Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Entertainment News

‘কান’-এর মুকুট, তবুও মেয়ে বলেই ইন্ডাস্ট্রিতে বহু বাধার মুখোমুখি মধুরা

নেশা হয়ে উঠল তাঁর পেশা। আর সেই পেশার মুকুটে লাগল কান চলচ্চিত্র উত্সবের পালক। ২০১৯ কান চলচ্চিত্র উত্সবে ‘পিয়ের অঁজেনিউ এক্সেলেন্স ইন সিনোমাটোগ্রাফি স্পেশ্যাল এনকারেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নিলেন মেয়েটি। অর্থাত্ মধুরা পালিত। ভারত থেকে এই পুরস্কার প্রথম জিতলেন তিনি। 

মধুরা পালিত।

মধুরা পালিত।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ১৯:৪১
Share: Save:

বাবা-মা ফোটোগ্রাফার। ক্যামেরা, ডার্করুম, স্টিল— এ সব শব্দ মেয়েটির ছোটবেলার কানের অভ্যেস। বাড়ির আদর আরামে ঘুরে বেড়াত সে সব শব্দরা। ঘুরত সে মেয়েও। ক্যামেরার প্রতি ভাল লাগা নিয়ে। কিন্তু ক্যামেরাকে ভালবাসতে শেখায় সেন্ট জেভিয়ার্স। সেখানে পড়তে পড়তেই মেয়েটি সিদ্ধান্ত নেয় ক্যামেরাতে চোখ রেখেই খুঁজে নেবে পেশার রসদ।

নেশা হয়ে উঠল তাঁর পেশা। আর সেই পেশার মুকুটে লাগল কান চলচ্চিত্র উত্সবের পালক। ২০১৯ কান চলচ্চিত্র উত্সবে ‘পিয়ের অঁজেনিউ এক্সেলেন্স ইন সিনোমাটোগ্রাফি স্পেশ্যাল এনকারেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নিলেন মেয়েটি। অর্থাত্ মধুরা পালিত। ভারত থেকে এই পুরস্কার প্রথম জিতলেন তিনি।

রবিবার সকালে পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরেছেন মধুরা। ফিরেই সোজা শুটিং ফ্লোরে। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে অঞ্জন কাঞ্জিলালের ‘সহবাসে’ ছবির শুটিং। তারই ক্যামেরার দায়িত্ব সামলাবেন মধুরা। শুটিং শুরুর আগে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি সামলে বললেন, ‘‘আমার যাবতীয় কাজ দেখেই নমিনেট করেছিলেন কান কর্তৃপক্ষ। গত বছর থেকে এই অ্যাওয়ার্ড চালু হয়েছে। প্রথম বছর চিন থেকে একজন পেয়েছিলেন। এ বছর আমি পেলাম। আমার দুর্ধর্ষ অভিজ্ঞতা হল। যাঁদের দূর থেকে দেখেছি এতদিন, তাঁদের সান্নিধ্য পেলাম। হয়তো আর কখনও এমন এক্সপিরিয়েন্স হবে না।’’

আরও পড়ুন, ‘পারিশ্রমিক পাওয়ার রাস্তা প্ল্যান করে বন্ধ করে রাখা হয়েছে’

সেন্ট জেভিয়ার্সে মাস কম ভিডিয়ো প্রোডাকশন নিয়ে পড়াশোনা করার সময়ই মধুরার মনে হয় ক্যামেরা নিয়েই ভবিষ্যতে কাজ করতে চান তিনি। ২০১২-এ কলেজের পড়া শেষ করে এসআরএফটিআই-তে পড়াশোনা করেন। ২০১৭ থেকে পেশাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘ওয়াচমেকার’, অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘আমি ও মনোহর’ এবং অর্ঘ্যদীপ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘রডোডেনড্রন’-এ ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলেছেন মধুরা। সিভিতে রয়েছে বহু শর্ট ফিল্ম, মিউজিক ভিডিয়ো, বিজ্ঞাপন এবং তথ্যচিত্রের তালিকা। অর্ঘ্যদীপের ‘পরিযায়ী’ ছবির কাজও তাঁর হাতে।


কাজে ব্যস্ত মধুরা।

কিন্তু এত স্বীকৃতির পরেও বাস্তবের ছবিটা বেশ কঠিন। মহিলা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি মধুরা। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে সিনেমাটোগ্রাফারদের অধিকাংশই পুরুষ। সেখানে মধুরা কিছুটা ব্যতিক্রম তো বটেই। ‘‘মেল ডমিনেটেড এরিয়ায় মহিলা ডিওপিকে মানতে এখনও লোকজনের অসুবিধে হয়। বহু লোক আমাকে অবিশ্বাস করে। অন্তত চেহারা দেখে বেশির ভাগ লোকই এখনও ভরসা করে না। একজন মহিলা ক্যামেরা করবেন, এটা ভাবতেই পারে না অনেকে। মানুষের ভরসা তৈরি করাটাই আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ’’ শেয়ার করলেন মধুরা।

আরও পড়ুন, ‘বাবাকে মুখ বন্ধ রাখতে বল, না হলে…’, অনুরাগের মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি!

এই ভেদাভেদের কারণে কি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পেতেও সমস্যা হয়? মধুরার স্পষ্ট জবাব, ‘‘কাজ পেতে সমস্যা তো হয় বটেই। এমনও শুনেছি কোনও একটা প্রজেক্টের জন্য মিটিংয়ে আমাকে আর একজন পুরুষ সিনেমাটোগ্রাফারকে ভাবা হচ্ছে। আমার কাজও পছন্দ হয়েছে। শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েছি মহিলা বলে। আবার ধরুন, আমারই শুটিংয়ের প্রি-লাইটিং করছি। টেকনিশিয়ানরা সকলে আমাকে চেনেন না। সেখানে কেউ কেউ বলেছে, দিদি আপনি লাইট করছেন, আপনি ঠিক জানেন তো? ডিওপি যদি চেঞ্জ করে দেন?’’

এ হেন অভিজ্ঞতাই মধুরার কেরিয়ারের পাথেয়। কারণ বাধা পেলেই কনফিডেন্স বেড়ে যায় তাঁর। আরও ভাল কাজ করার খিদেটা জেগে ওঠে অজান্তেই। তাই ক্যামেরায় চোখ রেখেই নতুন উড়ানের পথে পা বাড়াতে চান মধুরা।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Modhura Palit Tollywood Celebrities Bengali Movie
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE