পরিচালক: সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা
অভিনয়: শাহিদ কপূর, কিয়ারা আডবাণী
আসলে আমাদের সবার মধ্যেই একটা কবীর সিংহ আছে। যে কখনও রাগ সামলাতে পারে না। যে কলেজে র্যান্ডাম কোনও মেয়েকে প্রোপোজ করে দেয়। যে আসলে রেবেল। হাওয়ায় উড়িয়ে দেয় শ্যাম্পেন ঢাকনা। নেশায় ভেসে যেতে যেতে পরখ করে জীবন।
আর অন্য দিকে, আছে আর এক সত্ত্বা। হ্যাঁ, আমাদের ভেতরেই। যারা কলেজের ‘আমি’টাকে এক দিন মুছে ফেলতে চায়। চায় আর একটু গোছানো হোক, এলোমেলো ‘আমি’টা। তিরিশের পর থেকে ক্রমশ বদলে যেতে থাকে সেই রেবেল। তারপর...তবু কি স্বপ্ন ধরা দেয় তার হাতে?
এই ‘টু বি’ অর ‘নট টুবি’, এই দুই সুজন আর কুজনকে নিয়েই কবীর সিং। তেলুগু ছবি অর্জুন রেড্ডি থেকে অনুপ্রাণিত এ ছবি। যেন বা আমাদেরই মনের আয়নার ছায়া। শাহিদ কপূরও যেন বা আমারই আমি। প্রথম সিন থেকেই তার প্রেজেন্স সে কথাই বলে চলে। কী না করে চলেন তিনি! কখনও যৌনকাতর হয়ে নিজের প্যান্টের ভেতর ঢেলে দেন বরফ। তো কখনও তাঁর বান্ধবীকে দোলের রং মাখানোয়, সপাট ঘুষি মারেন নজরদারকে...নানা ভাবেই ছবি জুড়ে চমকিয়ে চলেন ডাক্তারির এই মেধাবী ছাত্র, শুধু রাগটাই যা বশে আনতে পারেন না তিনি।
আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: ‘কণ্ঠ’-এ জীবনই পারে মৃত্যুভয় অবজ্ঞা করতে
এক কথায় শাহিদ কপূর অনবদ্য। তাঁর টাইমিং, প্রেজেন্সের কোনও তুলনা হয় না। পাশে অভিনেত্রী কিয়ারা আডবাণীকেও ভাল লাগে। কলেজের সরল ছেলেমানুষ বান্ধবী হিসেবে তাঁকে দিব্য মানায়। শাহিদের সঙ্গে তাঁর রসায়ন জমে যায় বার বার। কখনও শাহিদ তাঁকে ছাপিয়ে বেরিয়ে যান, কখনও তিনি শাহিদকে।
তাত্ত্বিকেরা এ ছবিকে অবদমিত সম্পর্কের ছবি হিসেবে দেগে দিতে পারেন। বলতে পারেন, নির্লজ্জ ম্যাস্কুল্যানিটির প্রকাশ এ ছবি জুড়ে দেখা যায়। এমনকি, গোটা ছবির আয়তন এত বড় হল কেন, প্রশ্ন উঠতে পারে তা নিয়েও। তবু, দিল্লির প্রেক্ষাপটের কথা যদি ভাবি, যদি ভাবি আজকের ভারতের মানচিত্র ও সংবাদপত্রের সম্পর্কজনিত কালো খবর, তা হলে দিব্য মানিয়ে যায় সবটা। কোথাও বাড়তি মনে হয় না।
আরও পড়ুন: মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয় ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অব রে’জ ডিটেকটিভ’
কবীর সিংহ আসলে আমাদের ভেতরের চেতন আর অবচেতনের মিশেলে হয়ে ওঠা এক জন। অনুরাগ কাশ্যপ বা বিশাল ভরদ্বাজের ছবি দেখা থাকলে, এ ছবির ডার্ক কমেডি আপনার নতুন কিছু লাগবে না। তবু কোথাও এ ছবি আপনাকে ডাকবে। বলবে, কী যেন আপনি হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন, কী যেন হতে পারলেন না...কেন পারলেন না!
ছবির দৈর্ঘ্য কি আর একটু ছোট হতে পারত না? পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার কাছে এই আবেদন থাকল। কারণ, একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে চললে বক্তব্যের ধার কমে যায় বইকি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy