‘গালি বয়’-এর পোস্টারে রণবীর সিংহ ও আলিয়া ভট্ট।—ফাইল চিত্র।
পরিচালক: জোয়া আখতার
অভিনেতা: রণবীর সিংহ, আলিয়া ভট্ট, কল্কি কেঁকলা, বিজয় রাজ
‘গালি বয়’ আসলে জিতে যাওয়ার গল্প। যেমন জিতে যাওয়া প্রতিদিন আমাদের জীবনে ঘটে। কেউ বুঝতে পারি। কেউ পারি না।সিনেমা যখন সেই জয়ের গল্প চিৎকার করে বলে, আমরা স্বস্তি পাই। বলি, ‘‘আরে, এই তো আমার গল্প।’’
ধারাভি মুম্বইয়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় এক বস্তি এলাকা। সেখানে এমন গালি বয়দের দেখা যায় প্রত্যহ। এরোপ্লেন যখন মুম্বইতে নেমে আসে, তখন আপাত চকচকে এ শহরের নীচের বিরাট বস্তি দেখা যায়। এই সব গলিগলতায় ঢুকে পড়লেই আপনি দেখা পাবেন রণবীর সিংহ আর আলিয়া ভট্টদের। গরিব প্রেমিক-প্রেমিকা। দেখবেন, নানা রকম র্যাপারদের। নানা প্রদেশ থেকে আসা র্যাপাররা গানের ভেতর দিয়ে তাঁদের যন্ত্রণার কথা বলেন ধারাভিতে। বলেন রাগ ও প্রেমের কথাও। আর সে সব কথা জড়িয়ে মড়িয়েই তৈরি এ ছবি।
র্যাপ সঙ্গীতের এমন এক ধারা, যাতে মানুষের রাগ বা যন্ত্রণার কথা চাচাছোলা ভাষায় বলা হয়। বলা হয় অশান্ত ভাবে। রাগের মতোই। ছন্দে ছন্দে। এ ছবির গল্পও তাই একবারও ছন্দহীন হয় না। ছবিটা দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই মনে পড়ছিল, এন্টনি ফিরিঙ্গি ছবি। সে ছবির কবির লড়াইয়ের মতো এ ছবিতেও আসে গানের লড়াই। জীবনের লড়াইও। শেষে যদিও নিজের পথে জিতে যান ইরফান। জেতে আলিয়ার তাঁর প্রতি ভালবাসাও।
ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় রণবীর সিংহ ও আলিয়া ভট্ট।
আরও পড়ুন: শ্রীকান্ত মোহতা গ্রেফতার নিয়ে মিমি, নুসরতরা বললেন...
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দিন এ ছবি দেখছিলাম। হল জুড়ে বসেছিলেন নানা বয়সী যুগল। গান আর প্রেমের হাত ধরে এ ছবি তরতরিয়ে এগিয়ে চলছিল। চোখের পাতা পড়ছিল না। আলিয়া ভট্টের স্মার্ট অভিনয় এ ছবির সম্পদ। এমন কাঠখোট্টা প্রেমিকা বহুদিন দেখেনি হিন্দি ছবি। তেমনই রণবীর সিংহ। এক ফালি ঘিঞ্জি ঘরে র্যাপার হতে চাওয়ায় বাড়ির অশান্তি, তবু লড়ে যাওয়া, জীবনে নতুন প্রেম আসায় পুরনো প্রেমের সঙ্গে টানাপড়েন, সামান্য চাকরি, এবং র্যাপ লড়াইয়ে জিতে যাওয়া, এই সব কটা জীবনের পর্বই বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন রণবীর।
ছবিটা দেখতে দেখতে সোজা হয়ে বসছিলাম। জোর পাচ্ছিলাম মনে। শুধুমাত্র ভালবাসা আর বিশ্বাস দিয়েই তা হলে জিতে যাওয়া যায়? বারবার এ কথাই মনে হচ্ছিল। মুম্বইয়ের ঝাঁ চকচকে দুনিয়া, শপিং মলের অন্তঃসারশুন্যতা আর ঘিঞ্জি গলির একরত্তি প্রেম আর স্বপ্নের নিত্য লড়াই চলে এ ছবিজুড়ে। বারবার মনে হয়, এই সামান্য গরিব ছেলেটি পারবে তো? পারবে তো সে তার গান গাইতে? পারবে তো ওই পাগলাটে মেয়েটাকে ভাল রাখতে? ওরা যেন ভাল থাকে ঠাকুর, দেখো। শেষমেশ যদিও ঈশ্বর ওদের মঙ্গল করেন।
আরও পড়ুন: একই গাড়ি, একই দুর্ঘটনা, একই আঘাত...ব্যবধানটা শুধু দু’বছরের, এ এক অন্য ভালবাসার গল্প
কোথাও বাস্তব জীবনের গল্প বলতে গিয়ে অবাস্তব হয় না এ ছবি। সেখানেই এ ছবির জোর। খুব বিশ্বাস করায় এ ছবির প্রেম, এ ছবির লড়াই। বলে, চাইলে তুমিও পারবে। প্রতি র্যাপে যতবার আঘাত ধেয়ে আসে রণবীরের দিকে, ততবার তা ফিরিয়ে দেন তিনি। শব্দ দিয়ে। কথা দিয়ে। জীবন দিয়ে। ধাক্কা মারেন। পিছু হটে যায় শত্রুপক্ষ। পিছু হটে যা কিছু অশুভ। প্রেমিকা হাত বাড়ায় আর একবার। বিশ্বাস ফিরে পেয়ে। মনে হয়, আরে, জীবন কি সুন্দর! সত্যি তো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy