও ভাবেই একে চিহ্নিত করতে পারবে না রাডার। অর্থাৎ, যুদ্ধবিমানের ‘স্টেল্‌থ’ শক্তি বাড়িয়েছে বেজিং।

১৮ ১৯
US Bomber

এই পরিস্থিতিতে গুয়ামে ‘বি-১বি ল্যান্সার’ মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র বেজিংয়ের উপর স্নায়ুর চাপ তৈরি করতে চাইছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা। শুধু তা-ই নয়, ‘বি-২১ রাইডার’-এর নির্মাণকাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছে পেন্টাগন। কারণ স্টেল্‌থ শ্রেণির কোনও কৌশলগত বোমারু বিমান আপাতত ড্রাগনের লালফৌজের হাতে নেই।

১৯ ১৯
US Bomber

মার্কিন বায়ুসেনা কমপক্ষে ১০০টি ‘বি-২১ রাইডার’ হাতে পাওয়ার আশা করছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তাদের বোমারু বিমানের বহরের মূল চালিকাশক্তি হবে এই যুদ্ধবিমান। এ বছর এর একটি পরীক্ষামূলক উড়ান রয়েছে। সেটি শেষ হলেই ধীরে ধীরে এই বিমানগুলি যুক্তরাষ্ট্রের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে আসতে শুরু করবে বলে সূত্র মারফত মিলেছে খবর।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy