এক সময় ছিল বাংলা ছবির রমরমা। তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেনের বহু ছবি হিন্দিতে তৈরি হয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি মুম্বইয়েও সেই ছবি হিট। যেমন, তপন সিংহের ‘গল্প হলেও সত্যি’র হিন্দি সংস্করণ ‘বাবুর্চি’তে দুরন্ত অভিনয় করেছিলেন রাজেশ খন্না। আবার উত্তমকুমারের ‘আমি সে ও সখা’ তৈরি হয়েছিল হিন্দিতে, নাম ‘বেমিসাল’। এই ছবিতে রোম্যান্টিক নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন।
সিনেবোদ্ধা এবং সমালোচকদের দাবি, গত বেশ কিছু বছর ধরে বাংলা ছবির ভাঁড়ারে যেন টান ধরেছে। প্রতি বছর ছবির সংখ্যা কমছে। দর্শকও নতুন বাংলা ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করছেন না। পাশাপাশি, বাণিজ্যেও লক্ষ্মীর বসতিও নেই! যে কারণে ইদানীং টলিউডে একটি কথা প্রায় সকলের মুখে মুখে ফিরছে— ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’। এই ধরনের বক্তব্য কিন্তু ষাট থেকে নব্বই দশকের খ্যাতনামী অভিনেতাদের শুনতে হত না।
কেন বাংলা ছবির এই দশা? কেনই বা দর্শকদের উদ্দেশে কিংবা নিজেদের সজাগ করতে বলতে হচ্ছে ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’? খামতি কোথায়?
আরও পড়ুন:
আনন্দবাজার ডট কম প্রশ্ন রেখেছিল অভিনেতা-রাজনীতিবিদ মিঠুন চক্রবর্তীর কাছে। অভিনেতা জ়ি বাংলার ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ নাচের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাঁর আসন্ন নতুন বাংলা ছবি ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী’ ছবির প্রচারে ব্যস্ত। প্রশ্ন শুনে রুপোলি পর্দার ‘মহাগুরু’র টান টান জবাব, “আমিই এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিই। বাংলা ছবির বাজেট এখনও এই অঙ্কের উপরে উঠতে পারল না! তা হলে আর উন্নতি কোন দিক থেকে হবে?” তাঁর মতে, যে টাকায় মাত্র ১৪ বা ১৫ দিন শুটিং করে একটি ছবি তৈরি হয়ে যাচ্ছে সেই অঙ্ক আর একটু বাড়িয়ে, যত্ন নিয়ে ছবি তৈরি করলেই যে কোনও ছবি সফল হতে বাধ্য। তবে শুধু বাজেট বাড়ালেই ছবি হিট হবে— এমনটাও নয়, দাবি তাঁর।
মিঠুন বাজেটের সঙ্গে জোর দিয়েছেন ছবির গল্পের উপরেও। তাঁর কথায়, “বাঙালি বরাবর পারিবারিক ছবি দেখতে ভালবাসে। যেখানে একটা নিটোল গল্প থাকবে। সূক্ষ্ম অনুভূতিতে কৌতুকরস মিশবে। এই উপাদান সঠিক পরিমাণে মেশাতে পারলেই ছবি দেখতে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসবেন।” তিনি এ-ও জানান, ছবি সফল হওয়ার পিছনে জোরালো চিত্রনাট্য এবং সংলাপের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। সে দিকেও তাই সমান যত্নবান হওয়া দরকার। এ প্রসঙ্গে মিঠুন তাঁর সাম্প্রতিক ছবি ‘সন্তান’ , ‘প্রজাপতি’র উদাহরণ দেন। তাঁর মতে, “রাজের ‘সন্তান’ ছবিতে দর্শককে কাঁদিয়েছি। পথিকৃৎ বসুর ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী’তে সকলকে হাসাব। দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসতে বাধ্য হবেন।”